আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ৩৬ দিনের আল্টিমেটাম দিয়েছি বিএনপিকে। এই ৩৬ দিন বিএনপিকে দাঁড়াতে দেব না। সব জায়গা বঙ্গবন্ধুর সৈনিকদের দখলে থাকবে, শেখ হাসিনার কর্মীদের দখলে থাকবে।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনার নাকি মেয়াদ শেষ, আমাদের নাকি মেয়াদ শেষ, অক্টোবরে নাকি সবশেষ। বিএনপির কী হবে অক্টোবরে? ১৫টা অক্টোবর দেখলাম আগামীতেও দেখব। শেখ হাসিনাই ক্ষমতায় থাকবে। জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে ফাইনাল, জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে শেখ হাসিনা লাল-সবুজের পতাকা হাতে ডাক দিয়েছেন।
বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে গাজীপুরের টঙ্গীর শফি উদ্দিন একাডেমির মাঠে বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, নৈরাজ্য, অপরাজনীতি ও অব্যাহত দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সেতুমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আপনারা এখন তলে তলে যুক্তি করছেন ঢাকা দখল করবেন। আমরা অপেক্ষা করছি ঢাকা দখল কে করে, কেমনে করে, দেখাইয়া দেব, শেখ হাসিনার ম্যাজিক দেখাইয়া দেব, একটু অপেক্ষা করেন। শেখ হাসিনার ম্যাজিক উন্নয়নের ম্যাজিক, শেখ হাসিনার ম্যাজিক মুক্তিযুদ্ধের ম্যাজিক। শেখ হাসিনার ম্যাজিক জাতীয় পতাকার ম্যাজিক, হাসিনার ম্যাজিকের জয় হবে।
তিনি বলেন, ক্যাপ্টেন আসছেন ক্যাপ্টেন, ক্যাপ্টেন ওয়াশিংটন আছেন, বলছেন তৈরি হয়ে যাও। অক্টোবরে নাকি ভাগ্য নির্ধারণ হবে। ফখরুল বলে, মির্জা আব্বাস বলে ভাগ্য নির্ধারণ করবে অক্টোবর মাসে। আমি তাদের জিজ্ঞেস করতে চাই, ঘরের মধ্যে ঘর, মশারির মধ্যে কত মশারি। তারা আমাদের ভাগ্য কী নির্ধারণ করবে। খেলা হবে, খেলা হবে। জবাব দেব সব দুঃশাসনের। ওদের (বিএনপির) আন্দোলন ভুয়া, ওদের এক দফা ভুয়া, ওদের সাতাশ দফা ভুয়া, ওদের গণতন্ত্র ভুয়া, ওদের ক্ষমতা ভুয়া।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় এলে এই গণতন্ত্রকে ধ্বংস করবে, কাজেই বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে বাঁচাতে হলে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে বাঁচাতে হলে, বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে বাঁচাতে হলে, বাংলাদেশের উন্নয়নকে বাঁচাতে হলে শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় রাখার কোনো বিকল্প নেই। শেখ হাসিনা ছাড়া যোগ্য কোনো নেতা নেই, শেখ হাসিনা ছাড়া কোনো প্রধানমন্ত্রী নেই। শেখ হাসিনা রাত জেগে মানুষের কথা ভাবেন। তিনি প্রতিদিন তিন ঘণ্টা ঘুমান। তিনি জনগণের নেতা, সৎ নেতা। তিনি উন্নয়নের নেতা।
বিএনপি মহাসচিবের উদ্দেশে তিনি বলেন, এখন মির্জা ফখরুল কান্না করে, এটা তার হতাশার কান্না। ইদানিং সভায় দাঁড়িয়েই কান্না শুরু করে দেন তিনি। এত কান্না এতদিন কোথায় ছিল। মির্জা ফখরুল একজন ব্যর্থ সাধারণ সম্পাদক। তারা খালেদা জিয়ার জন্য ৪৮ মিনিটের জন্য একটি আন্দোলনও করতে পারেনি। তাই মির্জা ফখরুলকে পদত্যাগের আহ্বান জানাই।
ওবায়দুল কাদের বলেন,সামনে খালেদা জিয়ার বড় কথা বলার কোনো অধিকার নেই। সেটা আছে আমাদের নেত্রীর। কেননা মানবিকতা দেখিয়ে বাসায় থাকার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন শেখ হাসিনা। আগামী জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে ফাইনাল খেলা। সে খেলায় আবারও আওয়ামী লীগ জয়ী হয়ে সরকার গঠন করবে।
দেশের মানুষকে অপেক্ষা করার আহ্বান জানিয়ে সেতুমন্ত্রী বলেন, এই সংকট দূর হয়ে যাবে, একটু অপেক্ষা করুন। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিও কমে আসবে। এ সংকট বড় বড় দলের তৈরি করা, ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের প্রভাব।
আমেরিকার উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমাদের মতো এতো ছোটদের নিয়ে কেন ভাবেন। প্রেসিডেন্ট বাইডেন আপনি ক্ষমতায় থাকেন আমাদের কোনো প্রশ্ন নেই, তবে এর আগে ট্রাম্পকে থামান। আপনার নিজ দেশে জনপ্রিয়তায় এখনো ট্রাম্পই এগিয়ে।
গাজীপুরের উন্নয়ন নিয়ে সেতুমন্ত্রী বলেন, এই গাজীপুরে অনেক দুর্ভোগ হয়েছে, আর দুর্ভোগ হবে না। এবার গাজীপুরে ইউরোপের মতো রাস্তা হবে। আট লেনের টঙ্গী ব্রিজ, দশ লেনের ব্রিজ হইয়া গেছে। চেরাগআলী পর্যন্ত ওভারপাস-ফ্লাইওভার। কী সুন্দর গাজীপুর গড়ে তুলেছেন বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনা। এয়ারপোর্ট থেকে ফার্মগেট, ১০ মিনিটে কারবার শেষ।
গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট আজমত উল্ল্যা খানের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য সিমিন হোসেন রিমি, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল হক হানিফ, আ. ফ. ম বাহাউদ্দিন নাছিম, গাজীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুর রহমান, মির্জা আজম, এসএম কামাল হোসেন, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল, গাজীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন সবুজ, সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য বেগম শামসুন্নাহার ভুইয়া প্রমুখ।