খুলনায় কোভিড পরীক্ষার ২ কোটি ৬১ লাখ টাকা আত্মসাৎ মামলায় খুলনার বর্তমান সিভিল সার্জন ডাঃ সুজাত আহমেদ ও সাবেক সিভিল সার্জন ডাঃ নিয়াজ মোহাম্মদসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
গতকাল বৃহস্পতিবার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের খুলনা বিভাগীয় কার্যালয়ের উপ-সহকারী পরিচালক খন্দকার কামরুজ্জামান এ চার্জশিট দাখিল করেন।
অন্যদিকে, গতকাল স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সিনিয়র সহকারী সচিব মোঃ আলমগীর কবীর স্বাক্ষরিত স্মারকে খুলনার সিভিল সার্জন ডাঃ সুজাত আহমেদকে ওএসডি করা হয়েছে। সাতক্ষীরার সিভিল সার্জন ডাঃ মো. সবিজুর রহমানকে খুলনা সিভিল সার্জন হিসেবে বদলী করা হয়েছে। এছাড়া ডুমুরিয়ার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ শেখ সুফিয়ান রুস্তমকে সাতক্ষীরা জেলা সিভিল সার্জন চলতি দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে বদলিকৃত কর্মস্থলে যোগদান করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
দুদকের করা মামলার আসামিরা হলেন, খুলনার সিভিল সার্জন ও ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ সুজাত আহমেদ, সাবেক সিভিল সার্জন ডাঃ নিয়াজ মোহাম্মদ, জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ এস এম মুরাদ হোসেন, সাময়িক বরখাস্ত থাকা মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (ল্যাব) প্রকাশ কুমার দাস, মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (ল্যাব) মোঃ রওশন আলী এবং ক্যাশিয়ার তপতী সরকার।
দুদক সূত্রে জানা গেছে, করোনা পরীক্ষার টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ২০২১ সালের ১৮ নভেম্বর দুদকের উপ-সহকারী পরিচালক খন্দকার কামরুজ্জামান বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় এজাহারভুক্ত আসামি ছিলেন একাই প্রকাশ কুমার দাস। মামলার তদন্তে আরও ৫ জনের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে। ওই ৬ জন পরস্পর যোগসাজশে সরকারি রশিদ বইয়ের বাইরে হাসপাতালের বুথে ডুপ্লিকেট রশিদ বই ব্যবহার করে বিদেশগামী যাত্রী ও সাধারণ কোভিড-১৯ রোগীদের নমুনা সংগ্রহ করে নমুনার সংখ্যা ফরওয়ার্ডিংয়ে বসিয়ে তা পরীক্ষার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের আরটি-পিসিআর ল্যাবে প্রেরণ করেন।
সেই অনুযায়ী ফলাফল পেয়ে তা প্রকাশ ও রোগীদের সরবরাহ করেন। রোগীর সংখ্যা কম দেখিয়ে সে অনুযায়ী ইউজার ফির টাকা সরকারি কোষাগারে জমা প্রদান করেন। প্রকৃত আদায় করা ইউজার ফির টাকা জমা প্রদান না করে বিদেশগামী যাত্রী ও সাধারণ কোডিড-১৯ রোগীদের ইউজার ফি বাবদ আদায় করা মোট ৪ কোটি ২৯ লাখ ৯১ হাজার ১০০ টাকার মধ্যে এক কোটি ৬৮ লাখ ৪৬ হাজার ৭০০ টাকা সরকারি কোষাগারে জমা প্রদান করেন। অবশিষ্ট ২ কোটি ৬১ লাখ ৪৪ হাজার ৪০০ টাকা জমা প্রদান না করে আত্মসাৎ করা হয়।