টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের নবম আসর শুরুর আর মাত্র ১৬ দিন বাকি। এরই মাঝে সম্পূর্ণ খোলা ময়দানে কাজ শুরু হওয়া বাংলাদেশের বিশ্বকাপ ভেন্যু প্রস্তুত করা হয়েছে। নিয়ইয়র্কের সেই নাসাউ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ম্যাচ রয়েছে দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দেশ ভারত–পাকিস্তানেরও। কাজ শুরুর পরবর্তী দুই মাসে সম্পূর্ণ প্রস্তুত যুক্তরাষ্ট্রের ভেন্যুটি। গতকাল (বুধবার) আনুষ্ঠানিকভাবে উন্মোচনের পর সেখানে পা রেখেছেন এই বিশ্বকাপের শুভেচ্ছা দূত উসাইন বোল্ট, ক্যারিবীয় কিংবদন্তি কার্টলি অ্যামব্রোস ও পাকিস্তানের শোয়েব মালিকরা।
নাসাউ ক্রিকেট স্টেডিয়ামের দর্শকধারণ ক্ষমতা ৩৪ হাজার। ইতোমধ্যেই নাকি সেখানে অনুষ্ঠিত হতে চলা ভারত-পাকিস্তান ম্যাচের সব টিকিট বিক্রিও হয়ে গেছে। বিশেষজ্ঞদের আশা– কানায় কানায় পূর্ণ থাকবে এই স্টেডিয়াম। যার অবকাঠামোর সঙ্গে মিল রয়েছে লাস ভেগাসের ফর্মুলা ওয়ান রেসিং কারের সার্কিটের সঙ্গে। পাশাপাশি এই মাঠে বসানো হয়েছে ড্রপ-ইন পিচ। এই পিচগুলো তৈরি হয়েছে ফ্লোরিডা শহরে। এই পিচে স্বাভাবিক ঘাসের সঙ্গে পাঁচ শতাংশ সিন্থেটিক ফাইবার মেশানো হয়েছে। যাতে এর দৃঢ়তা বজায় থাকে।
আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রচারণায় আইসিসি কিছুদিন আগে কিংবদন্তি জ্যামাইকান গতিতারকা উসাইন বোল্টকে শুভেচ্ছাদূত বানিয়েছিল। নাসাউ স্টেডিয়ামের উদ্বোধনের দিনও তিনিই পা রাখলেন সবার আগে। তার সঙ্গে সেখানে উপস্থিত ছিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ কিংবদন্তি কার্টলি অ্যামব্রোস, পাকিস্তানের তারকা অলরাউন্ডার শোয়েব মালিক, নিউজিল্যান্ড ছেড়ে যুক্তরাষ্ট্রের হয়ে এই বিশ্বকাপ খেলতে যাওয়া কোরি অ্যান্ডারসন ও তার সতীর্থ মোনাঙ্ক প্যাটেল এবং ইংল্যান্ডের পেসার লিয়াম প্লাঙ্কেট। এ ছাড়া আয়োজক দেশটির বিভিন্ন ইভেন্টের বেশ কয়েকজন তারকাও সেখানে হাজির হন।
বিশ্বকাপের সূচি অনুযায়ী, আগামী ৯ জুন নিউইয়র্কের নাসাউ কাউন্টি স্টেডিয়ামে ভারত বনাম পাকিস্তানের ম্যাচ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। যে ম্যাচের টিকিট শেষ হওয়ার আগে সর্বোচ্চ দাম দুই কোটি টাকা ছাড়িয়ে যায়। গ্রুপ পর্বে এই নাসাউ কাউন্টি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম ভারতের জন্য কার্যত হোম গ্রাউন্ডের কাজ করবে। এখানে রোহিতরা শুধু পাকিস্তানের বিপক্ষে নয়, আয়ারল্যান্ড এবং আয়োজক দেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেরও মুখোমুখি হবে। এ ছাড়া ১০ জুন বাংলাদেশ নাসাউয়ে মোকাবিলা করবে দক্ষিণ আফ্রিকার।
একেবারে নতুন করে ভেন্যুটি প্রস্তুত হওয়ায় সেখানকার কন্ডিশন ও পিচের ধরন নিয়ে কেউ জানে না। তবে ধারণা করা হচ্ছে এখানকার পিচ হবে অনেকটা অস্ট্রেলিয়ার অ্যাডিলেডের মতো। সেখানকা ম্যাচের পিচ অস্ট্রেলিয়া থেকে জাহাজে করে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে পাঠানো হয়েছে। উত্তর আমেরিকা মহাদেশের দেশটিতে বিশ্বকাপ ম্যাচ হবে ড্রপ-ইন পিচে। অস্ট্রেলিয়াতেও খেলা হয় এমন পিচে। বাধ্য হয়েই তাই অস্ট্রেলিয়ার কাছে সাহায্য চেয়েছে তারা। অস্ট্রেলিয়ার ‘অ্যাডিলেড টার্ফ সলিউশনস’ ড্রপ-ইন পিচ তৈরিতে বিখ্যাত। অ্যাডিলেডের পিচ প্রস্তুতকারক ডেমিয়েন হাউয়ের অধীনে তৈরি হয় ক্রিকেটের এসব পিচ। আইসিসি ইভেন্টের জন্য এই ডেমিয়েনের সঙ্গে চুক্তি করে আমেরিকা। যে সব মাঠে খেলা হবে সেখানকার পিচ তৈরি করছেন ডেমিয়েন।
উল্লেখ্য, আগামী ২ জুন থেকে যুক্তরাষ্ট্র ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ যৌথভাবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আয়োজন করবে। ২০ দলের এই টুর্নামেন্টে বাংলাদেশের অভিযান শুরু হবে ৭ জুন থেকে। যুক্তরাষ্ট্রের ডালাসে শান্তর দল শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে বিশ্বকাপ শুরু করবে। ১০ জুন বাংলাদেশ লড়বে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে। পরবর্তীতে ১৩ জুন নেদারল্যান্ডস এবং ১৭ জুন নেপালের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে গ্রুপপর্ব শেষ করবে বাংলাদেশ।