জামালপুর আদালত থেকে ফেরার পথে তুলে নিয়ে দুই ভাইকে শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে মেহেদী হাসান সুজন (৩৫) নামে সাবেক এক ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে। মারধরের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ারও হুমকি দেন তিনি।
এ ঘটনায় মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) দুপুরে সুজনসহ চারজনের নামে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী যুবক সাদ্দাম হোসেন (২৮)।
অভিযুক্ত সুজন সরিষাবাড়ী পৌর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও পৌরসভার কাঠিয়ারবাড়ী গ্রামে মো. সুরুজ্জামানের ছেলে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার পোগলদিঘা ইউনিয়নের পুঠিয়ারপাড় গ্রামের আব্দুল আজিজের ছেলে মঞ্জুরুল ইসলামের সঙ্গে একই গ্রামের আব্দুল মান্নানের ছেলে নজরুল ইসলামের মধ্যে পারিবারিক বিরোধ চলছিল। এ ঘটনায় ৮ নভেম্বর মঞ্জুরুল জামালপুর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট (ক অঞ্চল) আদালতে মামলা করেন।
এদিকে মঞ্জুরুলের ছোট ভাই সৌদি আরব প্রবাসী সাদ্দাম হোসেন ছুটিতে সম্প্রতি বাড়িতে আসেন। ২০ নভেম্বর দুই ভাই ও বিবাদী পক্ষ মামলার হাজিরা দিতে আদালতে যান। দুপুর দেড়টার দিকে আদালত থেকে ফেরার পথে পৌরসভার পপুলার মোড় এলাকায় নজরুল ইসলামের নির্দেশে মেহেদী হাসান সুজনসহ ৮-১০ জন প্রবাসী সাদ্দাম ও তার বড় ভাই নজরুল ইসলামের গাড়ি গতিরোধ করেন। দুই ভাইকে তুলে নিয়ে স্থানীয় একটি বাড়িতে আটকে রেখে টানা তিনঘণ্টা শারীরিক নির্যাতন চালান।
তারা সাদ্দামকে ভয়ভীতি দেখিয়ে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত জবানবন্দি মোবাইলে ভিডিও ধারণ করে রাখেন, যা পরিবর্তিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে দিয়ে সম্মানহানির হুমকি দেন।
ভুক্তভোগী সাদ্দাম হোসেন বলেন, এ ঘটনায় শারীরিক ও মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ি আমরা দুই ভাই। কৌশলে আমার স্ত্রী মাহফুজা আক্তার ইলাকে মোবাইলে মেসেজ করে বিষয়টি জানাই। সে ৯৯৯-এ কল করলে সরিষাবাড়ী থানার সদস্যরা বিকেল সাড়ে ৪টায় আমাদের উদ্ধার করে। এরপর থেকে তারা লাগাতার হুমকি ধামকি দিচ্ছে। তাই পরিবারসহ আমরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।
অভিযোগের বিষয়ে মেহেদী হাসান সুজনের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করেও তাকে পাওয়া যায়নি। তবে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আল আমিন হোসাইন শিবলু বলেন, তার বিরুদ্ধে অভিযোগের অন্ত নাই। তিনি চার-পাঁচ বছর আগে সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদককে মারধর করলে জেলা ছাত্রলীগ ওই কমিটি স্থগিত করে। বর্তমান উপজেলা কমিটি এসে তা বিলুপ্ত ঘোষণা করে। শুনেছি কিছুদিন আগে অনৈতিক সুবিধা না দেওয়ায় এক প্রশিক্ষককে তিনি মারধর করেন।
এ বিষয়ে সরিষাবাড়ী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ফয়সাল আহমেদ বলেন, ভুক্তভোগী লিখিত দিয়েছেন। অভিযোগের সত্যতা পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে, ২৪ অক্টোবর জাতীয় মহিলা সংস্থা পরিচালিত তৃণমূল নারী উদ্যোক্তা প্রশিক্ষক শাহরিয়ার হোসেন সাদ্দামকে মারধরের অভিযোগ ওঠে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মেহেদি হাসান সুজনের বিরুদ্ধে। এরও আগে দলীয় নেতাকে মারধরের অভিযোগে তিনি কারাভোগও করেছিলেন।