ইউরোপ পাঠানোর কথা বলে ভুয়া ভিসা দিয়ে সিলেটের প্রায় ৩শ যুবকের কাছ থেকে ২০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন এক ট্রাভেলস ব্যবসায়ী। প্রতিষ্ঠানে তালা দিয়ে তিনি এখন লাপাত্তা। প্রতারিতদের পক্ষে সিলেট কোতোয়ালি থানায় মামলা করেছেন ফখরুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি। মামলায় আত্মসাৎকৃত টাকার পরিমাণ ১৫ কোটি টাকা উল্লেখ করা হলেও টাকার পরিমাণ ২০ কোটির বেশি হবে বলে ধারণা সংশ্লিষ্টদের। কারণ মামলার পর অসংখ্য লোকজন যোগাযোগ করছেন। এখন পুলিশ হন্যে হয়ে ওই প্রতারককে খুঁজছে।
ফখরুলের মতো প্রতারণার শিকার জকিগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম গোটারগ্রামের বাসিন্দা রুহুল আমিন ও মৌলভীবাজারের রাজনগরের বাসিন্দা মাহবুবুর রহমানসহ আরও অনেকে। তারা অভিযোগ করেন, ৯০ দিনের মধ্যে রোমানিয়ায় পাঠানোর প্রলোভন দেখিয়ে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়েছিল আমিন রহমান ট্রাভেলস। আমিন রহমান বলেছিল, রোমানিয়ায় যেতে হলে ৬ লাখ টাকা লাগবে। প্রথমে ১ লাখ দিতে হবে। বাকি ৫ লাখ দিতে হবে ভিসা হওয়ার পর। রোমানিয়ায় যেতে আগ্রহীদের সঙ্গে তিনি স্ট্যাম্পে লিখিত চুক্তিও করেন এবং টাকা দেন। এরপর রোমানিয়া যেতে আগ্রহী অধিকাংশকে ভিসা দিয়ে বাকি টাকা নিয়ে যান। অথচ ভিসাগুলো ভুয়া। রোমানিয়ার দূতাবাসে গেলে ওই ভিসা ভুয়া বলে ফিরিয়ে দেওয়া হয়।
জানা যায়, কয়েকজনকে ভিসা দিয়ে গত বৃহস্পতিবার বিমানবন্দরে পাঠিয়েই ফোন বন্ধ করে দেন আমিন। এরপর থেকে তিনি আত্মগোপনে। ভিসার জন্য নেওয়া অনেকের পাসপোর্টও তার কাছে। রুহুল আমিন জানান, চুক্তি অনুযায়ী ৫ লাখ ২০ হাজার টাকা দেওয়ার পর কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে ভর্তিও হন তিনি। ৩ মার্চ তার ফ্লাইট হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু দূতাবাস তারভিসা ভুয়া বলে ফিরিয়ে দিয়েছে। আমিন রহমান মোবাইল বন্ধ করে দেওয়ার পর জিন্দাবাজারস্থ হক সুপার মার্কেটের দোতলার ওই ট্রাভেলস এজেন্সিতে যান প্রতারিতরা। কিন্তু ট্রাভেলস এজেন্সিটি বন্ধ রয়েছে। তবে মারওয়া বেগম চৌধুরী নামে ওই ট্রাভেলস এজেন্সির এক কর্মকর্তা বলেন, ‘আমিন রহমান আমাদের সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ রেখছেন। সাময়িক সমস্যার কারণে তিনি ফোন বন্ধ রেখেছেন। শিগগিরই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। নতুবা সবার টাকা ফেরত দেবেন।’ প্রতারিতরা বলছেন, আমিন দেশি নয়, বিদেশি একটি নম্বরের হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার করছেন। তাদের আশঙ্কা সে বিপুল অংকের টাকা আত্মসাৎ করে বিদেশ গমনেচ্ছুদের দেশে রেখে নিজেই বিদেশ চলে গেছেন।