প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সরকারের নেওয়া বেশ কিছু পদক্ষেপের ফলে ২০২২ সালে প্রায় ১১ লাখ ১৩ হাজার ৩৭৪ জন কর্মীর বৈদেশিক কর্মসংস্থান হয়েছে। এর মধ্যে নারী কর্মীর সংখ্যা এক লাখ পাঁচ হাজার ৪৬৬ জন।
তিনি বলেন, সরকারি রিক্রুটিং এজেন্সি বাংলাদেশ ওভারসিজ এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড সার্ভিসেস লিমিটেডের (বোয়েসেল) মাধ্যমে ২০২২ সালে ৬১৫ জন পেশাজীবী এবং ১৭ হাজার ৯৭৮ জন দক্ষ কর্মীসহ মোট ১৮ হাজার ৫৯৩ জন কর্মী বৈদেশিক কর্মসংস্থান লাভ করেছে।
বুধবার (১ ফেব্রুয়ারি) সংসদ সদস্য কাজিম উদ্দিন আহম্মেদের এক লিখিত প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। তিনি বলেন, বর্তমানে ১৬৮টি দেশে শ্রমশক্তি রপ্তানি করা হচ্ছে। কিন্তু সরকার মধ্যপ্রাচ্যকেন্দ্রিক শ্রমবাজার নির্ভরতা কমাতে চায়। সেজন্য পূর্ব-ইউরোপ ও পূর্ব-এশিয়ার নতুন কিছু দেশে শ্রমিক রপ্তানির চেষ্টা চলছে। আওয়ামী লীগের ২০১৮ সালের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী প্রতি উপজেলা থেকে গড়ে বছরে এক হাজার কর্মী পাঠানোর জন্য একটি কর্মপরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
এমপি বেনজির আহমেদের অন্য এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০৮-০৯ অর্থবছরে যেখানে মোট খাদ্যশস্য উৎপাদন হতো তিন কোটি ২৮ লাখ ৯৬ হাজার মেট্রিক টন। ২০২১-২২ অর্থবছরে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে চার কোটি ৫৮ লাখ ৯৬ হাজার মেট্রিক টন। বর্তমানে ৭০টির বেশি দেশে সবজি ও ফল রপ্তানি হচ্ছে। কৃষিপণ্য রপ্তানিতে আমরা ১০০ কোটি ডলারের মাইলফলক ছাড়িয়ে গেছি। বর্তমান বাংলাদেশ বিশ্বে চাল উৎপাদনে তৃতীয় স্থানে, সবজি ও পেঁয়াজে তৃতীয় স্থানে। আর পাট উৎপাদনে দ্বিতীয়, চা উৎপাদনে চতুর্থ এবং আলু ও আম উৎপাদনে সপ্তম স্থানে উন্নীত হয়েছে।
জাতীয় পার্টির এমপি রুস্তম আলী ফরাজীর এক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ একটি উচ্চ রেমিট্যান্সপ্রাপ্ত দেশ। বিশ্বজুড়ে মহামারি করোনাভাইরাসের পরও ২০২০-২১ অর্থবছরে ২৪ দশমিক ৭৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ২০২১-২২ অর্থবছরে প্রাপ্ত রেমিট্যান্স ২১ দশমিক শূন্য ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ২০২২-২৩ অর্থবছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত ছয়মাসে প্রায় ১০ হাজার ৪৯৩ দশমিক ২৬ মিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স এসেছে।
তিনি আরও বলেন, রেমিট্যান্সের প্রবাহ বাড়ার জন্য সরকার নানামুখী পদক্ষেপ নিয়েছে। যার মধ্যে অধিক কর্মী পাঠানো এবং বৈধভাবে ব্যাংকের মাধ্যমে রেমিট্যান্স পাঠানো অন্যতম। আর বৈধপথে রেমিট্যান্স পাঠানোর ক্ষেত্রে সরকার ২০১৯ সালের ১ জুলাই থেকে ২ শতাংশ প্রণোদনা দিয়ে আসছে। সরকার প্রণোদনা ২ শতাংশ থেকে আড়াই শতাংশে উন্নীত করেছে। এসব পদক্ষেপে রেমিট্যান্সের প্রবাহ বেড়েছে।
সরকপ্রধান বলেন, বাংলাদেশকে ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত করতে রেমিট্যান্সের কোনো বিকল্প নেই এবং তা আনতে হবে বৈধপথে। নতুন শ্রম বাজার অনুসন্ধান, বিদ্যমান বাজার সংহত করা এবং সম্প্রসারণের লক্ষ্যে সম্ভাবনাময় দেশসমূহের সরকার ও ব্যবসায়ী সংগঠনের সঙ্গে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও বিদেশস্থ বাংলাদেশ মিশনগুলো আলোচনা অব্যাহত রেখেছে।