মঙ্গলবার (৯ জানুয়ারি) বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মেজবাউল হক ঢাকা মেইলকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, গতকাল আকু পেমেন্টের ১ দশমিক ২৭ বিলিয়ন ডলার পরিশোধ করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের ফেডারেল রিজার্ভ থাকা বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব থেকে আকু দায় সমন্বয় করা হয়।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওয়েবসাইটে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, আকুর দেনা পরিশোধের এক দিন আগে, অর্থাৎ গত ৩ জানুয়ারি দিন শেষে বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছিল বিপিএম৬ পদ্ধতির গ্রস হিসাবে ২১ দশমিক ৭৪ বিলিয়ন ডলার। আর বাংলাদেশ ব্যাংকের গ্রস হিসাবে তা ২৬ দশমিক ৯৯ বিলিয়ন ডলার।
নির্বাচন ও সাপ্তাহিক দু’দিন মিলিয়ে গত ৫, ৬ ও ৭ জানুয়ারি বন্ধ ছিল ব্যাংকিং খাত। শুধু সীমিত পরিসরে ৫ ও ৬ জানুয়ারি নির্বাচনী খরচের জন্য স্থানীয় লেনদেন করতে জন্য ব্যাংকের কিছু শাখা খোলা রাখা ছিল বিশেষ ব্যবস্থায়।
এ সময় আন্তর্জাতিক লেনদেন বন্ধ ছিল পুরোটা। গত ডিসেম্বর মাসে রেমিট্যান্স প্রবাহের ইতিবাচক ধারাবাহিকতা বাজায় থাকায় বিপিএম৬ পদ্ধতির গ্রস হিসাবে বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার সঞ্চিতি (রিজার্ভ) ২১ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলার হয়েছিল বছর শেষে।
চলতি অর্থবছরে প্রথমবার (জুলাই-আগস্ট) সময়ের জন্য ১ দশমিক ৩১ বিলিয়ন ডলার আকু দায় পরিশোধ করেছিল বাংলাদেশ। ওই সময়ে আকু দায় পরিশোধের পর প্রথমবারের মতো রিজার্ভ সাত বছর পর ৩০ বিলিয়নের নিচে নেমে হয়েছিল ২৯ দশমিক ৯৭ বিলিয়ন ডলার।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, আমদানি নিয়ন্ত্রণ থাকায় আকুর দায়ও আগের চেয়ে কমছিল গতবারের পরিশোধের সময়ে। আগামী রমজান উপলক্ষ্যে প্রয়োজনীয় পণ্য আমদানি বেড়ে যাওয়ায় দায় কিছুটা বেড়েছে এবার জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।
আইএমএফ জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী বিপিএসম৬ পদ্ধতির গ্রস হিসাব ও নিট হিসাবে বাংলাদেশের রিজার্ভের পার্থক্য ৪ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার।
১৯৭৪ সালের ৯ ডিসেম্বর জাতিসংঘের এশিয়া অঞ্চলের অর্থনীতি ও সামাজিক কমিশনের (ইসক্যাপ) উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত হয় আকু। আকুর সদস্যপদ জাতিসংঘের এশিয়া অঞ্চলের অর্থনীতি ও সামাজিক কমিশনের (ইসক্যাপ) ভৌগোলিক সীমারেখায় অবস্থিত সকল দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর জন্য উন্মুক্ত।
সদর দফতর ইরানের তেহরানে অবস্থিত আকুর সদস্য হচ্ছে বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, ইরান, মিয়ানমার, নেপাল, পাকিস্তান ও মালদ্বীপ। রিজার্ভ সংকটে পড়ে ২০২২ সালের অক্টোবর মাসে আকু থেকে বেরিয়ে যায় শ্রীলঙ্কা। অর্থনৈতিক অবস্থান আগের চেয়ে উন্নতি হলেও এখনো আকুতে ফেরেনি দেশটি।
আকুর সদস্য দেশগুলো নিজেদের মধ্যে আমদানি-রফতানি করে থাকে তা ২ মাস পরপর সমন্বয় করে থাকে।