নতুন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ও নির্বাচন কমিশনার হিসেবে প্রস্তাবিত ১০টি নাম নিয়ে আজ বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছে সার্চ কমিটি। সন্ধ্যা সোয়া ৭টায় বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সার্চ কমিটির সাক্ষাতের কর্মসূচি রয়েছে। সার্চ কমিটির প্রস্তাবিত এই নাম থেকে অনধিক পাঁচ জনকে নিয়ে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করবেন রাষ্ট্রপতি। যদিও এর আগে গঠিত দুই সার্চ কমিটি ১০ জনের প্রস্তাবিত নামের তালিকা প্রকাশ করলেও এবার তা করা হচ্ছে না। নাম প্রকাশের ক্ষেত্রে অনেকটা গোপনীয়তা অবলম্বন করা হচ্ছে। রাষ্ট্রপতির কাছে সুপারিশ দেওয়ার মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে বিলুপ্তি ঘটবে এই কমিটির।
কবে নাগাদ নতুন সিইসি ও নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ হতে পারে—এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাষ্ট্রপতির প্রেসসচিব মো. জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘বিষয়টি সম্পূর্ণ রাষ্ট্রপতির এখতিয়ার। তিনি যখন মনে করবেন, তখন নিয়োগ দেবেন। রাষ্ট্রপতির আদেশের পর মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ প্রজ্ঞাপন জারি করবে।’ এর আগে ২০১৭ সালে তখনকার সার্চ কমিটি যেদিন রাষ্ট্রপতির কাছে সুপারিশ তুলে দিয়েছিলেন, সেদিনই নিয়োগের আদেশ হয়েছিল। আজ সার্চ কমিটি রাষ্ট্রপতির কাছে ১০ জনের নাম প্রস্তাবের পর শনিবার পাঁচ জন চূড়ান্ত (একজন প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও চার জন নির্বাচন কমিশনার) করে গেজেট প্রকাশ করা হতে পারে। রবিবার নতুন কমিশন শপথ নিয়ে ঐ দিনই নির্বাচন কমিশনে যোগদানের কথা শোনা যাচ্ছে।
রাষ্ট্রপতি গঠিত এবারের সার্চ কমিটি মঙ্গলবার তাদের সপ্তম বৈঠকে ১০ জনের নাম চূড়ান্ত করে। আপিল বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসান নেতৃত্বাধীন এই কমিটিতে সদস্য আছেন হাইকোর্টের বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামান, মহাহিসাব নিয়ন্ত্রক ও নিরীক্ষক (সিএজি) মুসলিম চৌধুরী, সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) চেয়ারম্যান সোহরাব হোসাইন, সাবেক নির্বাচন কমিশনার মুহাম্মদ ছহুল হোসাইন ও লেখক-অধ্যাপক আনোয়ারা সৈয়দ হক। কাদের কাদের নাম প্রস্তাব করছেন, তা প্রকাশ করেনি সার্চ কমিটি। তারা বলছে, এটা প্রকাশের এখতিয়ার রাষ্ট্রপতির।
২০১২ সালে এবং ২০১৭ সালে সাবেক প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন দুই বারের সার্চ কমিটি নাম প্রকাশ করেছিল। ২০১২ সালে সার্চ কমিটি রাষ্ট্রপতির কাছে প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার ও সাবেক সচিব কাজী রকিবউদ্দীন আহমদের নাম প্রস্তাব করেছিল। সেখান থেকে কাজী রকিবউদ্দীন আহমদকে সিইসি করে পাঁচ সদস্যের কমিশন গঠন করে দেন রাষ্ট্রপতি। ২০১৭ সালে সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার ও সাবেক সচিব কে এম নূরুল হুদাকে সিইসি হিসেবে নাম প্রস্তাব করা হয়। সেখান থেকে কে এম নূরুল হুদাকে সিইসি হিসেবে নিয়োগ দেন রাষ্ট্রপতি।
সেবারই প্রথমবারের মতো নির্বাচন কমিশনে একজন নারী সদস্যের অন্তর্ভুক্ত করা হয়। তবে সার্চ কমিটির প্রস্তাবিত সিইসি হিসেবে সাবেক পিএসসির চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ সাদিক ও সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোশাররফ হোসেন ভুঁইয়ার নাম শোনা যাচ্ছে। এর বাইরে তালিকায় সিইসি হিসেবে সাবেক প্রতিরক্ষা সচিব কাজী হাবিবুল আউয়ালের নাম থাকতে পারে। চার জন নির্বাচন কমিশনারের বিপরীতে করা আট জনের মধ্যে আছেন দুই জন সাবেক আমলা, দুই জন নারী, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের একজন, সাবেক জেলা ও দায়রা জজ, সাবেক সেনা ও পুলিশ কর্মকর্তার নাম।