হ্যাক নয়, বরং সিস্টেমের দুর্বলতার কারণে তথ্য ফাঁস হয়েছে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
রোববার (৯ জুলাই) সকালে বঙ্গবন্ধু ইন্টারন্যাশনাল সাইবার সিকিউরিটি অ্যাওয়ারনেস অ্যাওয়ার্ডের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ কথা জানান তিনি।
জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, সরকারি কোনো ওয়েবসাইট হ্যাক হয়নি। ওয়েবসাইটের দুর্বলতার জন্য নাগরিকদের তথ্য উন্মুক্ত ছিল। এ সমস্যাটি সমাধানের চেষ্টা চলছে।
জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, সাইবার জগতকে নিরাপদ রাখতে হলে আমাদের ব্যক্তি, পরিবার, প্রাতিষ্ঠানিক ও সোসাইটি এই ৪টি স্তরে গুরুত্ব দিতে হবে। এ সাইবার হামলার হাত থেকে নিজেদের সুরক্ষা প্রদান করতে হলে সচেতনতা বাড়াতে হবে। কেউ যদি কারও অর্থ বা তথ্য চুরি করতে চায় তাহলে সাইবার অ্যাটাক করেই চুরি করে নিতে পারে। সাইবার নিরাপত্তার বিষয়ে এখনই সবাইকে সচেতন হতে হবে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, সার্টের নির্দেশনা না মানা এবং টেকনিক্যাল ত্রুটির কারণে এমনটা ঘটেছে। হ্যাক নয়, সিস্টেম দুর্বলতার কারণে একটি সরকারি ওয়েবসাইটে নাগরিকের ব্যক্তিগত তথ্য উন্মোচন হয়েছিল। এমন অনাকাঙ্ক্ষিত বিষয় রোধ এবং ডেটার সার্বভৌমত্ব অক্ষুন্ণ রেখে সতর্কতার সঙ্গে একটি ‘ডেটা সুরক্ষা আইন’ চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।
পলক বলেন, ডিজিটাল স্বাক্ষরতা, সাইবার সুরক্ষা এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এই তিনটি বিষয়ে আমাদের পরবর্তী প্রজন্মকে সচেতন করতে হবে। পাশাপাশি তাদের কারিগরি সক্ষমতা অর্জন করতে হবে। আর এই কাজটি করতে হবে সম্মিলিত ভাবে। কোনো দেশই একা একা নিজেদের ন্যাশনাল সাইবার স্পেস নিরাপদ রাখতে পারবে না।
এর আগে আর্ন্তজাতিক গণমাধ্যমকে উদ্ধৃত করে দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে বাংলাদেশ সরকারের একটি ওয়েবসাইট থেকে দেশের লাখ লাখ নাগরিকের নাম, ফোন নম্বর, ই-মেইল ঠিকানা এবং জাতীয় পরিচিতি নম্বরসহ বিভিন্ন ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁস হওয়ার খবর আসে।
এ বিষয়ে সরকারের সাইবার ইস্যু দেখভালকারী প্রতিষ্ঠান বিজিডি-ইগভ সার্ট শনিবার (৮ জুলাই) সিচ্যুয়েশনাল অ্যালার্ট জারি করেছে। সার্ট বলছে, ডেটা সুরক্ষায় নিয়মিতই কাজ করছে তারা। সরকারের এই সংস্থা থেকে নিয়মিত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে বিভিন্ন মাধ্যমে সাইবার মনিটরিং করা হয় এবং তাদের প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রদান করা হয়। সার্ট বলছে, সম্প্রতি তথ্য ফাঁস ইস্যুতে কাজ করছে তারা।
দক্ষিণ আফ্রিকাভিত্তিক আন্তর্জাতিক সাইবার নিরাপত্তাবিষয়ক প্রতিষ্ঠান বিটক্র্যাক সাইবার সিকিউরিটির গবেষক ভিক্টর মারকোপাওলোস দাবি করেন, বাংলাদেশ সরকারের একটি ওয়েবসাইট থেকে দেশের লাখ লাখ নাগরিকের নাম, ফোন নম্বর, ই-মেইল ঠিকানা এবং জাতীয় পরিচিতি নম্বরসহ বিভিন্ন ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁস হয়েছে।
তিনি বলেছেন, হঠাৎ করেই তিনি গত ২৭ জুন ফাঁস হওয়া তথ্যগুলো দেখতে পান। এর কিছুক্ষণের মধ্যে তিনি বাংলাদেশ সরকারের কম্পিউটার ইনসিডেন্ট রেসপন্স টিমের (বিজিডি ই-গভ সার্ট) সঙ্গে যোগাযোগ করেন। মারকোপাওলোসের ভাষ্যমতে, এ ঘটনায় বাংলাদেশের লাখ লাখ নাগরিকের ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁস হয়েছে।
এ সংক্রান্ত খবর প্রকাশ করেছে মার্কিন অনলাইন সংবাদমাধ্যম টেকক্রাঞ্চ। তথ্যপ্রযুক্তির বিষয়ে খবর প্রকাশ করা যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক এ সংবাদমাধ্যমটি তথ্য ফাঁস হওয়ার খবরটির সত্যতা যাচাই করেছে বলে দাবি করেছে।