হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হকের ওপর হামলা, হেনস্তা এবং পরিকল্পিত হত্যাচেষ্টার প্রতিবাদে ‘প্রতিবাদ সভা’ করেছেন সংগঠনটির নেতাকর্মীরা। কিন্তু যাকে নিয়ে প্রতিবাদ সভা, স্বয়ং তিনিই উপস্থিত হননি। তবে উপস্থিত নেতারা হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, ‘কেউ যদি তাদের সঙ্গে খেলতে চায় তাহলে তার গদি টিকবে না।’ শুধু মামুনুল হকই নন, সংগঠনটির শীর্ষ তেমন কোনো নেতাই উপস্থিত হননি প্রতিবাদ সভায়। তবে, সভায় উপস্থিত নেতারা বলছেন, যানজটের কারণে মামুনুল হকসহ শীর্ষনেতারা রাস্তায় আটকে ছিলেন।
রোববার (৪ এপ্রিল) বিকেলে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এ প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সংগঠনটির সহকারী মহাসচিব সাখাওয়াত হোসেন রাজী বলেন, ‘একজন সতী-সাধ্বী নারীর ওপর অপবাদ আনা হচ্ছে। এজন্য আল্লাহর গজব পড়বে। কী করে জাতীয় সংসদে এক নারীর চরিত্র নিয়ে এভাবে কথা বলা হয়? একজন নারীর চরিত্রে কলঙ্ক লাগানোর চেষ্টা হয়েছে। যার নিন্দা জানানোর ভাষা আমাদের জানা নেই।
তিনি বলেন, মামুনুল হক সম্পূর্ণ শরিআহ মেনে দ্বিতীয় বিয়ে করেছেন। তার কাছে তথ্য-উপাত্ত চাওয়া যেতে পারে। কিন্তু তাদের হেনস্তা করার কোনো অধিকার কারও নেই।
গতকাল সোনারগাঁওয়ে ‘মামুনুল হকের ওপর সরকারদলীয় অঙ্গ-সংগঠনের নেতারা ন্যক্কারজনক হামলা করেছে’ বলে দাবি করেন রাজি। বলেন, ‘আমরা যদি চাইতাম ঢাকায় আজ কমপক্ষে পাঁচ লাখ লোকের জমায়েত হতো। হেফাজতে ইসলামের সঙ্গে কেউ যদি খেলতে চায় তার গদি টিকবে না।’
প্রতিবাদ সভা হলেও অনুষ্ঠানে উপস্থিত সাংবাদিকরা সাখাওয়াত হোসেন রাজীকে বিভিন্ন প্রশ্ন করেন। এ সময় তিনি কিছু কিছু প্রশ্নের উত্তর দেন। আবার অনেক প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে যান। মামুনুল হক কোথায় ও কবে দ্বিতীয় বিয়ে করেছেন- সাংবাদিকরা জানতে চাইলে রাজি বলেন, বিষয়টি তার ব্যক্তিগত। যার উত্তর দেবেন মামুনুল হক।
মামুনুল হকের বিষয়ে হেফাজতে ইসলামের পক্ষ থেকে কোনো তদন্ত কমিটি করা হবে কি না, জানতে চাইল রাজী কোনো উত্তর দেননি। তবে তিনি বলেন, আমরা নারীর সম্মানে বিশ্বাসী। একজন নারীর ওপর অপবাদ আনা হচ্ছে।
তার এমন বক্তব্যের সূত্র ধরে সাংবাদিকরা জানতে চান, হেফাজতের হরতালে কেন নারী সাংবাদিকদের ওপর হামলা করা হয়েছে। উত্তরে রাজী বলেন, হেফাজতের পক্ষ থেকে এমন কোনো ঘটনা আমরা ঘটাইনি।
মামুনুল হকের সঙ্গে তার স্ত্রীর যে ফোনালাপ ফাঁস হয়েছে তা সঠিক কি না- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা জানি এগুলো কাটছাঁট করা যায়। এগুলো আইনবিরোধী। এজন্য আমরা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ব্যবস্থা নেব। মামুনুল হক সোনারগাঁও রয়েল রিসোর্ট থেকে বের হয়ে তার স্ত্রীর কাছে ফোন দিয়েছিলেন কি না- এ প্রশ্নেরও কোনো উত্তর দেননি তিনি।
মামুনুল হককে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংসদে যে বক্তব্য দিয়েছেন তা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন দলটির কেন্দ্রীয় সহকারী মহাসচিব রাজী। বলেন, মামুনুল হক ও তার স্ত্রীকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংসদে যে বক্তব্য দিয়েছেন তা ভুল তথ্যের ওপর ভিত্তি করে দেওয়া। আমরা আশা করব, তিনি তার ওই বক্তব্য প্রত্যাহার করে নেবেন। হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় সমাজকল্যাণ সম্পাদক হাজি ইয়াকুব, কেন্দ্রীয় নেতা আনোয়ার হোসেন গাজী প্রমুখ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।