ট্রাইব্যুনাল করে হেফাজতের বিচার করার দাবি জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম। শনিবার জাতীয় সংসদের অধিবেশনে তিনি এ দাবি জানিয়ে বলেন, নামে হেফাজতে ইসলাম, এরা ইসলাম বিরোধী। স্বাধীনতা বিরোধী। এরা রাষ্ট্রের শত্রু। দেশের শত্রু। এদের কোনো ছাড় দেওয়া যাবে না। এদের বিরুদ্ধে কঠোর হতে হবে। দরকার হলে ট্রাইব্যুনাল করে অবিলম্বে তাদের বিচার করতে হবে।
শেখ সেলিম বলেন, ২০১৩ সালের ৫ মে হেফাজতের বিরুদ্ধে যে মামলা হয়েছিল তার দ্রুত তদন্ত করে দোষীদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী আর সুবর্ণজয়ন্তীর জন্য অনেক কিছু আমরা সহ্য করে গেছি। আর কোনো কিছু সহ্য করা হবে না। এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনাকে আরও কঠোর হতে হবে। আপনার পেছনে ১৪ কোটি মানুষ আছে। এই অপশক্তিকে ছাড় দেওয়া যাবে না।
শেখ সেলিম বলেন, সরকার বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ১০ দিনের যে অনুষ্ঠান করেছে তাতে ২৭টি দেশের প্রধান ও ১২টি আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রধান ভিডিও বার্তা পাঠিয়ে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। এই অনুষ্ঠান ও ভিতিও বার্তা বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছে।
একাত্তরের স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি, যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে মেনে নিতে পারেনি। সেই শক্তি আমাদের সুন্দর অনুষ্ঠানটিকে কলঙ্কিত করার জন্য চট্টগ্রাম ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সহিংস ঘটনা ঘটিয়েছে উল্লেখ করে শেখ সেলিম বলেন, বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও ২৬ মার্চ স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে বিএনপি-জামায়াত ও স্বাধীনতাবিরোধী হেফাজতে ইসলাম হাটহাজারীতে তাণ্ডব চালায়। তারা থানায় আক্রমণ করে পুলিশের ওপর হামলা করে, পুলিশের অস্ত্র ছিনিয়ে নেয়। তারা ১০ জন পুলিশকে বোমা মেরে আহত করে। পুলিশের গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে। বিভিন্ন স্থাপনায় আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়। ভূমি অফিস ও বিভিন্ন স্থাপনা জ্বালিয়ে পুড়িয়ে দেয়। বাংলাদেশের স্বাধীনতার প্রতি যাদের বিন্দুমাত্র বিশ্বাস রয়েছে তারা কোনোদিন এই জঘন্য কাজ করতে পারে না।
২০১৩ সালে হেফাজতে ইসলামের আন্দোলনের প্রসঙ্গ টেনে শেখ সেলিম বলেন, ২০১৩ সালের ৫ মে বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনে থেকে বিভিন্ন স্থানে বিনাকারণে কী তাণ্ডব করেছিল তারা। সেদিন খালেদা জিয়া বিএনপিকে হেফাজতের পাশে থাকার নির্দেশ দিয়েছিলেন। তারা বায়তুল মোকাররমে মসজিদে আক্রমণ করে।
নরেন্দ্র মোদির বিভিন্ন মুসলিম দেশ সফর প্রসঙ্গে সরকার দলের সিনিয়র এই সদস্য বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বিভিন্ন মুসলিম দেশে সফর করেছেন। সেই সব দেশের সরকার ও জনগণ তাকে আন্তরিকভাবে গ্রহণ করেছে। সেখানে কেউ টু শব্দ করেনি। আর বাংলাদেশে মোদি এলে মুসলমানদের সর্বনাশ হয়ে যাবে। তার আসা নিয়ে এই ধরনের জঘন্য রাজনীতি যারা করেছে তারা পাকিস্তানের নিয়াজী, রাও ফরমান আলী ও তালেবানের অনুসারী।