যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার পারমাণবিক উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে হিরোশিমায় পারমাণবিক বোমা হামলার ৮০ বছর পূর্তি পালন করছে জাপান।
১৯৪৫ সালের ৬ আগস্ট স্থানীয় সময় সকাল ৮টা ১৫ মিনিটে মার্কিন বিমান ‘এনোলা গে’ হিরোশিমা শহরের ওপর ‘লিটল বয়’ নামের একটি পারমাণবিক বোমা নিক্ষেপ করে। সেই ভয়াল দিনের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
চরম গরমের মধ্যে কালো পোশাক পরা সরকারি কর্মকর্তা, শিক্ষার্থী ও বেঁচে থাকা নাগরিকরা শহীদদের স্মরণে স্মারক স্তম্ভে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেন। পেছনে ছিল সেই ঐতিহাসিক গম্বুজাকৃতির ধ্বংসস্তূপ, যা আজও যুদ্ধের বিভীষিকা বহন করে চলেছে।
হিরোশিমার মেয়র কাজুমি মাতসুই তার ভাষণে বলেন, বিশ্বজুড়ে সামরিক শক্তি বৃদ্ধির প্রবণতা আবারও বাড়ছে। রাশিয়া-ইউক্রেন আগ্রাসন ও মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিরতা তার উদাহরণ। তিনি আরও বলেন, এই প্রবণতা ইতিহাস থেকে পাওয়া মূল্যবান শিক্ষাকে সম্পূর্ণভাবে উপেক্ষা করছে।
জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবা বলেন, বিশ্বকে পারমাণবিক অস্ত্রমুক্ত করার ক্ষেত্রে নেতৃত্ব দেওয়া জাপানের নৈতিক দায়িত্ব।
উল্লেখ্য, হিরোশিমায় বোমা হামলায় প্রায় ১ লাখ ৪০ হাজার মানুষ প্রাণ হারান তাৎক্ষণিক বিস্ফোরণ, আগুনের গোলা ও পরবর্তী বিকিরণের কারণে। এর তিন দিন পর, ৯ আগস্ট নাগাসাকিতে দ্বিতীয় পারমাণবিক বোমা হামলায় আরও ৭৪ হাজার মানুষ নিহত হন। এরপর ১৫ আগস্ট জাপান আত্মসমর্পণ করে, যার মধ্য দিয়ে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অবসান ঘটে।
বর্তমানে হিরোশিমা একটি উন্নত শহর, যার জনসংখ্যা ১২ লাখের বেশি। তবে সেই অতীতের ক্ষত এখনো অনেকের স্মৃতিতে জীবন্ত হয়ে আছে।
এবারের বার্ষিকী অনুষ্ঠানে প্রায় ১২০টি দেশ ও অঞ্চলের প্রতিনিধি অংশ নেন। প্রথমবারের মতো তাইওয়ান ও ফিলিস্তিন এতে অংশ নেয়। যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত উপস্থিত থাকলেও রাশিয়া ও চীন অংশ নেয়নি।