ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার পাশাপাশি লেবানন সীমান্তেও হামলার মুখে পড়েছে ইসরায়েল। লেবাননের ইরান-সমর্থিত শক্তিশালী সশস্ত্রগোষ্ঠী হিজবুল্লাহ উত্তর ইসরায়েলের বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়ে আসছে।
এই পরিস্থিতিতে হিজবুল্লাহ খুবই বিপজ্জনক খেলা খেলছে বলে অভিযোগ করেছে ইসরায়েল। তাদের দাবি, বিদ্যমান পরিস্থিতিকে আরও উত্তপ্ত করছে হিজবুল্লাহ। রোববার (২২ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
মূলত গাজা ভূখণ্ডে চলমান যুদ্ধের মধ্যেই ইসরায়েল ও লেবাননের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে সংঘাত। হিজবুল্লাহ শনিবার দিনব্যাপী ইসরায়েলে হামলা চালানোর কথা জানিয়েছে। এছাড়া ইসরায়েলের হামলায় এদিন সশস্ত্র এই গোষ্ঠীটির ৬ যোদ্ধা নিহত হওয়ার কথাও জানিয়েছে তারা।
পরে রোববার সকালে ইসরায়েল এবং হিজবুল্লাহর মধ্যে উত্তেজনা নিয়ে কথা বলেন ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) মুখপাত্র জোনাথন কনরিকাস। তিনি বলেন, ‘এখন পর্যন্ত আমাদের প্রতিক্রিয়া কৌশলগত এবং (লেবাননের সাথে) সীমান্তের কাছাকাছি এলাকায় সীমাবদ্ধ।’
তিনি দাবি করেন, ‘হিজবুল্লাহ খুব, খুব, বিপজ্জনক খেলা খেলছে। তারা চলমান উত্তেজনাকর পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত করে তুলছে, আমরা প্রতিদিনই হিজবুল্লাহর কাছ থেকে আরও বেশি আক্রমণ দেখতে পাচ্ছি।
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর এই মুখপাত্র দাবি করেছেন, (হিজবুল্লাহর হামলা জবাবে) ইসরায়েল ‘শুধু নিজেদের রক্ষা করছে’ এবং ‘প্রতিরোধমূলক নানা পদক্ষেপ’ নেওয়া হয়েছে।
এছাড়া ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলে লেবাননের সাথে সীমান্ত এলাকায় বসবাসকারী লোকদের সরিয়ে নেওয়া হয়েছে বলেও জানান কনরিকাস।
এদিকে মধ্যপ্রাচ্যে আরও ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পাঠাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগন বলেছে, অতিরিক্ত প্যাট্রিয়ট এয়ার ডিফেন্স মিসাইল সিস্টেম ব্যাটালিয়নের পাশাপাশি মধ্যপ্রাচ্যে টার্মিনাল হাই অল্টিটিউড এরিয়া ডিফেন্স বা থাড (THAAD) সারফেস টু এয়ার মিসাইল সিস্টেম পাঠাবে তারা।
মূলত থাড প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাটি স্বল্প এবং মাঝারি-পাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রকে গুলি করে ধ্বংস করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে।
এদিকে মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনও বলেছেন, এই অঞ্চলে ‘মোতায়েন করার জন্য প্রস্তুত’ আরও সেনা রাখা হয়েছে। যদিও তাদের সংখ্যা ঠিক কত তা নির্দিষ্ট করেননি তিনি।
পেন্টাগনের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘ইরান এবং তার প্রক্সি বাহিনী মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলজুড়ে সাম্প্রতিক উত্তেজনা’ বৃদ্ধি করার পর এসব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এছাড়া দুই সপ্তাহ আগে ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হওয়ার পর থেকে ইরাক ও সিরিয়ায় অবস্থানরত মার্কিন বাহিনীর বিরুদ্ধেও হামলা বেড়েছে।
এর আগে গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের অভূতপূর্ব সামরিক অভিযানের পরিপ্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্র বিমানবাহী রণতরীসহ বেশকিছু জাহাজ এবং যুদ্ধবিমান পূর্ব ভূমধ্যসাগরে পাঠায়।
এছাড়া হামাসকে মোকাবিলায় ইসরায়েলকে অতিরিক্ত সামরিক সরঞ্জাম ও গোলাবারুদ দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দেয় দেশটি।