কিশোরগঞ্জ শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রোগীদের খাবার নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এছাড়া ওষুধ সরবরাহেও চলছে নয়-ছয়।
অভিযোগ রয়েছে, হাসপাতালে রোগীদের নির্ধারিত চার্ট অনুযায়ী খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে না। প্রতি রোগীকে সকালের নাস্তায় আপেল বা কমলা বরাদ্দ থাকলেও বাস্তবে নেই। ওজনে কম ও নিম্নমানের খাবর দেওয়া হচ্ছে রোগীদের। এছাড়া ওষুধ সরবরাহের দরপত্র নিয়েও চলছে নাটক।
সুনির্দিষ্ট অভিযোগের প্রেক্ষিতে রোববার দুদকের কিশোরগঞ্জ জেলা কার্যালয় থেকে এনফোর্সমেন্ট টিম অভিযান পরিচালনা করে এমন অনিয়মের সত্যতা পায়।
সোমবার (২৮ আগস্ট) দুদকের উপপরিচালক (জনসংযোগ) মুহাম্মদ আরিফ সাদেক অভিযানের বিষয়টি ঢাকা পোস্টকে নিশ্চিত করেন।
হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. হেলাল উদ্দীনের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, রোগীদের খাবার ও ওষুধ সরবরাহে দরপত্র আহ্বান করে সর্বনিম্ন দরদাতাকে কার্যাদেশ না দিয়ে দুবার দরপত্র বাতিল করে দেন। এ অভিযোগের প্রেক্ষিতে অভিযান পরিচালনা করে দুদক।
অভিযানে হাসপাতালের খাবার প্রস্তুত ও সরবরাহ কার্যক্রম সরেজমিনে পর্যবেক্ষণ ও এ সংক্রান্ত দরপত্রের রেকর্ডপত্র পর্যবেক্ষণ করে দুদক। এসময় রোগীদের খাবার ও ওষুধ সরবরাহে দরপত্র আহ্বান করে শুধুমাত্র পথ্য সরবরাহের জন্য আহ্বানকৃত দরপত্র দুবার বাতিল করার প্রাথমিক সত্যতা পায় এনফোর্সমেন্ট টিম। বর্তমানে তৃতীয় দরপত্রের ক্ষেত্রে দরপত্র উন্মুক্তকরণ কমিটির রিপোর্ট প্রস্তুতের কাজ চলমান রয়েছে বলেও তথ্য পায় দুদক।
এদিন হাসাপাতালের রান্নাঘর পরিদর্শন করে নির্ধারিত ডায়েট চার্টের সঙ্গে খাবার সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান তালহা ট্রেড সিস্টেমের সরবরাহকৃত খাবারের ওজন ও গুণগত মানে গড়মিল পাওয়া যায়।
এতে দেখা যায়, সর্বশেষ ডায়েট চার্ট অনুযায়ী প্রতি রোগীর জন্য সকালের নাস্তায় আপেল বা কমলা বরাদ্দ থাকলেও তা সরবরাহ করা হয়নি। রোগীপ্রতি ২টি করে কলা ও ডিমের পরিবর্তে একটি করে কলা ও ডিম সরবরাহ করা হয়। দুপুর ও রাতের খাবারে রোগী প্রতি ২০০ গ্রাম মুরগীর মাংসের বিপরীতে ১২০ গ্রাম, ১৮০ গ্রাম মাছের বিপরীতে ৭০ গ্রাম সরবরাহ করা হয়। একইভাবে সবজি ও অন্যান্য খাবারেও প্রয়োজনের তুলনায় স্বল্প পরিমাণে ও নিম্নমানের খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে।
অভিযাগের বিষয়ে হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. হেলাল উদ্দীনে দুদককে জানায়, খাবারের মান উন্নয়নে হাসপাতাল প্রশাসন সর্বোত্তম প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। বিভিন্ন কারণে তার অসহায়ত্ব রয়েছে।
এদিন দুদকের অভিযানিক দল অভিযোগ সংশ্লিষ্ট টেন্ডারসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন রেকর্ডপত্র সংগ্রহ করে। সংগৃহীত রেকর্ডপত্র পর্যালোচনা করে কমিশনে বিস্তারিত প্রতিবেদন দাখিল করা হবে বলেও জানায় দুদক।