জায়ন ক্লার্কের প্রোফাইলে কী নেই! তিনি একদিকে উদ্যোক্তা, অনুপ্রেরণাদায়ী বক্তা, লেখক, আবার খেলোয়াড়, এবার তার এই তালিকায় যুক্ত হলো আরও একটা অর্জন। এখন তিনি একজন গিনেস বিশ্বরেকর্ডধারীও।
জায়ন ক্লার্ক হাতে হেঁটে বিশ্বের ‘দ্রুততম মানব’ বনে গেছেন। গত ১৫ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের ওহাইয়োতে দ্রুততম ২০ মিটার হাঁটার বিশ্বরেকর্ডটি গড়েছেন জায়ন। সেদিন তিনি স্টার্টিং লাইন থেকে ফিনিশিং লাইন পর্যন্ত যেতে সময় নিয়েছেন মাত্র ৪.৭৮ সেকেন্ড। তার এই কীর্তিই সম্প্রতি পেয়েছে গিনেস কর্তৃপক্ষের স্বীকৃতি।
জায়ন ক্লার্কের এই রেকর্ড গড়ার পথটা সহজ ছিল না মোটেও। অনেকবার বাধা এসেছে, ট্রায়াল থেকে ছিটকে গেছেন বহুবার। তবে থেমে পড়াটা যে তার ধাঁতে নেই, তাকে এমন সব বাধা রুখবে কী করে?
ছোটবেলাতেই অদম্য মনোবল আর কাজে লেগে থাকার এই চোয়ালবদ্ধ মনোভাবটা জায়ন রপ্ত করেছিলেন । রপ্ত না করে উপায় কী ছিল তার, বিরল এক সমস্যা নিয়ে জন্মেছিলেন, অদম্য না হলে কি আর এই বিশ্বরেকর্ড গড়তে পারতেন?
কডাল রিগ্রেশন সিনড্রোম নামে এক সমস্যা ছিল তার, যার ফলে মেরুদণ্ড থেকে শরীরের নিচের অংশের অস্তিত্ব নেই জায়নের শরীরে। এখন যে ঠিক হয়ে বসতে পারছেন, সেজন্যেও তাকে যেতে হয়েছে দুটো অস্ত্রোপচারের মধ্য দিয়ে।
এতকিছুর পরেও তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ার সময় অ্যাথলেটিক্স এর প্রতি আগ্রহী হন। তার গভীর আগ্রহ জন্মায় কুস্তির প্রতিও। যার ফলে ওহিওর ম্যাসিলন ওয়াশিংটন উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়ার সময়, স্কুলের রেসলিং টিমে সদস্য পদ পেয়ে যান তিনি। তার পথটা আরও কঠিন করে তুলেছিল সহপাঠীদের উপহাস, বিভিন্ন প্রকারের হয়রানি। তবে সবকিছুকে জায়ন পরিণত করেছেন নিজের জন্য শক্তিতে। তাই তো আজ তিনি ঠাই নিয়েছেন গিনেস বুকের পাতায়।
জায়ন অবশ্য থামতে চান না এখানেই। অলিম্পিকে খেলতে চান। ভাঙতে চান অলিম্পিক রেকর্ডও। এখন পর্যন্ত অলিম্পিকে সর্বোচ্চ পদকজয়ের রেকর্ডটা মাইকেল ফেল্পসের দখলে। সেটাতেই চোখ পড়েছে তার। এখন পর্যন্ত যে অদম্য মনোভাব দেখিয়েছেন জায়ন, তাতে সে রেকর্ডও যদি তিনি ভেঙে দেন, অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না আদৌ।