হরতাল-অবরোধ ও জ্বালাও-পোড়াও শুধুমাত্র মিডিয়াতে দেখেন বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার (ইসি) মো. আলমগীর। তিনি বলেন, আমি ১৪টা জেলা ঘুরে এলাম, সেখানে আন্দোলনের এরকম কোনো লক্ষণই দেখিনি। যা দেখি আমি সেটা আপনাদের মিডিয়ায় দেখি। এর বাইরে বাস্তবতায় আমি যত জেলায় ঘুরে এলাম সেখানে কিছু দেখেনি।
তিনি আরো বলেন, ১৪ জেলায় যাওয়া মানে তো বিভিন্ন জায়গা দিয়েই যাওয়া হয়েছে। সেখানে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাপন দেখেছি, মানুষ ভোটকে উৎসব হিসেবে নিয়েছে। নানা রকম মিছিল দেখেছি, নির্বাচনী জনসভা দেখেছি। কিন্তু আমি কোন নির্বাচনের বিপক্ষে কোন কথা বলতে বা অনুষ্ঠান দেখিনি।
বৃহস্পতিবার (২১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি। হরতাল-অবরোধ, জ্বালাপোড়াও যদি সামনে আরও বাড়ে তাহলে আপনাদের ভোট সুষ্ঠু করার জন্য এটা একটা বাড়তি চ্যালেঞ্জ হবে কি না, এ প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
মো. আলমগীর বলেন, একটা উন্নত দেশে নির্বাচন বলতে অর্থাৎ আমেরিকাতে নির্বাচন তো নির্বাচন কমিশন করে না। সেখানে ম্যাজিস্ট্রেট থাকে না, কোনোৈ র্যাব থাকে না, পুলিশ থাকে না এমনকি কিছুই থাকে না। সেখানকার পরিবেশ আর আমাদের পরিবেশ তো এক না। আমাদের এখানে যে বিষয়গুলো আছে, তা হচ্ছে নির্বাচন ম্যানজমেন্ট, আইন-শৃঙ্খলা। যেহেতু একটি দল বা কয়েকটি দল নির্বাচনে আসছে না, তাদের নির্বাচন বাতিলের হুমকির একটা চ্যালেঞ্জ আছে। এই সমস্ত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে কীভাবে সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে একটি নির্বাচন করা যায় এবং ভোটাররা যাতে উৎসাহিত হয়ে ভোট দিতে আসে সেইসব বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রার্থীদের বৈঠক প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আজকে আইনশৃঙ্খলা নিয়ে যে চ্যালেঞ্জগুলো আছে, সেগুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য তাদের যে পরিকল্পনা রয়েছে, সেগুলো আমাদের জানিয়েছে। তাদের প্রস্তুতির কিছু সুপারিশ জানানো হয়েছে। যেকোনো ধরনের নাশকতা যেন না ঘটে এজন্য তারা যেন ঘটনা ঘটার আগে ব্যবস্থা নিতে পারে, সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। যারা দায়িত্ব পালন করবেন, তারা যেন নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করেন সে বিষয়টিও বলা হয়েছে।
তিনি বলেন, বিকেলে প্রার্থীদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। সেখানে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা সংশয় জানিয়েছেন তারা ঠিক মতো প্রচারণা চালাতে পারবেন কি না। আমারা তাদের বিষয়টা আশ্বস্ত করেছি। এবার আমাদের সাব কমিটি এবং কমিটি করা আছে। যেগুলোর মাধ্যমে কোনো সমস্যা থাকলে আমরা নজর আনতে পারব। এই কমিটিগুলো এর আগে কখনো কোনো নির্বাচনে করা হয়নি। কোনো না কোনোভাবে এগুলো আমাদের নজরে আসবে এবং নজরে এলে আমরা সেই হিসেবে ব্যবস্থা নিতে পারব।
ভোট বর্জন করার জন্য নতুন একটা শঙ্কা তৈরি হয়েছে, যেখানে প্রার্থীরা এবং আপনারা কতটা শঙ্কিত— এমন প্রশ্নের জবাবে ইসি আলমগীর বলেন, প্রার্থীরা এ বিষয়ে খুব একটা শঙ্কা দেখান নাই। তারা বলেছেন, উনারা (বিরোধীরা) এই ধরনের কথাবার্তা বলছেন। এই বিষয়ে আমরা শঙ্কিত না। আপনারা যেন কোনো শঙ্কা না প্রকাশ করেন। বরং তারা আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন।