বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা পাথওয়ের নির্বাহী পরিচালক মো. শাহিন বলেছেন, আতঙ্ক নিয়ে সড়কে নামতে হয়, পরিবার কিংবা আপনজনদের কাছে ফিরে যেতে পারবো কি না শঙ্কা জাগে। এমন দুঃস্বপ্ন বহুদিন বহুকাল ধরে তাড়া করছে।
শনিবার (২২ অক্টোবর) জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস উপলক্ষে পাথওয়ে আয়োজিত র্যালিতে তিনি এসব কথা বলেন।
‘আইন মেনে সড়কে চলি, নিরাপদে ঘরে ফিরি’ এমন প্রতিপাদ্যে র্যালির আয়োজন করা হয়। সব শ্রেণি-পেশার মানুষের অংশগ্রহণে র্যালিটি পাথওয়ের প্রধান কার্যালয়ের সামনে থেকে বের হয়ে মিরপুর-১০ থেকে ১৪নং প্রধান সড়কের বিভিন্ন এলাকা প্রদক্ষিণ করে। সে সময় তাদের হাতে নিরাপদ সড়ক দিবসের বিভিন্ন শ্লোগান সম্বলিত প্লেকার্ড/ফেস্টুন ও ব্যানার দেখা যায়।
শাহিন বলেন, প্রতি বছরই ঢাক-ঢোল পিটিয়ে নিরাপদ সড়ক দিবস উদযাপন করা হয়, অথচ সড়কে প্রতিদিন শত শত লোকের প্রাণহানি ঘটছে। বিভিন্ন যানবাহন দুর্ঘটনার কবলে পড়ে পঙ্গুত্ব বরণ করে পরিবার ও রাষ্ট্রের বোঝা হয়ে মানুষের দ্বারে দ্বারে সাহায্যের জন্য ছুটে বেড়াচ্ছে অসহায় লাখো মানুষ। কিন্তু বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ দেখেও না দেখার ভান করে যাছে যুগের পর যুগ।
ডোপ টেস্ট সকল চালকের জন্যই অতি জরুরি উল্লেখ তিনি বলেন, শুধু পেশাদার চালক নয়, ডোপ টেস্ট প্রয়োজন পেশাদার-অপেশাদার উভয়ের। কেননা সড়ক ব্যবহারে উভয়েই সমান এবং সড়ক দুর্ঘটনা উভয় পেশার চালকের মাধ্যমেই ঘটছে। তাই এখানে কোনো একটিকে ছোট করে দেখলে হবে না। চালকের আসনে যেই বসেন না কেন! নিয়ম মেনে গাড়ি চালাতে হবে সবাইকে।
শাহিন বলেন, লক্কর-ঝক্কর ফিটনেস ও মেয়াদোত্তীর্ণ গাড়ি দাপিয়ে বেড়াচ্ছে সড়ক ও মহাসড়কে সর্বত্র। সারাদেশে কেবল একটি ভিহিক্যাল ইন্সপেকশন সেন্টার সচল, বাকি সবকটি অচল, এখানেও রয়েছে বিআরটিএ কর্তৃপক্ষের বড় রকমের উদাসীনতা। শুধু একটি ভিহিক্যাল ইন্সপেকশন সেন্টার দেখিয়ে সারা দেশের গাড়ির ফিটনেস দেওয়া হচ্ছে।
অন্যদিকে জেলা পর্যায়ে বিআরটিএর পরিস্থিতি আরও বেশি নাজুক ও ভঙ্গুর উল্লেখ করে পাথওয়ের নির্বাহী পরিচালক বলেন, স্বল্পসংখ্যক জনবল নিয়ে ডিসি অফিসের দুই চারটি রুম দ্বারা পরিচালিত হয়ে আসছে বিআরটিএর সেবা কার্যক্রম। যেখানে প্রতিদিন শত শত কোটি টাকা রেভিনিউ আদায় করছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। অথচ জেলা পর্যায়ে সারাদেশে কোথাও নেই বিআরটিএর নিজস্ব ভবন।
দক্ষতা যাচাইয়ের ক্ষেত্রে এটা এক মারাত্মক ত্রুটি উল্লেখ করে শাহিন বলেন, বিআরটিএর অনুমোদিত নির্দিষ্ট প্রশিক্ষকের প্রশিক্ষণ ছাড়াই নামমাত্র লার্নার লাইসেন্স ও ভুয়া সার্টিফিকেট সনদ দেখিয়ে লাখ লাখ অদক্ষ চালক, ১০ মিনিটের জিগজ্যাগ পরীক্ষা এক মিনিটে শেষ করে পার পেয়ে যাচ্ছে পেশাদার-অপেশাদার সব পরীক্ষার্থী। ড্রাইভিং লাইসেন্স পরীক্ষার এমন উদাসীনতাকে কোনোভাবেই ছাড় দেওয়া ঠিক নয়।