বিশ্ব খাদ্য দিবস উপলক্ষ্যে স্বেচ্ছাব্রতী যুব সংগঠন ইয়ূথ এগেইনস্ট হাঙ্গার এর উদ্যোগে মিনিপার্লামেন্ট অনুষ্ঠিত। আজ বিশ্ব খাদ্য দিবস। এই দিবসকে ঘিরে স্বেচ্ছাব্রতী যুব সংগঠন ইয়ূথ এগেইনস্ট হাঙ্গার বাংলাদেশ একটি মিনি পার্লামেন্ট এর আয়োজন করেন। পার্লামেন্ট এর প্রতিপাদ্য বিষয়ছিল “নয়া স্বাভাবিকতায় পুষ্টি নিরাপত্তার চ্যালেঞ্জঃ মোকাবেলায় চাই যথাযথ আইন কাঠামো”। অধিবেশনে প্রস্তাব উত্থাপন করেন পঞ্চগড়-১ আসনের যুব ছায়া সংসদ সদস্য ও বলরামহাট দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়এরবিজ্ঞানবিভাগের দশম শ্রেনিরশিক্ষার্থী মোছাঃরিতুমনি। হাঙ্গার ফ্রি ওয়ার্ল্ড এর ট্রেনিং সেন্টার, বলরামহাট, বোদা পঞ্চগড়ে প্রায় অর্ধশতাধিক স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে এই মিনি পার্লামেন্টটি অনুষ্ঠিত হয়।
বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ এর আদলে এই পার্লামেন্টে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন, ঠাকুরগাঁও সরকারি কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অনার্স তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মোছাঃ শাম্মী আক্তার , খাদ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন বলরাহাট দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয় এর বিজ্ঞান বিভাগের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী মোঃ শামীম আহমেদ, বিরোধী দলীয় নেতা হিসেবে বক্তব্য রাখেন, বলরাহাট দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী রায়হান কবির, বিরোধী দলীয় উপনেতার হিসাবে বক্তব্য রাখেন ঠাকুরগাঁও সরকারি মহিলা কলেজের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মোছাঃ শারমিন আক্তার। এছাড়াও পঞ্চগড়-২ আসন থেকে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী মোঃ গোলাম রব্বানি, ঠাকুরগাঁও-২ আসন থেকে মোঃ জাহিদ হাসান, ঠাকুরগাঁও-৩ আসন থেকে মোঃ রবিউল ইসলাম ছাড়াও প্রায় অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থীদের কলরবে মুখরিত হয়ে ওঠে গোটা প্রাঙ্গন।
অধিবেশনে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশ এখনখাদ্যে স্বয়ংসম্পুর্ণ। কিন্তু তারপরও পুষ্টি নিরাপত্তারদিক থেকে এখনো বাংলাদেশ অনেক পিছিয়ে। দেশের এখনো প্রায় চার কোটি মানুষ প্রয়োজনীয় কিলোক্যালরি খাবার গ্রহণ করতে পারেন না। এখনো প্রতি চার জনে একজন পেটেক্ষুধা নিয়ে রাতে ঘুমাতে যায়, প্রতি ছয় জনে একজন অপুষ্টিতে ভোগেন। দেশের এখনো প্রায় ৪৪ শতাংশ নারী রক্ত স্বল্পতায় ভোগেন। মানুষ এখন কেন ক্ষুধার্ত থাকে, কারণ মানুষের কাজ নেই, আয় নেই, চাহিদামত খাবার কেনার সামর্থ্য নেই। এমন পরিস্থিতি খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তাহীনতা দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে এবং ২০৩০ সালের এসডিজি যে লক্ষ্যমাত্রা তা অর্জন করা কঠিন হয়ে যাবে।
যুবদেরকে এখনো আমরা উন্নয়ন পরিকল্পনার কেন্দ্রবিন্দুতে নিয়ে আসতে পারিনি। প্রতিবছর গ্রাজুয়েশন সম্পুন্ন করে লক্ষ লক্ষ শিক্ষিত তরুণ কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ করার জন্য হাসফাঁস করছে। কিন্তু তারা কোন কাজ পাচ্ছেনা। দিন দিন উচ্চ শিক্ষিত বেকারত্বের হার বাড়ছে, যারা স্বল্প শিক্ষিত তারাই চাকুরী জীবী আর যারা উচ্চ শিক্ষিত তারাই বেকার। এছাড়াও কৃষিকে এখনো আমরা লাভজনক পেশায় পরিণত করতে পারিনি। ফলে শিক্ষিত তরুণরা কৃষিজ পেশা থেকে মুখফিরিয়ে নিচ্ছে। কারণ কৃষির আধুনিকীকরণ ও যান্ত্রিকীকরণ এর সুফল এখন পর্যন্ত আমরা প্রান্তিক অঞ্চলে পৌছাতে পারিনি। দেশের এই পরিস্থিতির দ্রæতই উত্তরণ ঘটিয়ে দেশে একটি খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা আইন প্রণয়ন করার পক্ষে সকলেই মতামত দেন।
মিনি পার্লামেন্ট এ মাননীয় স্পিকারে দায়িত্ব পালন করেন ইয়ূথ এগেইনস্ট সাবেক সভাপতি মোঃ রাসেল রানা। এছাড়াও পার্লামেন্ট সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, হাঙ্গার ফ্রি ওয়ার্ল্ড এর ডেপুটি কান্ট্রি ডিরেক্টর আনজুমান আখতার, প্রত্যাশা ২০২১ ফোরাম বোদা এর সভাপতি শফিউল আলম টুটুল, সাধারণ সম্পাদক মাজেদুল ইসলাম আকাশ, ৭ নং চন্দন বাড়ি ইউনিয়নপরিষদ এর মহিলা সদস্য মোছাঃ নাসিমা আক্তার ও ইয়ূথ এগেইনস্ট হাঙ্গার বোদা পঞ্চগড়ের সভাপতি মোনালিসা আক্তার আইরিন।