আফগানিস্তানে কয়েকদিনের মধ্যে সরকার গঠনের আশা করছে তালেবান। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে সুসম্পর্ক চায় এই গোষ্ঠীটি। স্বীকৃতি আদায়ের চেষ্টাও চালাচ্ছে। এ বিষয়ে তারা বিভিন্ন দেশের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনের জন্য কয়েকটি চ্যানেলকে কাজে লাগাচ্ছে। ইতিমধ্যে চীন, রাশিয়া, পাকিস্তান ও তুরস্ক স্বীকৃতি দেওয়ার প্রস্তুতি শুরু করেছে। যদিও ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন তালেবানকে স্বীকৃতি না দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। ভিন্ন প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। খবর ডেইলি মেইল ও বিবিসির
তালেবানের অন্যতম মুখপাত্র মোহাম্মদ নায়েম আলজাজিরাকে বলেন, ‘আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনের জন্য তালেবানের কয়েকটি সংযোগমাধ্যম (চ্যানেল) রয়েছে। আমরা এসব চ্যানেল আরও সক্রিয় ও উন্নত করব। তালেবানের মুখপাত্র আরও বলেন, আমরা (তালেবান) বিশ্বের সব দেশকে আহ্বান জানাচ্ছি, যেকোনো বিষয়ে আমাদের সঙ্গে বসুন। আমরা নারী ও সংখ্যালঘুদের অধিকার ও আফগান নাগরিকদের বাকস্বাধীনতা রক্ষায় সব সময় সচেতন থাকব।
যুক্তরাষ্ট্রসহ অনেক পশ্চিমা দেশ কাবুলে তাদের দূতাবাস বন্ধ করে দিয়েছে। কিন্তু কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ দেশ এখনও তালেবানের সঙ্গে সম্পর্কের রাস্তা খোলা রেখেছে। চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছেন, আফগানিস্তানের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরিতে চীন আগ্রহী। তালেবান বারবার বলেছে তারা চীনের সঙ্গে সুসম্পর্ক চায়। আফগানিস্তানের পুনর্গঠন এবং উন্নয়নে তারা চীনের অংশগ্রহণ চায়। অমরা তাদের ইচ্ছা ও পছন্দকে স্বাগত জানাই। রুশ দূতাবাসের নিরাপত্তা নিয়ে আলোচনার জন্য আফগানিস্তানে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত দিমিত্রি জিরমভ আজ মঙ্গলবার তালেবান প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। রুশ সরকার বলেছে, তারা তালেবানের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করতে চায়, কিন্তু তাদেরকে আফগানিস্তানের শাসক হিসাবে স্বীকৃতি দিতে তাড়াহুড়ো করতে চায় না।
ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি বলেছেন, আফগানিস্তানে মার্কিন সামরিক ব্যর্থতার ফলে সেদেশে দীর্ঘস্থায়ী শান্তি স্থাপনের সুযোগ তৈরি হয়েছে। এই সুযোগকে ব্যবহার করতে হবে। পাকিস্তান আফগান পরিস্থিতি নিয়ে এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো প্রতিক্রিয়া দেয়নি, তবে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বলেছেন, আফগানরা দাসত্বের শৃঙ্খল ভেঙ্গেছে। এই চারটি দেশ কাবুলে তাদের দূতাবাস বন্ধ করেনি, যদিও ইরান তাদের বেশ কজন কূটনীতিককে দেশে নিয়ে গেছে। ভবিষ্যতে আফগানিস্তানে একটি তালেবান সরকারকে যে এই চারটি দেশ মেনে নেবে তার ইঙ্গিত স্পষ্ট।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিনকেন বলেন, যে সরকার নারী ও শিশুসহ দেশের জনগণের মৌলিক অধিকার রক্ষা করে না ও সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোকে আশ্রয় দেয় অবশ্যই এমন সরকার ক্ষমতায় বসতে যাচ্ছে না। তাছাড়া তালেবানের নিজেদের স্বার্থও এর সঙ্গে জড়িত। তারা যদি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে মিলে দেশ পরিচালনা করতে চায় তাহলে তারা অবশ্যই মানুষের মৌলিক অধিকার ও নিরাপত্তার বিষয়ে সচেতন থাকবে। তুর্কি প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান জানিয়েছেন, আফগানিস্তানের স্থিতিশীলতার রক্ষায় পাকিস্তানের সঙ্গে একযোগে কাজ করবে তুরস্ক।