করোনাকালে জরুরি কেনাকাটায় প্রস্তুতিতে ঘাটতি ছিল স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের। বুধবার (১৯ মে) অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এ কথা বলেন। এ ব্যাপারে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অভিজ্ঞতার অভাব, নিজেদের হাতেই সব ক্ষমতা রাখার প্রবণতা আর অন্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমন্বয়হীনতার কারণে খেই হারিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ। দরকার ঢেলে সাজানো।
৫০০ টাকার গগলস ৫ হাজার, দুই হাজার টাকার পিপিই চার হাজার। আবার পাঁচটি সফটওয়ার কেনা হয়েছে ৫৫ কোটি টাকায়। চারটি ওয়েবসাইট উন্নয়নে ব্যয় হয়েছে ১০ কোটি টাকায়। করোনাকালে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে কেনাকাটায় এমন অনিয়ম ছিল নিয়মিত চিত্র। আবার নিম্নমানের মাস্ক এন নাইনটি ফাইভ বলে চালিয়ে দেওয়া। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের তিন কোটি টাকার এমআরআই মেশিন নয় কোটি টাকায় কেনারও প্রমাণ মেলেছে। এ ছাড়া হাসপাতালের যন্ত্রপাতি, রি-এজেন্টসহ এমন শত শত অনিয়মের চিত্র গণমাধ্যমে উঠে এসেছে প্রতিদিন। এবার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের খরচের বিষয়ে মুখ খুললেন অর্থমন্ত্রী।
অর্থমন্ত্রী বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় তাদের দায়িত্ব ছিল সেভাবে এগুলোকে যথাযথ সময়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা, গ্রহণ করা হয়নি। যদি বারবার একই রকম মিসটেক না করত, একই রকম ভুলভ্রান্তি না করত তাহলে আমরা বিবেচনায় আনতাম না। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ অতিমারি মোকাবিলায় অন্যান্য মন্ত্রণালয় ও দপ্তরগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করতে ব্যর্থ হয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। তাইতো অপচয়, দুর্নীতি আর অনিয়ম ভর করছে স্বাস্থ্য খাতে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউট বিভাগের অধ্যাপক ড. সৈয়দ আবদুল হামিদ বলেন, স্বাস্থ্য যে স্বাস্থের হাতে নিয়ন্ত্রণই কতটুকু আছে, সেটাও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় অনেক সময় কিন্তু জানে না। তারা বলছেন, সময় এসেছে স্বাস্থ্য খাতকে ঢেলে সাজানোর। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. বে-নজীর আহমেদ বলেন, যদি আন্তঃমন্ত্রণালয় সমন্বয় ভালো থাকত, এখানে স্বচ্ছতা থাকত তাহলে কিন্তু এই বিভিন্ন পর্যায়ে নানা ধরনের দুর্নীতিগুলো হয়েছে সেগুলো থেকে স্বাস্থ্য বিভাগ এবং দেশ রক্ষা পেতে পারত।
স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি ডা. ইকবাল আর্সনাল বলেন, ব্যবস্থাপনায় যে ত্রুটি বিচ্যুতিগুলো আছে সেই ত্রুটি বিচ্যুতিগুলো উদঘাটন করে আসলে সেখানে সংশোধন করা প্রয়োজন। মন্ত্রণালয়ের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে এর দায় এড়ানোর সুযোগ নেই বলেও মনে করেন তারা। এরআগে বুধবার (১৯ মে) দুপুরে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল জানান, করোনাকালীন জরুরি কেনাকাটায় যে ধরনের প্রস্তুতি নেয়া দরকার ছিলো তা পারেনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। তিনি বলেন, যতদিন কালো টাকা থাকবে, ততদিন তা বৈধ করার সুযোগও থাকবে। মন্ত্রী বলেন, যতদিন কালো টাকা থাকবে, ততদিন তা বৈধ করার সুযোগও থাকবে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সময়মত তাদের দায়িত্ব পালন করতে পারেনি। বারবার একই ভুল না হলে আমরা অনেক কিছুকেই বিবেচনায় আনতাম না।