বরিশালে স্বামীকে বিষ খাইয়ে হত্যার অভিযোগে স্ত্রী ও তার পরকীয়া প্রেমিককে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। একই সাথে ৫ হাজার টাকা জড়িমানা অনাদায়ে এক মাসের সশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
রোববার (২৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে বরিশাল জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক কে এম রাশেদুজ্জামান রাজা এ রায় প্রদান করেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, বরিশালের উজিরপুর উপজেলার কুড়ালিয়া এলাকার নিহত সুশান্ত বৈরাগীর স্ত্রী সেবিকা মন্ডল (২২) ও তার পরকীয়া প্রেমিক ঝালকাঠি জেলার জগদীশপুর এলাকার মিঠুন হালদার (২৮)।
বিষয়টি নিশ্চিত করে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বেঞ্চ সহকারি মো. কামরুল ইসলাম জানান, আদালত ১৭ জন স্বাক্ষির স্বাক্ষ্য গ্রহন শেষে আজ রোববার দুপুরে এই রায় ঘোষনা করেন। রায় ঘোষনার সময় সেবিকা মন্ডল আদালতে উপস্থিত থাকলেও মিঠুন হালদার পলাতক রয়েছে। মিঠুন হারদারের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে আদালত।
আদালত সূত্রে জানাগেছে, ঘটনার ১ বছর ৬ মাস পূর্বে হিন্দু বিধানমতে বিয়ে হয় সুশান্ত বৈরাগী ও সেবিকা মন্ডলের। বিয়ের পরই সেবিকা মন্ডরের সাথে মিঠুন হালদারের সাথে মোবাইলের মাধ্যমে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
ঘটনার দিন ২০১৭ সালের ৭ নভেম্বর বরিশালের উজিরপুর উপজেলার কুড়ালিয়া গ্রামের নারায়ন বৈরাগীর ছেলে সুশান্ত বৈরাগী তার স্ত্রী সেবিকা মন্ডলের কাছে রাতে ভাত খেতে চায়। এসময় সেবিকা মন্ডল টেবিলে রাখা ভাত খেতে বলে। সুশান্ত মন্ডল টেবিলে রাখা কীটনাশক জাতীয় বিষ মিশ্রিত ভাত ও শাপলা ভাজা খেতে শুরু করে। অর্ধেক ভাত খাওয়ার পরে সুশান্ত বমি ও ছটফট করতে শুরু করে। পরে ওই রাতে স্থানীয় পল্লী চিকিৎসককে ডেকে আনলে তার অবস্থার অবনতি ঘটলে বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপালে নিয়ে যাওযার পরামর্শ দেন। পরদিন ৮ নভেম্বর সকাল ৭টা ৫০ মিনিটে তাকে শেবাচিম হাসপাতারে ভর্তি করানো হয়। এর পরদিন ২০১৭ সালের ৯ নভেম্বর রাত ৩টায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় সুশান্ত বৈরাগী মারাযান।
এঘনায় নিহতের ভাই সুনীল বৈরাগী ২০১৭ সনের ১০ নভেম্বর বরিশালের উজিরপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
পরবর্তীতে ২০১৯ সনের ৩১ ডিসেম্বর সিআডি বরিশাল জেলার পুলিশ পরিদর্শক মো. আলী আকবর মামলার চার্জশীট দেন। আদালত ১৭ জনের স্বাক্ষ্য গ্রহণ শেষে রোববার দুপুরে এই রায় ঘোষণা করেন।