জাতীয় শিক্ষানীতি অনুসারে স্বতন্ত্র মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদফতর প্রতিষ্ঠার দাবি জানিয়েছেন বিভিন্ন সরকারি স্কুলের শিক্ষকরা। একইসঙ্গে সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ব্যাচভিত্তিক পদোন্নতি, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাদের ৫০ শতাংশ পদে সরকারি স্কুলের শিক্ষকদের পদায়ন ও প্রস্তাবিত মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদফতরের পরিচালক ও আঞ্চলিক কার্যালয়ের পরিচালকের পদসহ পরিদর্শন শাখার অন্যান্য সব পদে সরকারি স্কুলের শিক্ষকদের পদায়নের দাবি জানানো হয়েছে।
বুধবার (২৫ জানুয়ারি) দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষকরা এসব দাবি জানান। ‘স্বতন্ত্র মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদফতর বাস্তবায়ন জাতীয় কমিটি’ এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।’
সংবাদ সম্মেলনে সরকারি মাধ্যমিক স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদের চেয়ারম্যান ও সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষা সমিতির খুলনা অঞ্চল কমিটির সভাপতি মমতাজ খাতুন নেতৃত্ব দেন। তার পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন আয়োজক সংগঠনের মূখপাত্র ওমর ফারুক। আরো উপস্থিত ছিলেন, শিক্ষক নেতা মুনিরুল ইসলাম মঞ্জু, কামরুন নাহার, আকরাম হোসেন, রিজবি হোসেন খান, শাহ নেওয়াজ সেতু, সালাউদ্দিন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অসাম্প্রদায়িক, দুর্নীতিমুক্ত ও শোষণমুক্ত উন্নত সমৃদ্ধশালী সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে শিক্ষা ব্যাবস্থাকে ঢেলে সাজাতে ১৯৭৪ সালে সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক/শিক্ষিকাদের পদটি দ্বিতীয় শ্রেণীর গেজেটেড পদমর্যাদা দেয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছিলেন।
আমাদের দীর্ঘদিনের দাবি এন্ট্রিপদ নবম গ্রেড ধরে একটি যৌক্তিক পদসোপানসহ স্বতন্ত্র মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদফতর গঠন করা। বিষয়টি মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতর এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট শাখাকে অবহিত করে বেশ কয়েকবার আবেদন দেয়া হয়েছে। কিন্তু দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হলেও আমাদের আবেদনের বিষয়টি আলোর মুখ দেখেনি। যার ফলে শিক্ষা ব্যবস্থার মেরুদন্ড মাধ্যমিক শিক্ষা তার কাঙ্খিত সাফল্য অর্জন করতে ব্যর্থ হচ্ছে।
লিখিত বক্তব্যে আরো বলা হয়, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতর বর্তমানে বিপুল সংখ্যক মাধ্যমিক বিদ্যালয়, বেসরকারি কলেজ, সরকারি কলেজ তদারকিসহ অন্যান্য কার্যক্রম চালাতে হিমশিম খাচ্ছে। তাই মাধ্যমিক শিক্ষা প্রশাসনের কাজে গতি এবং বিদ্যালয় পরিদর্শন ও তদারকি ব্যবস্থা জোরদার এবং জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০ এর প্রস্তাবনা অনুযায়ী মানসম্মত আধুনিক, যুগোপযোগী ও বাস্তবমুখী শিক্ষা নিশ্চিত করা এবং জাতীয় শিক্ষাক্রম ২০২১ মাঠ পর্যায়ে বাস্তবায়নের জন্য ‘স্বতন্ত্র মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদফতর’ একান্ত প্রয়োজন।
সংবাদ সম্মেলনে ১২ দফা দাবি উপস্থাপন করা হয়। দাবি গুলো হলো- স্বতন্ত্র মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদফতর বাস্তবায়ন। সহকারী শিক্ষকদের বিদ্যমান পদের আপগ্রেডেশন করে এন্ট্রিপদ নবম গ্রেডে উন্নীতকরণ। সরকারি কলেজের ন্যায় চার স্তরীয় পদসোপান বাস্তবায়ন। দ্রুত দীর্ঘদিনের বকেয়া টাইমস্কেল/ সিলেকশন গ্রেডের মঞ্জুরী আদেশ প্রদান। বিভিন্ন সময়ে নিয়োগপ্রাপ্ত সম্মানিত সিনিয়র সহকর্মীগণের ব্যাচ ভিত্তিক নিয়মিত পদোন্নতি নিশ্চিত করা। ২০১০ (অংশ) ও ২০১১ ব্যাচের সহকারী শিক্ষকদের সিনিয়র শিক্ষকের শূণ্য পদে পদোন্নতি। সিনিয়র শিক্ষকদের উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের ৫০ভাগ পদে দ্রুত বিধি মোতাবেক পদায়ন নিশ্চিতকরণ। দ্রুত নন-ক্যাডার শিক্ষকদের স্থায়ীকরণ। অগ্রীম বর্ধিত বেতন নিয়ে সৃষ্ট জটিলতার দ্রুত নিরসন। মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষকদের জন্য সুষ্ঠু ও সুসামঞ্জস্যপূর্ণ বদলি নীতিমালা বাস্তবায়ন।