যৌতুকের জন্য স্ত্রী নির্যাতনের অভিযোগের মামলায় জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত সংগীত পরিচালক শওকত আলী ইমনের অব্যাহতি দিয়েছেন আদালত। ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনাল-৬ এর বিচারক মো. আল মামুন তাকে অব্যাহতি প্রদান করেন।
ট্রাইব্যুনালের বেঞ্চ সহকারী সাইফুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘গত ২ আগস্ট সংগীত পরিচালক ইমন এ মামলার দায় থেকে অব্যাহতি চেয়ে আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত এ বিষয়ে আদেশের জন্য ২১ আগস্ট দিন ধার্য করেন। এরপর আদালত সোমবার তাকে এ মামলা থেকে অব্যাহতি দেন।’
২০২১ সালের ২৬ নভেম্বর এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা রমনা থানার পুলিশের পরিদর্শক তাহমিনা রহমান নয়জনকে সাক্ষী করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
মামলা অভিযোগ পত্রে তদন্তকারী কর্মকর্তা বলেন, ‘আসামি শওকত আলী ইমন একজন যৌতুক লোভী ও মারমুখী লোক। ২০২০ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি ইসলামী শরীয়া মোতাবেক রিদিতা রেজাকে বিবাহ করেন। বিবাহের পর থেকে আসামি ইমন তার স্ত্রী রিদিতা রেজার নিকট যৌতুক দাবি করে তাকে মারপিট ও মানসিক নির্যাতন করে আসছে বলে প্রাথমিক তদন্তে প্রকাশ পায়। তার ধারাবাহিকতায় একই বছরের ৩ জুলাই রাত সাড়ে ১১ টারা দিকে আসামি ইমন তার বাসা রমনা থানাধীন ইস্কাটন গার্ডেনের বাসায় পুনরায় বাদিনীর নিকট যৌতুক হিসাবে দশ লাখ টাকা দাবি করে। স্ত্রী রিদিতা রেজা যৌতুক দিতে অস্বীকার করলে আসামি ইমন তার স্ত্রীকে মারপিট করে বাসা থেকে বের করে দেন।’
অভিযোগ পত্রে আরও উল্লেখ করা হয়, ‘তদন্তকালে সাক্ষ্য প্রমাণে ও বাদিনীর জখমের চিকিৎসকের সনদপত্র পর্যালোচনা ও ঘটনার পারিপার্শ্বিকতায় মামলাটি আসামি ইমন নারী ও শিশু নির্যাতন আইন ২০০০ (সংশোধিত ২০০৩/এর ১১(গ) ধারায় মামলাটি প্রাথমিক সত্য প্রমাণিত হয়।’
২০২০ সালের ২০ সেপ্টেম্বর যৌতুকের জন্য নির্যাতনের অভিযোগে শওকত আলী ইমনের স্ত্রী রিদিতা রেজা বাদী হয়ে রমনা থানায় মামলাটি দায়ের করেন। এরপর একই বছরের ২৫ সেপ্টেম্বর রাতে ইস্কাটনের বাসা থেকে শওকত আলী ইমনকে গ্রেফতার করে রমনা থানা পুলিশ। পরের দিন ২৬ সেপ্টেম্বর আদালত জামিন আবেদন খারিজ করে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। ২০২০ সালের ১ অক্টোবর আসামি ইমনের জামিন দেন আদালত।
২০২০ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলের সংবাদ পাঠিকা রিদিতা রেজাকে বিয়ে করেন শওকত আলী ইমন। এটি তার তৃতীয় বিয়ে ছিল। ২০১৩ সালে ‘পূর্ণদৈর্ঘ্য প্রেম কাহিনী’ চলচ্চিত্রের জন্য শ্রেষ্ঠ সংগীত পরিচালক ক্যাটাগরিতে ইমন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান।