বর্তমান বিশ্বে মধ্যপ্রাচ্যের বৃহত্তম দেশ সৌদি আরবের অর্থনীতি সবচেয়ে দ্রুতগতিতে বাড়ছে বলে মনে করে পৃথিবীর ২য় বৃহত্তম ঋণদাতা সংস্থা আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। সংস্থাটির হিসাব অনুযায়ী, চলতি সময়ে সৌদির অর্থনীতি বৃদ্ধির শতকরা হার ৭ দশমিক ৬ শতাংশ।
দেশটির বিনিয়োগ বিষয়ক মন্ত্রণালয় (মিসা) সোমবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে এসব তথ্য। মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, সৌদির অর্থনৈতিক, অবকাঠামোগত ও শাসন ব্যবস্থায় যেসব সংস্কারমূলক পদক্ষেপ গত কয়েক বছরে নেওয়া হয়েছে, সেসবকেই দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির মূল ভিত্তি বলে মনে করে আইএমএফ।
২০১৭ সালে সৌদি রাজপরিবারের সন্তান মোহাম্মদ বিন সালমান দেশটির যুবরাজের পদে অভিষিক্ত হন। তারপর থেকেই দেশের অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক বিভিন্ন সংস্কামূলক পদক্ষেপ নেওয়া শুরু করেন তিনি। সৌদি আরবের সংবাদমাধ্যম সৌদি গেজেটের তথ্য অনুযায়ী, গত ৫ বছরে দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে গৃহীত সংস্কারমূলক পদক্ষেপের সংখ্যা ৬শ’রও বেশি।
সে সব পদক্ষেপের সুফলও অবশ্য পাওয়া গেছে অল্প সময়ের মধ্যেই। মিসার অধীন সংস্থা ন্যাশনাল ইনভেস্টমেন্ট স্ট্র্যাটেজির (নিস) তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিনিয়োগের যে লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছিল সৌদি সরকার, তার ১১২ শতাংশ ইতোমধ্যে পূরণ হয়েছে।
অভ্যন্তরীন ও আন্তর্জাতিক— দুই ধরনের বিনিয়োগেই গত বছর ব্যাপকভাবে সফল ছিল সৌদি আরব। ২০২১ সালে দেশটির সরকারের অভ্যন্তরীণ বিনিয়োগের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬১ লাখ ৪০ জার কোটি রিয়াল (সৌদি মুদ্রা)। কিন্তু বছর শেষে দেখা যায়, বিনিয়োগ হয়েছে ৬৩ লাখ ৮০ হাজার কোটি রিয়াল; অর্থাৎ এই ক্ষেত্রে দেশটি লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে ১০৪ শতাংশ সফল।
আন্তর্জাতিক বিনিয়োগে সে বছর সৌদি সরকারের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৭ হাজার ২০০ কোটি রিয়াল। কিন্তু বছর শেষে দেখা যায় এ ক্ষেত্রেও দেশটি ১৭২ শতাংশ সফল।
বিনিয়োগ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ২০১১ সালে সৌদি আরবের প্রবৃদ্ধি ছিল ১১ দশমিক ৮ শতাংশ। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ফলে দেশটিতে বেকার সমস্যাও কমেছে। সরকারি হিসেব অনুযায়ী দেশটিতে ২০২২ সালে দেশটিতে বেকারত্বের হার কমেছে ১০ দশমিক এক শতাংশ।
দেশটির অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির মূল কারণ হিসেবে জ্বালানি তেলের উৎপাদন বৃদ্ধিকে উল্লেখ করেছে মন্ত্রণালয়। জ্বালানি তেল উৎপাদন ও রপ্তানিকারী দেশগুলোর জোট ওপেক প্লাসের সঙ্গে চুক্তির ভিত্তিতেই ২০১১ সাল থেকে জ্বালানি তেলের উৎপাদন বৃদ্ধি করেছিল সৌদি।
তার সুফল পাওয়া যাচ্ছে এখন।