ঈদযাত্রায় ভোগান্তি কমাতে নওজোর, সফিপুর ও গড়াই—এই তিনটি ফ্লাইওভার সোমবার খুলে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব মো. নজরুল ইসলাম। তিনি বলেন, এবার ঈদে ঘরমুখো মানুষের চাপ বেশি থাকবে। ফ্লাইওভার তিনটি খুলে দিলে সমস্যা অনেকটা দূর হবে। যেটা আশঙ্কা করা হচ্ছে, আশা করি যানজট অনেকটা সহনীয় পর্যায়ে থাকবে। ঘরে ফিরতে আমাদের ভোগান্তি হবে না। আমাদের সব ধরনের প্রস্তুতি আছে। রোববার (২৪ এপ্রিল) দুপুরে সচিবালয়ে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সভাকক্ষে ঢাকা বাইপাস প্রাইভেট পাবলিক পার্টনারশিপ প্রকল্পের প্রথম দফার চেক হস্তান্তর অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন সচিব।
সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব বলেন, এবার কোভিড পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকায় ঈদে ঘরমুখো মানুষের চাপ বেশি থাকবে। সেটা বিবেচনায় রেখে আমাদের অ্যারেঞ্জমেন্ট আছে। আমাদের কন্ট্রোল রুম আছে, সেটা ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকবে। গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে আমরা সিসিটিভি ক্যামেরাও বসাচ্ছি। আমরা কন্ট্রোল রুম থেকে মনিটরিং করবো। পুলিশ বিভাগের পক্ষ থেকেও প্রস্তুতি রয়েছে। আশা করি, যানজট অনেকটা সহনীয় পর্যায়ে থাকবে। আশা করছি, ঘরে ফিরতে আমাদের ভোগান্তি হবে না। এর যৌক্তিকতাও আমরা ব্যাখ্যা করেছি।
ঢাকা-গাজীপুর ও ঢাকা-ময়মনসিংহ সড়কে ইতোমধ্যে যানজট শুরু হয়েছে। ঈদের আগে তো আরও বেশি সমস্যা হতে পারে। ভোগান্তি কমাতে সরকারের কী পদক্ষেপ নিয়েছেন জানতে চাইলে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব মো. নজরুল ইসলাম বলেন, এ করিডরে অতীতের অভিজ্ঞতায় দেখেছি এখানে যানজট হয়। আব্দুল্লাহপুর থেকে জয়দেবপুর চৌরাস্তা, আবার জয়দেবপুর চৌরাস্তা থেকে অ্যালেঙ্গা হাটিকুমরুল—এই করিডরেও যানজটের অভিজ্ঞতা আছে। বিআরটি করিডরে মন্ত্রী ঘোষণা দিয়েছেন, এই বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে অবকাঠামো নির্মাণ কাজ শেষ হবে। ইতোমধ্যে আমরা রাস্তাটা চলাচল যোগ্য করার জন্য বিভিন্ন জায়গায় কাজ সম্পন্ন করেছি। আমরা সেখানে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন, পরিবহন মালিসহ সংশ্লিষ্টদের নিয়ে যৌথভাবে পরিদর্শনের ব্যবস্থা করেছিলাম। আমরা দেখেছি কী কী সমস্যা আছে।
তিনি বলেন, পরিবহন মালিকদের কিছু সুপারিশ ছিল, আমরা সেগুলো বিবেচনায় নিয়েছি। যানজট যাতে সহনীয় পর্যায়ে থাকে, ডেডলক যাতে না থাকে। এখনও কিছু কিছু জায়গায় কাজ অসম্পন্ন রয়েছে। আমরা সেই বিষয়ে নির্দেশনা দিয়েছি। আমি আবারও সেখানে যাব। ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট ঠিকভাবে হলে সেখানে পরিস্থিতি সহনীয় পর্যায়ে থাকবে।
আগামীকাল তিনটি ফ্লাইওভার খুলে দেওয়া হচ্ছে জানিয়ে মো. নজরুল ইসলাম বলেন, জয়দেবপুর মোড় থেকে অ্যালেঙ্গা মোড় হাটিকুমরুল পর্যন্ত তিনটি ফ্লাইওভার ছিল। বাজার, শহর থাকায় এখানে যানজট সবসময় লেগেই থাকতো। নওজোর, সফিপুর ও গড়াই—এই তিনটি ফ্লাইওভার আমরা কালকের মধ্যে খুলে দিচ্ছি। আমি গতকাল এটা সরেজমিনে দেখার জন্য গিয়েছি। দেখেছি এটা খুলে দেওয়ার মতো। এই তিনটি ফ্লাইওভার খুলে দিলে সমস্যা অনেকটা দূর হবে।
তিনি বলেন, অ্যালেঙ্গা মোড়ে ইন্টারসেকশনগুলো চাওড়া করে দিচ্ছি জানিয়ে সচিব বলেন, বঙ্গবন্ধু সেতু দিয়ে যে গাড়িগুলো আসবে… এদিকে তারাকান্দা, মধুপুর, ঘাটাইল দিয়ে জামালপুর ও ময়মনসিংহে যাওয়ার একটা রাস্তা আছে। হাইওয়ে পুলিশের সঙ্গে আমাদের আলোচনা হয়েছে, ময়মনসিংহ-জামালপুরের গাড়িগুলো সেদিক দিয়ে ডাইভার্ট করার একটা অপশন আমরা রেখেছি।
নলকায় আরেকটি সেতু আগামীকাল (২৫ এপ্রিল) খুলে দেওয়া হচ্ছে জানিয়ে সচিব বলেন, যেসব স্থান সমস্যা প্রবণ হিসেবে চিহ্নিত ছিল, যানজট প্রবণ ছিল, সেগুলো আমাদের পক্ষ থেকে আমরা অ্যাড্রেস করেছি। কাজগুলো আরও পরে শেষ করার কথা ছিল, কিন্তু ঈদের কথা বিবেচনা করে আগেই শেষ করেছি। ঈদ আসলেই বাস মালিকরা ফিটনেস বিহীন বাস সড়কে নামিয়ে দেয় এ বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হবে কিনা জানতে চাইলে সচিব বলেন, কোনো টার্মিনাল থেকে ত্রুটিপূর্ণ বাস ছাড়ে না। একসঙ্গে যখন গার্মেন্টস ছুটি হয়, তখন একটা অস্বাভাবিক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। তখন টঙ্গীর কোনো মোড় থেকে গাড়ি (ত্রুটিপূর্ণ) ছাড়ে, ট্রাকে করে যায়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও কঠোর থাকতে পারে না, মানবিক একটা আবদেনও সৃষ্টি হয়ে যায়। এটাই বাস্তবতা।