আনফা বেগমের দুই ফুফাতো ভাই সজীব আহমদ ও রূপজ আহমদ অভিযোগ করেন, গ্রেপ্তার হওয়া কিশোরকে সামনে রেখে অন্যান্য দোষী ব্যক্তিরা নিজেদের আড়ালে রাখার চেষ্টা করছে।
সজীব বলেন, মামলাটি গভীরভাবে তদন্ত করা উচিত। পাঁচটি মোবাইল ফোন নিয়ে যাওয়া হয়েছে, যা তথ্য উদ্ঘাটনে সহায়ক হতে পারে। এছাড়া মামলার দ্বিতীয় আসামি যে কিশোর, সিলেট থেকে ঢাকায় যাওয়ার জন্য টিকিটের টাকাটাও তার বড় ভাই ফয়সাল বিকাশ করে পাঠিয়েছেন। তাহলে ফরিদা বেগমের আলমারিতে থাকা নগদ টাকা যে তারা চুরি করেছে সেটি কে নিয়েছে? সঠিক তদন্ত করে এ ঘটনায় রহস্য উদ্ঘাটন করা সম্ভব।
রূপজ আহমদ বলেন, ফরিদা বেগম ও মিনহাজুলের সঙ্গে হত্যাকারীর শারীরিক শক্তির অসামঞ্জস্য এবং হত্যার ধস্তাধস্তির আলামত দেখে মনে হয়েছে, সেখানে আরও কেউ উপস্থিত ছিল। হত্যাকারীরা ঘরের পেছনের দেয়াল ব্যবহার করেছে পালানোর জন্য, যেখান থেকে তারা নিরাপদে বের হতে পারে। সামনের অংশে থাকা সিসিটিভির কারণে তারা ওই পথ ব্যবহার করেনি। পিবিআই অনুসন্ধানে ধরা পড়ে, হত্যার পরপরই রক্তমাখা কাপড় ধুয়ে পরিষ্কার অবস্থায় বের হয়েছে খুনিরা।
পিবিআইয়ের সাব ইন্সপেক্টর সঞ্জয় লাল দেব ঢাকা পোস্টকে জানান, ঘটনার পর সকালে গিয়ে ঘরের মেঝের রক্ত ও লাশের অবস্থা দেখে মনে হয়েছে ফরিদা বেগম ও তার ছেলে মিনহাজুল মৃত্যুর আগে লড়াই করেছেন, অর্থাৎ ধস্তাধস্তি হয়েছে। দুইজনের বেশি খুনি ওখানে ছিল বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। পাশের কক্ষের চেয়ারের ওপরে ভেজা কাপড়চোপড় পাওয়া গেছে। অর্থাৎ খুনিরা গোসল করে পরিষ্কার হয়ে বের হয়েছে, এটা বুঝা গেছে।
সুনামগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হক জানান, নার্গিস বেগমের ছেলের দেওয়া ১৬৪ ধারার জবানবন্দিতে উঠে এসেছে হত্যার দিনের কিছু তথ্য। তবে মামলার প্রধান আসামি ফয়সাল আহমদ এখনও পলাতক।
পুলিশ সুপার আ ফ ম আনোয়ার হোসেন খান বলেন, হত্যার মূল রহস্য ইতোমধ্যে অনেকটা স্পষ্ট হয়েছে, এবং ফয়সালকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত আছে।
উল্লেখ্য, গত ২৯ অক্টোবর হওয়া এই নির্মম হত্যাকাণ্ডে আনফা বেগম ইসলাম বাদী হয়ে তিনজনের নামে মামলা করেন। এতে অজ্ঞাত আরও কয়েকজনকে সন্দেহভাজন হিসেবে উল্লেখ করা হয়।