বিজিবি মহাপরিচালক মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় পৌঁছান এবং বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
বিজিবি মহাপরিচালক বলেন, আমি গতকাল দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে সবচেয়ে বেশি এই সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ে ইনভলভ আছি। বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) আমি নিজে সরেজমিনে সীমান্ত পরিদর্শনে যাচ্ছি। আমরা ধৈর্য ধারণ করে, মানবিক দিক বিবেচনা করে এবং আন্তর্জাতিকভাবে সুসম্পর্ক বজায় রেখে পরিস্থিতি মোকাবিলার চেষ্টা করছি। আমাদের প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা সেরকমই। গতকাল প্রধানমন্ত্রী এব্যাপারে কথাও বলেছেন, ধৈর্যধারণের নির্দেশনা দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা অনুযায়ী বিজিবি কাজ করে যাচ্ছে।
বিজিবি মহাপরিচালক বলেন, গতকাল রাত পর্যন্ত ১১৫ জন বিজিপি সদস্য আমাদের কাছে আত্মসমর্পণ করে বা আশ্রয় নিয়েছেন। আজ সকালে আরও ১১৪ জন যুক্ত হয়েছে। দুপুর পর্যন্ত এই সংখ্যা ছিল ২২৯। দুপুরের পর আরো বিজিপিসহ দেশটির অন্যান্য বাহিনীর ৩৫ জন যোগ হয়ে ২৬৪ জন আশ্রয় নিয়েছেন। তাদের আমরা থাকা ও খাবারের ব্যবস্থা করেছি। তাদের মধ্যে ১৫ জন আহত ছিলেন, এরমধ্যে ৮ জন ছিলেন গুরুতর আহত। এই ৮ জনের মধ্যে চারজনকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে বিজিবির ব্যবস্থাপনায় ভর্তি করা হয়েছে। বাকি চারজনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বিজিবির ব্যবস্থাপনায় চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
সীমান্তে উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে সরকারি পরিকল্পনা সম্পর্কে তিনি বলেন, সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কাজ করছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মিয়ানমারের সঙ্গে যোগাযোগ করছে। আশ্রিতদের প্রত্যাবর্তন বা ফেরানোর বিষয়ে কীভাবে সমাধান করা যায় তা নিয়ে কাজ চলছে। মিয়ানমার এব্যাপারে সহযোগিতা করবে বলে জানিয়েছে। তারাও প্রত্যাবর্তনের ব্যাপারে নোট নিয়েছে। আশা করি খুব শিগগিরই তাদের প্রত্যাবর্তন করানো হবে।
বিজিবি ডিজি বলেন, একই সঙ্গে দুই দেশের দুই সীমান্ত বাহিনীর মধ্যে যোগাযোগ হচ্ছে। সীমান্তবর্তী পরিস্থিতি আপনারা জানেন। মিয়ানমারে গোলাগুলির মধ্যে কিছু শেল এসে বাংলাদেশে পড়ছে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে গতকাল এক রোহিঙ্গা নাগরিক ও একজন বাংলাদেশি নারী মারা গেছেন। এই মৃত্যু কোনোভাবেই কাম্য নয়। আমরা প্রোটেস্ট নোট দিয়েছি। আমরা বারবার বলেছি আজকেও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে একটি বড় মিটিং হচ্ছে। আর আমি আগামীকাল সরেজমিন সীমান্ত পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে যাব।
তিনি বলেন, আজকে মিয়ানমারের ডিএ (ডিফেন্স অ্যাটাচ) আমার সঙ্গে দেখা করেছেন। সবদিক অ্যাঙ্গেজ করে কীভাবে এর আশু সমাধান করা যায়, সে চেষ্টা আমরা করছি।
বিজিবি মহাপরিচালক বলেন, আজকে ৬৫ জন রোহিঙ্গা বোটের মাধ্যমে নদী পথে মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশের প্রবেশের চেষ্টা করেছে। আমাদের টেকনাফ বিজিবি তাদেরকে প্রতিহত করেছে। তাদের পুশব্যাক করার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। আমরা নতুন করে কোনো রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশে আর প্রবেশ করতে দেব না। এভাবে আমরা বাংলাদেশের অখণ্ডতা রক্ষা করে প্রধানমন্ত্রী দিক-নির্দেশনায় বিজিবি কাজ করে যাচ্ছে। সীমান্তের সার্বিক নিরাপত্তা পরিষদের এখন পর্যন্ত বিজেপি নিয়ন্ত্রণ রয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ৫ ফেব্রুয়ারি তিনি বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন।