যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর জম্মু-কাশ্মীরসহ সব সীমান্ত এলাকায় সেনা উপস্থিতি কমাতে একমত হয়েছে ভারত ও পাকিস্তান। অন্যদিকে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী মরিয়া হয়ে উঠেছেন বলে মন্তব্য করেছেন পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ। আর একটা পরমাণু যুদ্ধ যুক্তরাষ্ট্র রুখে দিয়েছে বলে দাবি করেছেন ট্রাম্প।
হটলাইনে আলোচনায় বসেছেন ভারত ও পাকিস্তানের মিলিটারি অপারেশন্স বিভাগের প্রধানরা। সিদ্ধান্ত হয়েছে, সীমান্তে সেনার সংখ্যা কমাবে দু-পক্ষই।
প্রায় ৪৫ মিনিটের ওই বৈঠকের পর কোনো বিবৃতি দেয়নি কেউই। তবে পাকিস্তানি গণমাধ্যম ডন জানিয়েছে, আপাতত সীমান্ত এলাকার নিরাপত্তা ও ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকবে দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী। সীমান্তে সেনাবাহিনীও থাকবে, কিন্তু সংঘাত পরিস্থিতির সৃষ্টি না হলে তারা সামনে আসবে না।
এছাড়া দুই দেশের সীমান্তরেখার ১ কিলোমিটারের মধ্যে কোনো হেলিকপ্টার ও ১০ কিলোমিটারের মধ্যে কোনো যুদ্ধবিমান প্রবেশ করবে না বলেও সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বৈঠকে।
এদিকে, ১২ই মে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণের পর কাশ্মীর সীমান্তে ড্রোন দেখা গেছে আবারো। কাশ্মীরের সাম্বা শহরে ব্ল্যাকআউটের মধ্যে পাকিস্তানি ড্রোন ভূপাতিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ভারত।
অন্যদিকে, জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে পাকিস্তানের প্রতি মোদীর হুঁশিয়ারির সমালোচনা করেছেন পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ।
তিনি বলেন, পাকিস্তান সন্ত্রাসবাদের ভুক্তভোগী। ভারতই সবসময় এই অঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠায় বাধা দেয়। এবারের লড়াইয়ে ভারত পরাজিত হয়েছে বলে মরিয়া হয়ে উঠেছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। তবে তিনি যে আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছেন সেটা একটা ভালো দিক। এতে হয়তো উত্তেজনাটা থামবে।
ওদিকে আবার, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছেন, পারমাণবিক যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছিল ভারত ও পাকিস্তানের। যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপের কারণে সেই আশঙ্কা দূর হয়েছে।
ট্রাম্প বলেন, আমরা একটি সম্ভাব্য পরমাণু সংঘাত থামিয়ে দিয়েছি। আমি মনে করি, যদি সত্যিই একটা যুদ্ধ শুরু হয়ে যেতো, তাহলে খুব খারাপ হতো, লাখ লাখ মানুষের মৃত্যু হতো। ওয়াশিংটন যে তা রুখে দিয়েছে, এতে আমি খুব গর্বিত। দুই দেশের উত্তেজনা প্রশমনে সবচেয়ে কার্যকর পথ হতে পারে বাণিজ্য।
তিনি আরও বলেন, এই যুদ্ধবিরতির ক্ষেত্রে আমি সেটা উপলব্ধি করতে পেরেছি। আমরা আপনাদের উভয়ের সঙ্গে বাণিজ্যের পরিমাণ বিপুল হারে বাড়াতে চাই। উত্তেজনা থামান। যদি আপনার থামেন, তাহলে আমরা বাণিজ্য করতে পারব; আর, যদি আপনারা না থামেন- আমরা কোনো ধরনের বাণিজ্যে যাব না।
দুই দেশের উত্তেজনা থামার পর ৩২টি বিমানবন্দর খুলে দিয়েছে ভারত। আর ভারতের জন্য আকাশ সীমা আগেই খুলে দিয়েছে পাকিস্তান।