সিলেটের কানাইঘাটে ফরিদ উদ্দিন নামে এক যুবককে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ইউপি সদস্যসহ তিনজনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। শুক্রবার (০৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করে র্যাব-৯ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ আবদুর রহমান এ তথ্য জানান।
গ্রেফতাররা হলেন- উপজেলার লক্ষ্মীপ্রসাদ পূর্ব ইউনিয়নের নবনির্বাচিত ইউপি সদস্য নাজিম উদ্দিন, তার সহযোগী কাওছার আহমদ ও মোস্তাক আহমদ। বৃহস্পতিবার (০৩ ফেব্রুয়ারি) রাত থেকে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত সিলেট ও মৌলভীবাজারের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
এর আগে গত ৩১ জানুয়ারি বিকেলে সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার সীমান্তবর্তী লক্ষ্মীপ্রসাদ পূর্ব ইউনিয়নের বড়খেওড় এলাকায় প্রকাশ্যে ফরিদ উদ্দিনকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। খুনিরা ফরিদ উদ্দিনের একটি পা শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলে। এ ঘটনায় নিহত ফরিদ উদ্দিনের বাবা মো. রফিকুল হক কানাইঘাট থানায় সাতজনের নাম উল্লেখ করে ২ ফেব্রুয়ারি হত্যা মামলা করেন।
হত্যাকাণ্ডের চার দিন পর তিন আসামিকে গ্রেফতার করে সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-৯ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ আবদুর রহমান বলেন, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টা থেকে শুক্রবার ভোর ৫টা পর্যন্ত মৌলভীবাজারের শেরপুর থেকে সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করে চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী নাজিম উদ্দিনকে গ্রেফতার করা হয়। তার দেওয়া তথ্য মতে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত কাওছার আহমদকে সিলেটের দক্ষিণ সুরমা ও মোস্তাক আহমদকে সিলেট নগরীর বন্দরবাজার থেকে গ্রেফতার করে র্যাব।
তিনি আরও বলেন, নিহত ফরিদ ও গ্রেফতার তিনজন একই এলাকার বাসিন্দা ও পরস্পরের আত্মীয়। এলাকায় প্রভাব বিস্তার নিয়ে তাদের মধ্যে বিরোধ রয়েছে। এনিয়ে আগেও উভয়পক্ষের মধ্যে মামলা-হামলার ঘটনা ঘটেছে।
নাজিম উদ্দিন সর্বশেষ ইউপি নির্বাচনে মেম্বার নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই তাদের বিরোধ ফের চাঙ্গা হয়ে উঠে। নাজিম ও তার অনুসারীরা ফরিদকে নানাভাবে হুমকি-ধমকি দিতে থাকে। ঘটনার দুই দিন আগে এ নিয়ে ফরিদ তার ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন। যেখানে নাজিমের ভাই এনাম কমেন্ট করে ফরিদকে শায়েস্তা করার হুমকি দেন।
র্যাব কর্মকর্তা আরও জানান, ঘটনার দিন (৩১ জানুয়ারি) বিকেলে ফরিদ তার আত্মীয় শাহিনকে নিয়ে মমতাজগঞ্জ বাজার থেকে বাইকে করে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হন। পথিমধ্যে এফআইভিডিবি স্কুলের সামনে যাওয়া মাত্র পার্শ্ববর্তী টিলা থেকে বড় ধারালো অস্ত্র হাতে দুইজন মুখোশধারী ফরিদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। ফরিদের দুই পায়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে মারাত্মক জখম করে তারা। এতে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে ঘটনাস্থলেই ফরিদ মারা যান।
ফরিদের আত্মীয় শাহীনও হামলার শিকার হন। তবে তিনি ঘটনাস্থল থেকে দৌঁড়ে পালিয়ে প্রাণে বাঁচেন এবং স্বজনদের খবর দেন। নিজাম ও মোস্তাকের পরিকল্পনায় তিন গ্রুপে বিভক্ত হয়ে ফরিদকে হত্যা করা হয়েছে বলে জানান র্যাবের অধিনায়ক।