প্রায় ১০ মাস পর গত জুলাই মাসে এসব সিম ব্যবহারকারীর মধ্যে ৬ জনের নামে স্থানীয় থানা থেকে নোটিশ আসে, তাদের সিম ব্যবহার করে ‘বিকাশ’, ‘নগদ’ ও ‘রকেট’ একাউন্ট খুলে প্রতারণার মাধ্যমে ৩০ হাজার টাকা করে হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে। এ অভিযোগে করা মামলায় শরীয়তপুরের সিআইডি তাদেরকে ডেকেছে। এমন নোটিশ পেয়ে হতভম্ব হয়ে যান ওই ৬ জন। আরও ১৬ জনের নামে এমন নোটিশ প্রস্তুত হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। এছাড়া বাকিদের অনেকের নামে একাধিক সিম তোলা হয়েছে এবং সেগুলো ব্যবহার করে প্রতারণার কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। কিন্তু তারা এ সম্পর্কে কিছুই জানেন না। এমন ভয়াবহ কাণ্ড ঘটেছে দিনাজপুর চিরিরবন্দরের বড় শ্যামনগর গোতামারী গ্রামে।
যে ৬ জনের নামে অর্থ হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগে নোটিশ এসেছে তাদের মধ্যে দুজন ভিক্ষুক, দুজন স্কুল শিক্ষক ও দুজন গৃহিনী। এদের একজন স্কুলশিক্ষিকা জান্নাতুল ফেরদৌস। তিনি জানান, গত বছরের সেপ্টেম্বরে তাদের গ্রামে একটি মোবাইল অপারেটর কোম্পানির সিম বিক্রির জন্য ৩ যুবক আসেন। অন্যদের সাথে তিনিও জাতীয় পরিচয়পত্র ও আঙ্গুলের ছাপ দিয়ে ২০ টাকায় একটি সিম কিনেন। সবমিলে সেদিন গ্রামের বেশিরভাগ নারী-পুরুষ (প্রায় ৯০ জন) ওই মোবাইল কোম্পানির সিম কেনেন। বেশিরভাগ সিম সচলও হয়। জান্নাতুল ফেরদৌসও তার সিমটি ব্যবহার করছিলেন। কিন্তু গত মাসে (জুলাই ২০২৩) তার নামে স্থানীয় থানা থেকে নোটিশ আসে প্রতারণা করে ‘বিকাশ’ একাউন্টের মাধ্যমে ৩০ হাজার টাকা নেওয়ার। এ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য শরীয়তপুরের সিআইডি তাকে সশরীরে হাজির হতে বলেছে। এমন নোটিশ হাতে পেয়ে হতভম্ব হয়ে যান তিনি।
সেই নোটিশে উল্লেখ করা হয়, তার জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে ‘বিকাশ’ একাউন্ট খুলে প্রতারণা করে টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে। কিন্তু যে সিম ব্যবহার করে ‘বিকাশ’ একাউন্ট খোলা হয়েছে সেটির মালিক আবার তারই এক প্রতিবেশী নারী। এরপর তিনি স্থানীয় ‘বিকাশ’ সেন্টারে গিয়ে সেই নম্বরটি বন্ধ করে দেন।
শুধু জান্নাতুল ফেরদৌস নন, সেদিন সিম কেনা তার মতো অন্তত ২২ জনের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগে মামলা হয়েছে। ইতিমধ্যে ৬ জনের নামে নোটিশ এসেছে। আরও ১৬ জনের নামে মামলার নোটিশ প্রস্তুত রয়েছে বলে সিআইডি জানিয়েছে।
ভুক্তভোগী জান্নাতুল ফেরদৌস ঢাকা মেইলকে বলেন, সিম কেনার সময় জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়েছিলাম। কিন্তু আমার জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে ‘বিকাশ’ একাউন্ট খোলা হয়েছিল যা আমার নামে নোটিশ আসার পর বুঝতে পেরেছি। আমার গ্রামে এমন ৬ জনের নামে নোটিশ এসেছে। এরমধ্যে দুজন ভিক্ষুকও রয়েছে।
জান্নাতুল ফেরদৌসের মতো একই নোটিশ এসেছে তার ভাসুরের স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকার নামে। আয়েশার স্বামী সিরাতুল ইসলাম ঢাকা মেইলকে বলেন, আমরা সরল বিশ্বাসে সিম তুলেছিলাম। কিন্তু এখন দেখি আমার নামে আরো সিম তোলা হয়েছে। শুধু তাই নয়, আমার নামে প্রতারকরা ‘বিকাশ’ ও ‘নগদ’ একাউন্টও খুলেছে।
আয়েশা জানান, তারা স্বামী-স্ত্রী দুটি সিম কিনেছিলেন। সেই সিম দুটি ব্যবহার করে ‘বিকাশ’ একাউন্ট খুলে প্রতারণা করেছে প্রতারক চক্র। আর নোটিশ এসেছে তাদের দুজনের নামে।
ইতিমধ্যে অবশ্য যে ৬ জনের যেসব সিম ব্যবহার করে ‘বিকাশ’, ‘রকেট’ ও ‘নগদ’ একাউন্ট খোলা হয়েছিল সেগুলো তারা স্থানীয় সংশ্লিষ্ট কাস্টমার কেয়ার সেন্টারে গিয়ে বন্ধ করে দিয়েছেন। এরপর বিষয়টি স্থানীয় থানা পুলিশকেও অবগত করেছেন। এ ঘটনায় চলতি মাসের শুরুতে সেই গ্রামের অন্তত ৬০ জন থানায় জিডি (সাধারণ ডায়েরি) করতে যান।
গোতামারী গ্রামের যারা ওই যুবকদের কাছ থেকে সিম কিনেছিলেন তার সবাই একটি করে সিম কেনেন। কিন্তু প্রতারণার নোটিশ পাওয়ার পর বেশিরভাগ ব্যবহারকারী খোঁজ নিয়ে জেনেছেন, তাদের অনেকের নামে ২ থেকে ৪টি সিম নেওয়া হয়েছে। অথচ বিষয়টি এতদিন তারা জানতেন না। ছয় নামের নামে প্রতারণার নোটিশ আসার পর তারা যাচাই করে এমন তথ্য পেয়েছেন। এরপর সংশ্লিষ্ট কাস্টমার কেয়ার সেন্টারে গিয়ে সচল সিমগুলো বন্ধ করেছেন। কিন্তু তাদের প্রশ্ন, তাদের অজান্তে কিভাবে বাড়তি সিম কেনা ও সচল করা হলো?
চিরিরবন্দরের বড় শ্যামনগর গোতামারী গ্রামের মোতালেব হোসেন। তিনি আগে থেকে বিভিন্ন কোম্পানির তিনটি সিম ব্যবহার করেন। তিনিও সেদিন সবার সাথে সিম কেনার জন্য জাতীয় পরিচয়পত্র, আঙল ও চোখের ছাপ দিয়েছিলেন। কিন্তু তাকে কোনো সিম দেয়নি প্রতারক চক্র। চলতি মাসে তিনি দিনাজপুরে সেই মোবাইল কোম্পানির কাস্টমার কেয়ারে যান এবং জানতে পারেন তার নামে আরো ৪টি ‘রবি’ সিম তোলা হয়েছে। এরপর তিনি সেই চারটি সিম বন্ধ করে দেন।
ভুক্তভোগী গৃহিনী আরমিনা বেগম জানান, তিনিও সেদিন অন্যদের সাথে যাবতীয় তথ্য দেন। কিন্তু তাকে একটি সিম দেওয়া হয়। এখন এক বছর পর এসে তিনি জানতে পারেন তার নামে আরো একটি সিম সক্রিয় আছে। এরপর তিনিও কাস্টমার কেয়ার সেন্টারে গিয়ে সেটি বন্ধ করে দেন। কিন্তু তার নামে তোলা সিম ব্যবহার করে খোলা হয়েছে ‘বিকাশ’ একাউন্টও।
তিনি ঢাকা মেইলকে বলেন, আমরা তো জানি না যে এমন হবে। তারা তো চোখের ছাপ নিল। আমরা কি জানি চোখের ছাপ নেয়? পরে তো সিমও দিল অনেককে।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, তাদের অজান্তে একাধিক সিম সচল করেছে প্রতারক চক্র। সব তথ্য নিয়ে সিম না দিয়ে পরে আবার সিম সক্রিয় করা হয়েছে। যা সিম কোম্পানির লোকজন ছাড়া কোনোভাবে সম্ভব নয়। প্রতারণার বিষয়টি জানার পর গ্রামবাসী একযোগে দিনাজপুর শহরে সেই মোবাইল সিম কোম্পানির কাস্টমার কেয়ার সেন্টারে গিয়ে জানতে পারেন একেকজনের নামে একটি থেকে চারটি পর্যন্ত সিম তোলা হয়েছে। আর সেসব নম্বর ব্যবহার করে তাদের অজান্তে খোলা হয়েছে ‘বিকাশ’, ‘নগদ’ ও ‘রকেট’ একাউন্ট এবং টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে মোবাইল অপারেটর ‘রবি’র দিনাজপুর কাস্টমার কেয়ারের দায়িত্বে থাকা ম্যানেজার আলম সিদ্দিক ভূঁইয়া ঢাকা মেইলকে বলেন, হ্যাঁ, অনেকে তো আসে। চিরিরবন্দর এলাকা থেকে একজন সরকারি চাকুরিজীবী এসেছিলেন। তার কাছ থেকে বিষয়টি জেনেছি। তবে সেখানে কারা সিম বিক্রির জন্য গিয়েছিল তা বলতে পারব না।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, একজন কাস্টমার যেমন ফিঙ্গার দিয়ে সিম পাওয়ার অধিকার আছে, তেমনি তার সেই সিম বন্ধ করারও অধিকার আছে। একজনের নামে একাধিক সিম রেজিস্ট্রেশন করা হয়েছে এ বিষয়টি প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, এটি আমার জানা নেই।
অন্যদিকে রবি আজিয়াটা কোম্পানি লি. এর মিডিয়া বিভাগের দায়িত্বে থাকা আশরাফ ঢাকা মেইলকে বলেন, এর সাথে আমাদের কোনো সম্পর্ক নাই। আমরা এ বিষয়ে কি বলব। আমাদের তো কিছু বলার কিছু নাই। কারণ কেউ যদি প্রতারণা করে তবে দায় সেই ব্যক্তির। তাকে ধরার দায়িত্ব পুলিশের। তিনি দাবি করেন, আমাদের এখানে জিরো টলারেন্স। কেউ এমন কাজ করতে পারবে না।
ফিঙ্গার প্রিন্ট ও চোখের আইরিশ নিয়ে একাধিক সিম সচল করা হয়েছে— গ্রামবাসীর এমন দাবির বিষয়ে তিনি বলেন, ওই গ্রামবাসীকে কারা দুই তিনটি করে সিম রেজিস্ট্রেশন করালো, সেটা তো আমাদের সিস্টেমে সম্ভব না। আর কেউ যদি অন্যভাবে এই কাজ করে থাকে তবে সেটার দায়দায়িত্ব তো আমাদের না। যখন একজন কাস্টমার বলবে তার মালিকানায় এই সিম নাই তখন সেটা সাথে সাথে ডি-রেজিস্ট্রার করা হয়। সিম নিষ্ক্রিয় করতে যা করা লাগে তা তো আমরা করে দিয়েছি। এর বাইরে যা হয়েছে তার সাথে আমাদের কোনো সম্পর্ক নাই।
সোমবার দুপুরে এসব বক্তব্য দেওয়ার পর এ বিষয়ে লিখিত বক্তব্য পাঠাতে চাইলেও আর কোনো বক্তব্য তিনি পাঠাননি। পরে রাতে বিষয়টি জানতে তার হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে ক্ষুদে বার্তা পাঠানো হলেও তিনি কোনো জবাব দেননি।
এদিকে রবির সংশ্লিষ্টদের দাবি, কোনো বায়োমেট্রিক ডিভাইসে যদি একটি সিম রেজিস্ট্রেশন হয় (এক ব্যক্তির ফিঙ্গার প্রিন্ট দিয়ে), এরপর তিন ঘণ্টা অতিবাহিত না হলে ওই ডিভাইসে নতুন করে আবার তার ফিঙ্গার প্রিন্ট নিয়ে সিম রেজিস্ট্রেশন করা যায় না। সিস্টেম কাজ করবে না।
যেসব প্রশ্নের উত্তর মিলছে না
তাহলে কিভাবে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির অজ্ঞাতসারে একাধিক সিম চালু হলো। কিংবা সিম বিক্রি করতে যারা গিয়েছিল তারা কারা। কোনো কোম্পানি কিংবা ওই কোম্পানির কাস্টমার কেয়ার সেন্টারের প্রতিনিধি না হলে কি ফিঙ্গার প্রিন্ট ও আইরিশের ছবি নেওয়া যায়? ফিঙ্গার প্রিন্ট ও আইরিশের ছবি নেওয়ার যন্ত্র ওই যুবকরা কোথায় পেল? এছাড়া ‘সিম’ কিনতে আইরিশের ছবি লাগার কথা না। তাহলে ওই যুবকরা কেন আইরিশের ছবি নিল?
বৃদ্ধ ভিক্ষুকও রক্ষা পায়নি!
এ গ্রামের ৭০ বছরের বৃদ্ধা সাহেদা বেগম। নেই স্বামী-সন্তান। ভিক্ষা করে জীবন চালান। হতদরিদ্র এই নারীরও আঙুল ও চোখের ছাপ নেয় প্রতারক চক্র। কিন্তু তাকেও কোনো সিম দেওয়া হয়নি। তার অজ্ঞাতে তার জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে সিম খুলে বিকাশে প্রতারণা করে অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে প্রতারকরা।
এলাকাবাসী জানিয়েছে, সম্প্রতি বৃদ্ধা সাহেদা এই হয়রানি থেকে রক্ষা পেতে শরীয়তপুরেও গিয়েছিলেন। পরে তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা সাহেদার প্রতারক নন বিষয়টি বুঝতে পেরে বাদীর সাথে কথা বলে বিষয়টি সমাধান করেছেন।
এ ব্যাপারে উপজেলার ৬নং অমরপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইকবাল কাজী ঢাকা মেইলকে বলেন, ওই বৃদ্ধা নারীর নামে নোটিশ এসেছিল। পরে আমরা সবাই টাকা তুলে তাকে শরীয়তপুরে পাঠাই। তদন্ত কর্মকর্তা বিষয়টি মানবিকভাবে নিয়ে তাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন।
অনুসন্ধানে যা জানা গেছে
গত বছরের সেপ্টেম্বরে ওই গ্রামে যে তিন যুবক সিম বিক্রির জন্য যান তারা নিজেদের রবি কোম্পানির কর্মী পরিচয় দেন। তাদের গায়ে রবি কোম্পানির লোগো সম্বলিত টি-শার্টও ছিল বলে জানিয়েছে গ্রামবাসী। তবে গ্রামবাসী দিনাজপুরে রবির কাস্টমার কেয়ারে গেলে তাদেরকে জানানো হয়েছে, ওই গ্রামে তাদের লোকজন কখনো সিম বিক্রির জন্য যায়নি।
ছয় ব্যক্তির নামে প্রতারণার যে নোটিশ এসেছে তাতে উল্লেখ করা হয়েছে— শরীয়তপুর ও ফরিদপুরের কোনো এক ব্যক্তির স্বজন প্রবাসে থাকেন। তিনি নিয়মিত সেই ব্যক্তির ইমো নাম্বারে কথা বলেন। প্রতারক চক্রের সদস্যরা প্রবাসে থাকা ব্যক্তির কণ্ঠ নকল করে বিপদে পড়েছে জানিয়ে বিকাশে টাকা নিয়েছে। পরে ভুক্তভোগী বুঝতে পারেন তিনি প্রতারিত হয়েছেন। এসব ঘটনায় অধিকাংশ মামলা আদালতে হয়েছে। আদালত মামলাগুলো তদন্ত করার দায়িত্ব সেই জেলার সিআইডিকে দিয়েছে। সিআইডি তদন্ত করতে গিয়ে চিরিরবন্দর এলাকার একাধিক নারীর জাতীয় পরিচয়পত্র ও সিম দিয়ে ‘বিকাশ’ একাউন্ট খুলে এসব প্রতারণা হয়েছে বলে তথ্য পায়। পরে তদন্ত সংশ্লিষ্টরা খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, যাদের নামে নোটিশ পাঠানো হয়েছে তারাও প্রতারণার শিকার।
জানা গেছে, বেশিরভাগ মামলায় বাদী ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন। তবে এসব মামলায় এখনো প্রতারক চক্রের কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি সিআইডি।
এই প্রতারক চক্রের সাথে মামলার বাদীরা জড়িত কিনা সেটাও খতিয়ে দেখছেন তদন্ত সংশ্লিষ্টরা।
সূত্র আরও জানিয়েছে, চক্রটি আগে ফরিদপুর ও গাইবান্ধা কেন্দ্রিক ছিল৷ তারা এখন অনেকটা নিশ্চুপ। রাজশাহীর একটি উপজেলায় বসে চক্রটি এ ধরনের প্রতারণা করছে। এখন পর্যন্ত যেসব সিমে বিকাশ খুলে প্রতারণা করা হয়েছে তার বেশিরভাগ ‘রবি’র বলে জানিয়েছে সিআইডির তদন্ত সংশ্লিষ্টরা।
পুলিশ ও তদন্ত সংশ্লিষ্টরা যা বলছেন বড় শ্যামনগর গোতাগাড়ী গ্রামের বিভিন্ন নারী ও পুরুষের নামে আসা বেশিরভাগ নোটিশ বহন করেছেন চিরিরবন্দর থানার এএসআই সুলতান বাদশা। তিনি ঢাকা মেইলকে বলেন, যারা এমন নোটিশ পেয়েছেন তারা তো অবাক। তাদের কেউ গৃহিনী, কেউ স্কুল শিক্ষিকা আবার কেউ পড়াশুনাই জানে না।
এ ঘটনায় করা বেশিরভাগ মামলার তদন্তকারী সিআইডির শরীয়তপুর জেলার এসআই মুজিবুর রহমান ঢাকা মেইলকে বলেন, ওই গ্রামের লোকজনের মধ্যে কয়েকজন আছেন যারা এ চক্রের সাথে জড়িত। তাদের হাত ধরে চক্রের সদস্যরা সেখানে সিম বিক্রি করতে গিয়েছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে। তদন্তে কেউ যাতে হয়রানি না হয় সেই বিষয়টি অবশ্যই মাথায় রেখেছি। তবে একই গ্রামে এত ব্যক্তির নামে নোটিশ যাওয়াতে বিষয়টি সন্দেহ হয়েছিল। আবার এই প্রতারণার সাথে সিম বিক্রিকারী কোম্পানির লোকজনও জড়িত থাকতে পারে।