বাংলাদেশের প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা রাশিয়ার জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করতে দেশটি সফরে যাচ্ছেন । আগামী ১৯ সেপ্টেম্বর এ নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে। রাশিয়ার জাতীয় সংসদ ফেডারেল অ্যাসেম্বলির নিম্নকক্ষ ‘স্টেট দুমা’র ভোট পর্যবেক্ষণ করতে দেশটিতে পাঁচদিন থাকবেন তিনি।
রাশিয়ার স্টেট দুমা নির্বাচনেও কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত সিস্টেমে (অপটিক্যাল স্ক্যান ভোটিং মেশিন) ভোট নেওয়া হয়। সেখানে বাংলাদেশের মতো ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার করা হয় না।
১৯৯৫ সালে প্রথম নিম্নকক্ষের নির্বাচনে অপটিক্যাল স্ক্যান ভোটিং মেশিনে ভোট নেওয়া হয়। ১৯৯৬ সালে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনেও এ যন্ত্র ব্যবহার করা হয়েছিল। ২০১৮ সালের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনেও ভোটিং মেশিন ব্যবহার করেছে রাশিয়া, তবে তা ৯ শতাংশ ভোট কেন্দ্রে। বাংলাদেশ অবশ্য আগামী সংসদ নির্বাচনের অধিকাংশ কেন্দ্রে ইভিএমে ভোটগ্রহণ করার পরিকল্পনা করছে।
সিইসি কে এম নূরুল হুদা ১৬ সেপ্টেম্বর দেশ ত্যাগ করবেন। ফিরবেন ২১ সেপ্টেম্বর। ১৭ থেকে ১৯ সেপ্টেম্বর ভোট পর্যবেক্ষণে সময় কাটাবেন। এরপর অন্যান্য কাজ সম্পন্ন করবেন তিনি। বৃহস্পতিবার (১৯ আগস্ট) চিফ অ্যাকউন্টস অ্যান্ড ফাইন্যান্স অফিসারকে এ সংক্রান্ত একটি চিঠি পাঠিয়েছেন নির্বাচন কমিশনের (ইসি) উপ-সচিব মো. শাহ আলম।
এতে বলা হয়েছে- সফরে সিইসির সঙ্গে পিএস মো. একেএম মাজহারুল ইসলাম থাকবেন। এটি একটি অফিসিয়াল সফর। এ সময় তারা সব ভাতা পাবেন দেশীয় মুদ্রায়। থাকা-খাওয়া এবং স্থানীয় যাতায়াত ব্যয়ভার বহন করবে রাশিয়ার নির্বাচন কমিশন। তবে, বিমান ভাড়া বহন করবে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন।
সর্বশেষ স্টেট দুমা-এর নির্বাচন হয়েছিল ২০১৬ সালে। স্টেট দুমা-এর মাধ্যমেই রাশিয়ার জনগণ তাদের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটান। এখান থেকেই নির্বাচিত হন প্রধানমন্ত্রী। তাদের ভোটেই ক্ষমতাচ্যুত হন রাশিয়ার রাষ্ট্রপতি। সংসদের এ কক্ষেই দেশটির আইন প্রণয়ন হয়।
বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন বিভিন্ন দেশের নির্বাচন যেমন পর্যবেক্ষণ করে থাকে, তেমনি বাংলাদেশের নির্বাচন পর্যবেক্ষণেও বিদেশিদের আমন্ত্রণ জানানো হয়। তবে বাংলাদেশ সার্কের বাইরে কোনো দেশের নির্বাচন কমিশনকে কখনও আমন্ত্রণ জানায়নি।
এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের যুগ্মসচিব এসএম আসাদুজ্জামান বলেন, এটি অনেকটা সৌজন্যের মতো। আমরা সার্কভুক্ত দেশের নির্বাচন কমিশনকে আমন্ত্রণ জানিয়ে থাকি। আবার অন্যরাও আমাদের আমন্ত্রণ জানায়। এতে নির্বাচনে ভোটার এডুকেশন, কালচার ইত্যাদি সম্পর্কে জানা যায়। অনেক সময় এগুলোর বাস্তবায়নও করা হয়।
ইসি কর্মকর্তারা বলছেন, ভোট পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে নতুন নতুন অনেক কিছু জানার সুযোগ হয়। যেগুলো বাস্তবায়ন করে এদেশের ভোটিং সিস্টেমেও ভালো ফল পাওয়া গেছে।