পুলিশ চারজনকে আটক করেছে দিনাজপুরের চিরিরবন্দরে মা ও ছেলেকে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায় চেষ্টার অভিযোগে। আটককৃতদের মধ্যে পুলিশের রংপুর সিআইডির একজন এএসপিসহ তিন সদস্য রয়েছে। মঙ্গলবার বিকেলে তাদের আটক করা হয়। অপহৃত মা ও ছেলেকে উদ্ধার করা হয়।
চারজনকে আটকের বিষয়টি স্বীকার করেছেন চিরিরবন্দর থানার ওসি সুব্রত কুমার সরকার ও উদ্ধার অভিযানে থাকা চিরিরবন্দর থানার এসআই তাজুল ইসলাম। তবে আটককৃতদের পরিচয় নিশ্চিত করেননি তারা। আটককৃতরা হলেন- রংপুর সিআইডির এএসপি সারোয়ার কবীর, এএসআই হাসিনুর রহমান, কনস্টেবল আহসানুল হক ফারুক ও একজন মাইক্রোবাস চালক। আর যাদের অপহরণ করা হয়েছিল তারা হলেন-দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলার লুৎফর রহমানের স্ত্রী জহুরা খাতুন (৪২) ও তার ছেলে জাহাঙ্গীর (২৫)।
জাহাঙ্গীরের খালাতো ভাই শামসুল ইসলাম মানিক জানান, সোমবার রাত ৮টার দিকে একটি মাইক্রোবাসে তার খালু লুৎফর রহমানের বাড়িতে যায় একদল মানুষ। এ সময় তারা সিআইডির পরিচয়ে লুৎফর রহমানকে খুঁজতে থাকে। লুৎফর রহমানকে না পেয়ে লুৎফর রহমানের স্ত্রী জহুরা খাতুন ও তার ছেলে জাহাঙ্গীরকে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যায় তারা। এরপর তারা ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। এ ঘটনায় চিরিরবন্দর থানা পুলিশের কাছে যান ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা। পরের দিন মঙ্গলবার তাদের সঙ্গে ৮ লাখ টাকা নিয়ে দেখা করতে চান ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা। তাদের টাকা নিয়ে দশমাইলের কাছে আসতে বলেন অপহরণকারীরা। মঙ্গলবার বিকেলে কোতোয়ালি পুলিশের সহযোগিতা নিয়ে চিরিরবন্দর থানা পুলিশ দশমাইল থেকে চারজনকে আটক করে এবং অপহৃত মা ও ছেলেকে উদ্ধার করে। মঙ্গলবার রাতেই তাদের দিনাজপুর পুলিশ সুপার কার্যালয়ে নিয়ে আসা হয়।
এ ব্যাপারে রংপুর সিআইডির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আতাউর রহমান জানান, তিনি শুনেছেন যে দিনাজপুরে সিআইডির তিন সদস্য আটক হয়েছে। এদের মধ্যে রংপুর সিআইডির এএসপি সারোয়ার কবীর, এএসআই হাসিনুর রহমান ও কনস্টেবল আহসান-উল হক ফারুক। তিনি বলেন, এএসআই হাসিনুর রহমান ও কনস্টেবল আহসান-উল ফারুক ছুটিতে ছিলেন এবং এএসপি সারোয়ার কবীর ডিউটিতে ছিলেন। তবে এএসপি সারোয়ার কবীর কাউকে না জানিয়েই দিনাজপুরে গেছেন। তারা যদি দিনাজপুরে গিয়ে অপহরণ বা কোন বেআইনি কাজ করে থাকে, তাহলে তদন্ত সাপেক্ষেই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এদিকে এ ব্যাপারে দিনাজপুরের পুলিশ সুপার মো. আনোয়ার হোসেনকে মোবাইল ফোনে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, জরুরি মিটিং-এ ব্যস্ত আছি।