টানা ছয় মাসেরও বেশি সময় ধরে ইউক্রেনে যুদ্ধ করছে রাশিয়া। তবে পূর্ব ইউরোপের এই দেশটিতে কার্যত রাশিয়ার বিরুদ্ধে লড়ছে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো। আর এবার পূর্ব ও পশ্চিমের মধ্যে সার্বিয়ায় প্রক্সি যুদ্ধ চলছে বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট আলেকসান্ডার ভুসিক।
সোমবার (২৯ আগস্ট) তিনি এই মন্তব্য করেন বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দক্ষিণ-পূর্ব ইউরোপের এই দেশটির ইউরোপীয় ইউনিয়নে যোগদানের উচ্চাকাঙ্ক্ষা রয়েছে। তবে একইসঙ্গে রাশিয়া এবং চীনের সাথেও সম্পর্ক রাখতে চায় সার্বিয়া।
গত রোববার সার্বিয়ার রাজধানী বেলগ্রেডে সমকামীদের সমাবেশের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেন হাজার হাজার বিক্ষোভকারী। বিক্ষোভের সময় তারা রাশিয়ার পতাকা এবং রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের পোস্টার বহন করেন। মূলত সমকামী-বিরোধী সেই বিক্ষোভের একদিন পর প্রেসিডেন্ট আলেকসান্ডার ভুসিকের এই মন্তব্য সামনে এলো।
সোমবার সার্বিয়ার প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘আমি বলতে পারি না যে এটি (বিক্ষোভ) কোনো প্রক্সি আক্রমণ ছিল কিনা। কারণ সেখানে অনেক সাধারণ মানুষ ছিলেন … তবে সার্বিয়ায় প্রক্সি যুদ্ধ হয় কি না … (এটি বলতে গেলে স্বীকার করতে হবে) হ্যা, আছে। এতে কোনো সন্দেহ নেই এবং সেই প্রক্সি যুদ্ধ হচ্ছে পূর্ব এবং পশ্চিমের মধ্যে।’
আলজাজিরা বলছে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন হচ্ছে সার্বিয়ার একক-বৃহৎ বাণিজ্য অংশীদার এবং বিনিয়োগকারী। আর তাই দক্ষিণ-পূর্ব ইউরোপের এই দেশটি ২০১২ সাল থেকে ইউরোপীয় ইউনিয়নে যোগদানের জন্য প্রার্থী হিসেবে রয়েছে। এই দেশটি সামরিকভাবে নিরপেক্ষ হলেও ন্যাটোর সাথে সম্পর্ক বজায় রাখে এবং ন্যাটোর সদস্য রাষ্ট্র থেকে অস্ত্রও কিনে থাকে।
অন্যদিকে বলকান দেশ হিসেবে অন্যদের মতো সার্বিয়াও প্রায় সম্পূর্ণরূপে রাশিয়ান গ্যাসের ওপর নির্ভরশীল এবং রাশিয়ার কাছ থেকে অস্ত্রও কিনে থাকে তারা। এছাড়া চীন এই দেশটির মূল বিনিয়োগকারী দেশগুলোর একটি। প্রধানত খনি এবং অবকাঠামোখাতে সার্বিয়ায় বিনিয়োগ করে থাকে চীন।
যদিও সার্বিয়া জাতিসংঘে রাশিয়ার ইউক্রেনে আগ্রাসনের নিন্দা করেছে, কিন্তু মস্কোর বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞায় যোগ দিতে অস্বীকার করেছে দেশটি। এছাড়া বেলগ্রেডের সাবেক দক্ষিণাঞ্চলীয় প্রদেশ কসোভোর স্বাধীনতার বিরুদ্ধে সার্বিয়ার বিরোধিতাকে সমর্থন করে বেইজিং এবং মস্কো।
প্রেসিডেন্ট আলেকসান্ডার ভুসিক একজন সাবেক জাতীয়তাবাদী এবং পরে ইউরোপ-পন্থি নীতি গ্রহণ করেন। তার ভাষায়, ‘(পূর্ব ও পশ্চিমের প্রক্সি যুদ্ধের মধ্যে) যতটা সম্ভব কম ক্ষত ও আঘাতের চিহ্ন নিয়ে আমরা টিকে থাকার চেষ্টা করছি … ।’