বর্তমান সরকারকে ইঙ্গিত করে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আবদুর রব বলেছেন, ভদ্রভাবে না গেলে পালাতেও পারবে না, সামনে মহাবিপদ আসছে। সবাইকে সঙ্গে নিয়ে বৃহত্তর আন্দোলনের মাধ্যমে স্বৈরাচারী শাসনের পতন করা হবে। তারপর রাষ্ট্র পুনর্গঠন করা হবে। ভদ্রভাবে আপনারা (আওয়ামী লীগ) ক্ষমতা থেকে যদি না যান তাহলে পালাতেও পারবেন না। যাদের খুন করেছেন, গুম করেছেন তাদের শুভাকাঙ্ক্ষীরা আপনাদের পালাতেও দেবে না।
বুধবার (২ নভেম্বর) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম হলে জেএসডির ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত ‘স্বৈরাচারের পতন ও রাষ্ট্র রূপান্তরের গণজাগরণ গড়ে তুলুন’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
রব বলেন, জনগণের মুক্তি হয়নি, মানুষ স্বাধীনতা পায়নি। সাধারণ মানুষের রক্তের বিনিময়ে আমরা শুধু ভৌগোলিক একটি স্বাধীন জায়গা পেয়েছি কিন্তু জনগণের মুক্তি হয়নি।
আওয়ামী লীগের সমালোচনা করে রব বলেন, সামাজিক সংগঠন আর রাজনৈতিক সংগঠন জনগণের জন্য কমিটমেন্ট। সেখানে আজকের এ সময়ে আসামিকে না পেলে তার পরিবারের সদস্যদের ধরে নিয়ে যাচ্ছে। যে ছেলে রাজনীতি করে তাকে না পেয়ে তার দুধের শিশুসহ স্ত্রীকে জেলখানায় ধরে নিয়ে আসছে। এমন সব দুঃখের কাহিনি শুনলে গাছের পাতা নড়ে পড়ে যাবে।
তিনি বলেন, সরকার ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে আজ রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক অবস্থার অবনতি ঘটিয়েছে। দেশকে নৈরাজ্যকর অবস্থায় ফেলে দিয়েছে। তিন মাস পর টাকা দিলেও খাওয়া পাবেন না, শিশুর দুধ কিনতে পারবেন না। তাই অবৈধ সরকারকে বিদায় করা ছাড়া অর্থনৈতিক বিপর্যয় ও অপশাসন থেকে মুক্তিলাভ করা যাবে না। এ জন্য সরকারকে বিদায় করতে গণঅভ্যুত্থান ছাড়া বিকল্প নেই। তোমরা যা করেছ তাতে জাতি তোমাদের ক্ষমা করবে না।
সরকার অর্থনৈতিকভাবে অচল হয়ে গেছে উল্লেখ করে রব বলেন, আজকের এই অবৈধ সরকার অর্থনৈতিকভাবে বিপর্যস্ত। তিন মাস পর চাল কিনতে পারবেন না। আমি ২১ সালের মে মাসে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে ভার্চুয়ালি বলেছিলাম, ভিয়েতনাম ও রাশিয়া থেকে চাল কেনেন। জনগণকে খাদ্যনিরাপত্তা দেন। এরপর টাকা দিলেও খাদ্য কিনতে পাওয়া যাবে না। এ রকম ৭৪ সালের দুর্ভিক্ষের সময় টাকা দিয়েও খাদ্য পাওয়া যায়নি।
তিনি বলেন, আজ এ অবৈধ সরকারের বিরুদ্ধে জনগণের উত্থান এসেছে। শ্রমজীবী-কর্মজীবী মানুষসহ জনগণ পাটি-চিড়া-মুড়ি নিয়ে রাস্তায় নেমেছে। তারা কোন দলের কর্মী তা বড় কথা নয়। আমরা স্বৈরাচারের বদলে আরেক স্বৈরাচার চাই না। এক দলের পরিবর্তে আরেক দলীয় শাসন চাই না। তাই এই মুহূর্তে দরকার জনগণের সরকার।
রিজার্ভের বিষয়ে সরকার জাতির কাছে মিথ্যা বলছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আইএমএফ সত্য তুলে ধরেছে। যে পরিমাণ বিদেশি মুদ্রা রিজার্ভ আছে তা দিয়ে আগামী তিন মাসের পর খাদ্য কেনা যাবে না।
আলোচনায় আরও বক্তব্য রাখেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী অ্যাডভোকেট হাসনাত কাইয়ুম, গণঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব ও ডাকসু’র সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর প্রমুখ।