মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলায় আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের পূর্ব বিরোধের জেরে তুহিন (২২) নামের এক যুবক প্রাণ হারিয়েছেন।
মঙ্গলবার (১৪ মার্চ) সকাল ৮টার দিকে ঢাকার একটি প্রাইভেট হাসপাতালে চিকিৎধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
সোমবার টঙ্গীবাড়ীর উপজেলার পুরাবাজার এলাকায় থেকে তুহিনকে তুলে নিয়ে বেধড়ক পেটান কল্পনা পক্ষের লোকজন।
নিহত তুহিন সদর উপজেলার মোল্লাকান্দি ইউনিয়নের বড় মোল্লাকান্দি এলাকার আলমগীর সরকারের ছেলে। সে মোল্লাকান্দি বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান সমর্থক।
মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক কামাল প্রধান বলেন, রাত ৯ টার দিকে গুরুতর আহত অবস্থায় তুহিনকে হাসপাতাল আনা হয়। তার শরীরে বেধম মারপিট ও মাথার পেছনে জখমের চিহ্ন ছিল। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক দেখে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
স্বজন ও স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, সদর উপজেলার মোল্লাকান্দি ইউনিয়নে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সদর উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সম্পাদক ও সাবেক চেয়ারম্যান মহসিনা হক কল্পনা ও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান রিপন হোসেন পাটোয়ারীর মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছে।
সর্বশেষ ২৪ জানুয়ারি কল্পনা পক্ষের ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি জিয়া সরদারকে (৪৫) তুলে নিয়ে কুপিয়ে এবং গুলি করে আহত করার অভিযোগ উঠে রিপন হোসেন পাটোয়ারির ছোট ভাই শিপন পাটোয়ারির বিরুদ্ধে।
ওই ঘটনার জেরে সোমবার টঙ্গীবাড়ীর পুরা ডিসি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী শেষে সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে যাওয়ার পথে পুরা বাজার এলাকা থেকে তুলে নিয়ে খোলাবাগানে তুহিনকে বেধড়ক পেটান কল্পনা পক্ষের লোকজন।
অভিযোগ অস্বীকার করে মহসিনা হক কল্পনা বলেন, ওই যুবক উগ্র ছিল, সে অস্ত্র নিয়ে চলত। শুনেছি কনসার্টে গিয়ে ঝামেলা করেছে। তখন কংশপুরা এলাকার কিছু ছেলে মারধর করেছে। এখানে পূর্ব বিরোধের কোনো বিষয় নেই। প্রকৃত ঘটনা উদঘাটনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে দাবি জানাই।
ইউপি চেয়ারম্যান রিপন হোসেন অভিযোগ করে বলেন, তুহিন আমার পক্ষের হওয়ায় কল্পনার লোকজন ওর উপর ক্ষিপ্ত ছিল। সোমবার তুহিনকে ধরে নিয়ে কল্পনা পক্ষের বাবু কাজী, জিয়া সরকার, সৈকত দেওয়ান, আজহার মোল্লাসহ সন্ত্রাসীরা তুলে নিয়ে পিটিয়ে আধমরা করে রেখে যায়। হাসপাতালে আজ ওর মৃত্যু হয়েছে।
টঙ্গীবাড়ি থানার ওসি রাজিব খান বলেন, রাজনৈতিক পূর্ব বিরোধকে কেন্দ্র করে একপক্ষের মারধরে যুবকের মৃত্যুর খবর শুনেছি। ময়নাতদন্ত শেষে ও মামলার ভিত্তিতে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ঘটনায় জড়িতরা অধিকাংশ সদর উপজেলার। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।