কুষ্টিয়া দৌলতপুরে সাপের কামড়ে আহত সোনিয়া খাতুন(১৪) নামে ৭ম শ্রেনীর এক স্কুলছাত্রীর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয়েছে। শনিবার (০২ অক্টোবর) রাত আড়াইটার দিকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাকে মৃত ঘোষনা করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিতে মুঠোফোনে জানতে চাইলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কিছুই জানেন না বলে জানান। পুনরায় অনুরোধ করলে ২৫০শয্যা বিশিষ্ট কুষ্টিয়া জেনারেল হ্সাপতালের ভারপ্রাপ্ত আবাসিক চিকিৎসক ডা: আশরাফুল আলম এবং তত্ত¡াবধায়ক ডা: মো: আব্দুল মোমেন অভিন্ন বাক্যে বলেন,“এমুহুর্তে এবিষয়ে কিছুই জানিনা, খোঁজ নিয়ে বলতে পারব” কথাটি বলেই ফোন কেটে দেন পরে কল রিসিভের অনুরোধ করে খুদে বার্তা পাঠিয়ে একাধিকবার কল করলেও ওই চিকিৎসকদ্বয় কল রিসিভ করেন নি।
বিষয়টি নিয়ে কুষ্টিয়া সিভিল সার্জন ডা: এইচ এম আনোয়ারুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিধি মতে হাসপাতালে রোগী ভর্তি, চিকিৎসা ও মৃত্যু সংক্রান্ত বিষয় অবশ্যই ঘটনার সময়ই তাৎক্ষনিক ভাবে আবাসিক মেডিকেল অফিসারের জানার কথা। তিনি কেন এমনটি বললেন তা আমার বোধগম্য নয়। আমি বিষয়টি উনাদের কাছে শুনে দেখবো।
তবে হাসাপাতালের মর্গে নিয়োজিত লাশকাটা সহকারী লক্ষণ লালের দেয়া তথ্যে ও ওয়ার্ড মাষ্টারের লাশ রেজিষ্টার রেকর্ড সূত্রে সাপে কাটা রোগীর মৃত্যু বিষয়ের সত্যতা রয়েছে। মৃত সোনিয়া উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ দাড়েরপাড়া গ্রামের বাসিন্দা গ্রাম পুলিশ জালাল উদ্দিনের কন্যা এবং স্থানীয় ডিজিএম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, মাত্র ৪০ দিন পূর্বে সোনিয়ার মা রোজিনা খাতুন হৃদরোগ জনিত কারণে মারা যান। নিহতের বাবা জালাল উদ্দিন জানান, শুক্রবার রাতের খাবার খেয়ে নানির সঙ্গে ঘুমিয়ে ছিল সোনিয়া। ঘুমন্ত অবস্থায় মধ্যরাতে তাকে সাপে কামড় দেয়। যন্ত্রণায় ছটফট করতে থাকলে আমরা বুঝতে পারি তাকে সাপে কামড় দিয়েছে। পরে তাকে দ্রæত উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায় পরিবারের লোকজন। সেখানে ভর্তি হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত দুইটার দিকে সোনিয়ার মৃত্যু হয়।
জালাল উদ্দিন জানান, “হাসপাতালে ভর্তির পরে প্রায় দেড় ঘন্টা বেঁচে ছিলো সোনিয়া। এসময়ের মধ্যে তাকে কোন এন্টিভেনাম দেয় নাই ডাক্তার”। দৌলতপুর থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) শফিকুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, সংবাদ পেয়ে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতাল থেকে মৃত সোনিয়ার মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেছে পুলিশ। সাপের কামড়েই তার মৃত্যু হয়েছে কি না তা ময়না তদন্ত রিপোর্ট পেলেই বোঝা যাবে।