ওয়েস্ট ইন্ডিজে টেস্টে যতটা ভরাডুবি ঘটেছে, সাদা বলের ফরম্যাট তথা ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টিতে গত দুই সফরে ঠিক তেমন করুণ অবস্থায় পড়েনি বাংলাদেশ।
সবশেষ ২০১৮ সালের সফরে টেস্ট সিরিজে নিজেদের ইতিহাসের সর্বনিম্ন ৪৩ রানে অলআউট হয়েছিল সাকিব আল হাসানের দল। দুই টেস্টই হেরেছিল বড় ব্যবধানে। কিন্তু সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে ঠিকই সাদা বলের ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতেছিল টাইগাররা।
চার বছর পর এবারও লাল বলের টেস্ট ক্রিকেটে অভিন্ন চিত্র। দুই ম্যাচের সিরিজে ন্যুনতম প্রতিরোধ গড়তে পারেনি বাংলাদেশ। প্রথম ম্যাচ সাত উইকেটে হারার পর দ্বিতীয়টিতে মিলেছে দশ উইকেটের পরাজয়। সেই দুঃসহ স্মৃতি ভুলিয়ে দেওয়া সুযোগ থাকছে আজ থেকে শুরু হতে যাওয়া টি-টোয়েন্টি সিরিজে।
ডমিনিকার উইন্ডসর পার্কে বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ১১টায় শুরু হবে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ। এই মাঠে ২০০৯ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ জিতেছিল বাংলাদেশ। সেটি ছিল মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের টেস্ট অভিষেকের সফর।
সময়ের পরিক্রমায় এবার বাংলাদেশ দলের টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ। তার অধীনেই এবার ডমিনিকায় টি-টোয়েন্টি সিরিজে লড়বে টাইগাররা। আগের সুখস্মৃতির কথা মনে করে ম্যাচের আগেরদিন সংবাদ সম্মেলনে মাহমুদউল্লাহ বলেন, ‘ভালো স্মৃতি সবসময় চিন্তা করতে ভালো লাগে।’
তিনি আরও যোগ করেন, ‘আজকে আমি আর সাকিব যখন বাসে আসছিলাম, ঐ সময়ের কথাগুলো বলছিলাম। আমি যখন ড্রেসিংরুমে ঢুকছিলাম সাকিবকে জিজ্ঞেস করছিলাম, এখানে এভাবে খেললাম, এভাবে জিতেছিলাম। তো এটা সবসময় একটা ভালো অনুভূতি দেয় আপনাকে।’
টেস্টে ভরাডুবি হলেও এখন ফরম্যাট ভিন্ন হওয়ায় আশাবাদী টাইগার অধিনায়ক, ‘দেখুন এটা আলাদা বলের খেলা। সাদা ও লাল বল আলাদা। লাল বলের জিনিসগুলো এক পাশে সরিয়ে রেখে চেষ্টা করছি টি-টোয়েন্টিগুলোর দিকে নজর দিতে।’
এসময় আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রস্তুতির প্রসঙ্গ এনে তিনি বলেন, ‘একই সঙ্গে বিশ্বকাপের জন্যও প্রস্তুতি নিতে হবে। আমার মনে হয় এটা আমাদের জন্য অনেক বড় সুযোগ এই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তাদের মাটিতে খেলতে পারা। আমরা এটার দিকে তাকিয়ে আছি।’
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সবমিলিয়ে ১৩ টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলে পাঁচটি জিতেছে বাংলাদেশ। সবশেষ ক্যারিবীয় সফরের তিন ম্যাচের সিরিজ টাইগাররা জিতেছিল ২-১ ব্যবধানে। কিন্তু এই ফরম্যাটে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ফর্ম মোটেও আশা জাগানিয়া নয়।
গতবছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সুপার লিগ থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত দশটি কুড়ি ওভারের ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ। যেখানে জয় মাত্র একটিতে। সুপার লিগের পাঁচ ম্যাচে হারের পর ঘরের মাঠে পাকিস্তানের কাছে তিন ম্যাচ ও আফগানিস্তানের কাছেও এক ম্যাচ হেরেছে বাংলাদেশ।
তাই স্বাভাবিকভাবেই ক্যারিবীয় সফরের টেস্টের ব্যর্থতা ভুলে গিয়ে নতুনভাবে শুরু করা মোটেও সহজ হবে না বাংলাদেশের জন্য। তার ওপরে আবার রয়েছে অনুশীলনের ঘাটতি। সেইন্ট লুসিয়া থেকে ফেরিতে করে ডমিনিকায় যাওয়ার পর বৃষ্টির কারণে সেখানে অনুশীলন করতে পারেনি টাইগাররা।
অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ অবশ্য এ বিষয় নিয়ে চিন্তিত নন। তার মতে, টি-টোয়েন্টির প্রস্তুতির ব্যাপারটা অধিকতর মানসিক। দলের খেলোয়াড়রা এ চ্যালেঞ্জে উৎরে যাবেন বলে আশাবাদী তিনি, ‘আমার মনে হয় প্রস্তুতির ব্যাপারটা মাথা থেকে থেকে আসে। এটাই আমি ফিল করি।’
তিনি আরও যোগ করেন, ‘টি-টোয়েন্টিতে ম্যাচের মাঝে সময় অনেক কম। তাই আপনার কন্ডিশনের ব্যাপারে ভালো ধারণা থাকতে হবে। খেলাতেও সেটা প্রয়োগ করতে হবে। আমাদের লক্ষ্য থাকবে ইতিবাচক ও আক্রমণাত্মক। আর চ্যালেঞ্জগুলোকে উৎরে যাওয়ার চেষ্টা করা।’