সাজেকের ইতিহাসের ভয়াবহতম অগ্নিকাণ্ডে রিসোর্ট, রেস্টুরেন্ট ও দোকানের পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে স্থানীয়রা। আগুনে ঘরবাড়ি পুড়ে যাওয়ায় সাজেকের রুইলুই পাড়ার একটি স্টোন গার্ডেনে রাত কাটিয়েছে স্থানীয় লুসাই ও ত্রিপুরা জনগোষ্ঠীর মানুষ।
প্রশাসন থেকে পাওয়া সবশেষ তথ্য অনুযায়ী আগুনের ঘটনায় ৯০টির অধিক স্থাপনা ভস্মীভূত হয়েছে।
আগুনে লুসাই জনগোষ্ঠীর ১৬টি ও ত্রিপুরাদের ১৯টি বসতঘর পুড়ে যায়। সামান্য কিছু মালামাল ও আসবাবপত্র রক্ষা করতে পারলেও পুড়ে ছাই হয়ে গেছে ঘরবাড়ি। ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তায় শেষ সম্বল হারানো মানুষেরা।
স্থানীয়রা জানান, পানি সংকটের কারণে দ্রুত আগুন নেভানো যায়নি।
আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত স্থানীয়দের জরুরি খাবার ও আশ্রয় দিয়ে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন সাজেকের রিসোর্ট মালিকেরা। নিঃস্ব মানুষদের সহায়তায় সরকার ও বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহ্বান স্থানীয় জনপ্রতিনিধির। সাজেকের ইউপি সদস্য অনিত্য ত্রিপুরা বলেন, সরকারের কাছে একটা আহ্বান, সরকার যেন এগিয়ে আসে।
ফায়ার সার্ভিস বলছে, বেশিরভাগ রিসোর্ট কাঠের বাড়ি হওয়ায় বাতাসে তীব্রতায় আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। রিসোর্টে পর্যাপ্ত অগ্নিনির্বাপণ সরঞ্জাম না থাকায় আগুন নেভানো যায়নি।
খাগড়াছড়ি ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ জাকের হোসেন বলেন, প্রত্যেকটা রিসোর্ট দোকান, ঘরবাড়িতে অগ্নিনির্বাপণ সরঞ্জাম থাকে। এখানে এমন কিছু ছিল না। এ কারণে শুরুতে নির্বাপণ করা যায়নি। তাতে ছড়িয়ে পড়ে আগুন। তবে আগুন কীভাবে লেগেছে সে ব্যাপারে এখনও পরিষ্কার জানা যায়নি। ধারণা করা হচ্ছে শর্ট সার্কিট থেকে আগুন লাগতে পারে।
রাঙামাটি জেলা প্রশাসক হাবিব উল্লাহ বলেন, ওই এলাকায় আপাতত পর্যটক যেতে মানা করা হয়েছে। প্রকৃত ক্ষয়ক্ষতি তালিকা তৈরি করে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা করা হবে। সাজেক ভ্রমণে নিরুৎসাহ গতকাল (২৪ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ৮টায় রাঙামাটি জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট পাঠান মো. সাইদুজ্জামানের স্বাক্ষর করা এক বিজ্ঞপ্তিতে সাজেকে পর্যটক ভ্রমণ নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের পর পর্যটকদের নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনা করে মঙ্গলবার থেকে পরবর্তীতে নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সাজেকে পর্যটকদের ভ্রমণ নিরুৎসাহিত করা হয়েছে।