মধ্যরাতে কুড়িগ্রামে মোবাইল কোর্ট বসিয়ে সাংবাদিক নির্যাতন করে পদাবনতির সাজা পাওয়া আলোচিত কর্মকর্তা নাজিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে এবার অভিযোগ উঠেছে ঘুষ, হুমকি, নিয়ম বহির্ভূত শোকজ, সরকারি গাড়ি ব্যবহার করে মাদক সেবন ও বহনের। তিনি এখন সাতক্ষীরা পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা। তার বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন ভুক্তভোগীরা। তবে আচরণবিধির অজুহাত দিয়ে এসব বিষয়ে কথা বলতে অপারগতা জানিয়েছেন নাজিম।
২০২০ সালে মার্চের এক মধ্যরাতে মোবাইল কোর্ট বসিয়ে সাংবাদিক নির্যাতনের অপরাধে পদাবনতি হয় কুড়িগ্রামের তৎকালীন সিনিয়র সহকারী সচিব নাজিম উদ্দিনের। দুই বছরের জন্য ৬ষ্ঠ থেকে ৭ম গ্রেডে ডিমোশনের দণ্ড হয় তার। এ ঘটনায় আলোচিত নাজিম সাতক্ষীরা পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে যোগ দিয়েছেন গত জানুয়ারিতে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, ঘুষ বাণিজ্যের। আছে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের হুমকি দেয়া কিংবা, নিয়ম বহির্ভূত শোকজ ও চাকরি থেকে অব্যাহতি প্রদানের ঘটনা।
এই যেমন কাজী বিরাজ হোসেন। দৈনিক হাজিরার এই কর্মচারির অভিযোগ, চাকরি স্থায়ীকরণের কথা বলে তার কাছ থেকে ৩ লক্ষ ৪ হাজার টাকা নিয়েছেন নাজিম। সেসব লেনদেনের প্রমাণও রেখেন তিনি। কাজি বিরাজ জানাচ্ছেন, প্রায় সব লেনদেনের তথ্য আদান প্রদান হতো হোয়াটসঅ্যাপে। আর টাকা যেতো নাজিম উদ্দিনের নির্ধারিত ব্যাংক অ্যাকাউন্টেই। জানালেন, মন্ত্রণালয়ে চুক্তি করতে হবে বলে এই কর্মকর্তা বিভিন্ন সময় টাকাগুলো নিয়েছেন তার কাছ থেকে।
পৌরসভার পানি সরবরাহ শাখার ২৭ জন মাস্টাররোলের কর্মচারী একযোগে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন নাজিমের বিরুদ্ধে। তাদের অভিযোগ, অবৈধ চাকুরিচ্যুতি ও হত্যার হুমকির। সরকারি গাড়ি ব্যবহার করে মাদক সেবন ও বহন এবং নির্বাচিত মেয়রকে অপসারণের চক্রান্ত করায় তার বিরুদ্ধে স্থানীয় সরকার সচিব বরাবর অভিযোগও হয়েছে। এসব বিষয়ে সরাসরি কথা বলতে নাজিম উদ্দিনের সাতক্ষীরা পৌরসভা অফিসে যায় যমুনা নিউজ। কিন্তু তিনি মুখ খুলবেন না। কথা বলতে অস্বীকৃতির কারণ নাকি সরকারি কর্মচারী আচরণবিধি। সাতক্ষীরা পৌরসভার মেয়র তাজকিন আহমেদের অভিযোগ, দুর্নীতি করতে তাকে সরিয়ে প্যানেল মেয়র হিসেবে দুর্বল কাউকে বসানোর ষড়যন্ত্র করেছেন নাজিমউদ্দিন। তিনি জানালেন, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে নাজিমউদ্দিনের অপরাধ-দুর্নীতির তথ্য প্রমাণের একটি অনুলিপি দেয়া হয়েছে।