রোহিঙ্গা ক্যাম্পের নানা সংঘর্ষ নিয়ে সংবাদ প্রচার করেছে বেশ কিছু গণমাধ্যম। এসব সংবাদ প্রচার করায় বাংলাদেশি সাংবাদিকদের ওপর ক্ষুব্ধ রোহিঙ্গাদের উগ্রপন্থী সংগঠন আরকান রোহিঙ্গা সালভেশন আর্মি (আরসা)।
গত শুক্রবার উখিয়ার বালুখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আরেক রোহিঙ্গা সশস্ত্র সংগঠন আরএসওর সঙ্গে গোলাগুলিতে আরসা বাহিনীর পাঁচ সদস্য প্রাণ হারায়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বরাতে গণমাধ্যমে এই সংবাদ প্রচারের পর রোহিঙ্গাকেন্দ্রিক বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আরসার সদস্যরা বাংলাদেশের গণমাধ্যমকে সরাসরি দোষারোপ করে সাংবাদিকদের প্রাণনাশের হুমকিসহ বিভিন্ন নেতিবাচক বার্তা ছড়িয়ে দিতে থাকে।
উখিয়া থেকে প্রকাশিত একটি অনলাইন গণমাধ্যম উখিয়া নিউজের সম্পাদকের মুঠোফোন নম্বর দিয়ে বিভিন্ন সোশ্যাল সাইট গ্রুপে পাঠানো হয় অডিও বার্তা।
রোহিঙ্গা ভাষায় পাঠানো অজ্ঞাত পরিচয় এক ব্যক্তির সেরকমই একটি অডিও বার্তা স্থানীয় সাংবাদিকদের হাতে আসে। বার্তায় ওই ব্যক্তি উখিয়া নিউজে প্রকাশিত সংবাদকে উদ্দেশ্য করে আরসা নাকি আরএসও হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে তা সম্পাদকের কাছে জিজ্ঞেস করার জন্য আরসার সদস্যদের নির্দেশ দেয় সংগঠনটি।
ধারণা করা হচ্ছে, মালয়েশিয়ার একটি নাম্বার ব্যবহার করে বার্তা পাঠানো ব্যক্তি দেশটিতে অবস্থান করা আরসা কমান্ডার।
এ ঘটনায় ক্যাম্পের সংবাদ সংগ্রহে নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। শংকিত উখিয়া নিউজ ডটকমের সম্পাদক ওবায়দুল হক চৌধুরী আবু জানিয়েছেন, সংবাদ প্রকাশের জেরে গণমাধ্যম ব্যবহার করে বিভিন্ন নাম্বার থেকে তাকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি ও প্রাণনাশসহ বিভিন্ন হুমকি দিচ্ছে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা।
এপিবিএন বলছে, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কয়েকটি সন্ত্রাসী গ্রুপ সক্রিয়। ৮ এপিবিএনের সহকারী পুলিশ সুপার ফারুক আহমেদ জানান, যারাই গ্রুপগুলোর অপরাধ কর্মকাণ্ডে বাধা হয়ে দাঁড়ায়, তাদের দেওয়া হয় হুমকি।
ইতোমধ্যে এপিবিএনকেও তারা হুমকি দিয়েছিল জানিয়ে এই কর্মকর্তা বলেন, এটি নিয়ে ভয়ের কিছু নেই, ক্যাম্পে সন্ত্রাসীদের দমনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনী বদ্ধপরিকর।
২০১৭ সালে নতুন করে বাংলাদেশে আশ্রয় পায় সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা। বাংলাদেশে ৩৪টি আশ্রয় ক্যাম্পে প্রতিনিয়তই ঘটছে হত্যা, অপহরণসহ বিভিন্ন অপরাধ।
সাধারণ রোহিঙ্গারা দেশের ফেরার দাবিতে সরব থাকলেও সন্ত্রাসীদের কারণে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া, গণহত্যার বিচারসহ নানা ইস্যু সামনে এলেই বেড়ে যায় অপরাধের মাত্রা।