মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) দুপুরে রংপুরের গঙ্গাচড়ায় হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘরে হামলার বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করতে কিশোরগঞ্জ থানায় যান দৈনিক কালবেলার রংপুর প্রতিনিধি রেজওয়ান কবির রনি এবং দৈনিক প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক জহির রায়হান। এ সময় থানার ওসি তাদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন, গালিগালাজ করেন এবং তাদেরকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেন।
বুধবার (৩১ জুলাই) দুপুরে এক বিবৃতিতে রংপুর সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি সালেকুজ্জামান সালেক এবং সাধারণ সম্পাদক সরকার মাজহারুল মান্নান এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান।
তারা বলেন, ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বাড়িতে হামলা, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় সাংবাদিকেরা তথ্য জানার চেষ্টা করছিলেন। অথচ তাদের হয়রানি করা হয়েছে। একজন ওসি কীভাবে এমন দায়িত্বহীন আচরণ করতে পারেন, তা বোধগম্য নয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, ধর্ম অবমাননার জেরে হিন্দুদের বেশ কিছু বাড়িঘরে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাটের ঘটনায় যখন সরকার, স্থানীয় সাধারণ মানুষ এবং প্রশাসনের যৌথ উদ্যোগে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলমান। গণমাধ্যমগুলো যখন প্রকৃত ঘটনা প্রচার ও প্রকাশ করে সংশ্লিষ্টদের এই উদ্যোগে সহযোগিতা করছেন। তখনই এ সংক্রান্ত তথ্য চাইতে গিয়ে দুই সাংবাদিককে যেভাবে নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ থানার ওসি আশরাফুল ইসলাম হেনস্তা করেছেন, গ্রেপ্তার করার হুমকি দিয়েছেন, গালিগালাজ করেছেন, অশোভন আচরণ করেছেন। তা অগ্রহণযোগ্য, উদ্বেগজনক ও স্বাধীন সাংবাদিকতাকে চ্যালেঞ্জ করার নামান্তর। ওসি আশরাফুল ইসলামের আচরণ ও বক্তব্যে স্পষ্ট হয় যে, সরকার ও আইন শৃঙ্খলাবাহিনীকে বিতর্কিত করতে এবং আলদাদপুরের ঘটনাটিকে ভিন্নভাবে জিইয়ে রাখার মাধ্যমে দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করার পরিকল্পিত অংশ হিসেবে তিনি এই কাণ্ড ঘটিয়েছেন।
ওসি আশরাফুল ইসলামের এই কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে রংপুর সাংবাদিক ইউনিয়নের নেতারা বলেন, আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ওই ওসিকে তার সব ধরণের দায়-দায়িত্ব থেকে অপসারণ করতে হবে। পাশাপাশি তার বিরুদ্ধে ওঠা অদায়িত্বশীল-অশোভন আচরণ ও হুমকির বিষয়গুলো নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে যথাযথ আইনী ও বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। অন্যথায় রংপুর সাংবাদিক ইউনিয়ন-আরপিইজে ধারবাহিক কর্মসূচি ঘোষণা করতে বাধ্য হবে।
এ বিষয়ে কিশোরগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশরাফুল ইসলামের সঙ্গে একাধিক বার যোগাযোগ করেও কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।