সহকারী অধ্যাপক থেকে সহযোগী অধ্যাপক পদে ৬৯০ জনকে পদোন্নতিকে স্মরণাতীতকালের ‘সর্বনিম্ন’ সংখ্যক পদোন্নতি বলে দাবি করেছেন বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতি। সংগঠনটি বলছে, বর্তমানে সহকারী অধ্যাপক থেকে সহযোগী অধ্যাপক পদে ২৪তম থেকে ২৭তম বিসিএস পর্যন্ত পদোন্নতিযোগ্য কর্মকর্তা রয়েছেন প্রায় ৩ হাজার। অথচ দুই বছর পদোন্নতি না দিয়ে জট তৈরি করা হয়েছে। পদোন্নতিতে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির দাবির প্রতিফলন ঘটেনি।
বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর) বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির সমিতির সভাপতি প্রফেসর শাহেদুল খবির চৌধুরী ও মহাসচিব শওকত হোসেন মোল্যা স্বাক্ষতির এক যৌথ বিবৃতিতে এ বিষয়ে হতাশা প্রকাশ করা হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতি শিক্ষা ক্যাডারে বিদ্যমান নানা সমস্যা সমাধানের জন্য দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছে। গুরুত্ব বিবেচনায় যোগ্য সব কর্মকর্তার পদোন্নতির জন্য মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করা হয়েছে। বর্তমানে সহকারী অধ্যাপক থেকে সহযোগী অধ্যাপক পদে ২৪তম থেকে ২৭তম বিসিএস পর্যন্ত পদোন্নতি যোগ্য কর্মকর্তা রয়েছেন প্রায় ৩০০০। অথচ দুই বছর পদোন্নতি না দিয়ে জট তৈরি করা হয়েছে। প্যাটার্ন অনুযায়ী পদসৃজন না করে এ পদোন্নতি আগের সমস্যাকে আরও তীব্রতর করা হয়েছে। আমাদের বারবার আশ্বাস দিয়েও বিভিন্ন টালবাহানা ও সময়ক্ষেপণ করা হয়েছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, পদোন্নতিযোগ্য কর্মকর্তাদের পারিবারিক ও সামাজিক মর্যাদা সমুন্নত এবং কর্মস্পৃহা ধরে রাখার স্বার্থে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক সুপার নিউমারারি পদে পদোন্নতির সুযোগ তৈরির একটি নির্দেশনা রয়েছে। বিষয়টি সমিতি বারবার কর্তৃপক্ষকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছে। কিন্তু সেটিকেও কোনো বিবেচনায় নেওয়া হয়নি। আজ মাত্র ৬৯০ জন কর্মকর্তার পদোন্নতি আদেশ দেওয়া হয়েছে। এটা স্মরণাতীতকালের সহযোগী অধ্যাপক পদে সর্বনিম্ন সংখ্যক পদোন্নতি। পদোন্নতিতে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির দাবির প্রতিফলন ঘটেনি। এরূপ পদোন্নতি সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করবে। পদোন্নতি বঞ্চিত শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তাদের মতোই পুরো শিক্ষা ক্যাডার পরিবার হতাশ। যোগ্য সব কর্মকর্তার পদোন্নতি ব্যতীত নগণ্য সংখ্যক পদোন্নতি বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। আমরা এই প্রহসনের পদোন্নতির তীব্র প্রতিবাদ জানাই। পাশাপাশি দ্রুততম সময়ে সাপ্লিমেন্টারি ডিপিসি সভা করে সব স্তরে যোগ্য কর্মকর্তার পদোন্নতি দেওয়ার জোর দাবি করছি।
এর আগে শিক্ষা ক্যাডারে ৬৯০ জন সহকারী অধ্যাপক থেকে সহযোগী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি পেয়েছেন। প্রায় তিন বছর পর এ পদে পদোন্নতি পেলেন তারা।
পদোন্নতি পেয়ে সহযোগী অধ্যাপক হওয়া শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তাদের মধ্যে অর্থনীতির ৪০ জন, আরবি ও ইসলামী শিক্ষার ২২, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতির ৩৭, ইংরেজির ৫৯, ইতিহাসের ৩৫, উদ্ভিদবিদ্যার ৩৫, কৃষিবিজ্ঞানের ২, গার্হস্থ্য অর্থনীতির ২, গণিতের ৩২, দর্শনের ৩২, পদার্থবিদ্যর ৩৫, পরিসংখ্যানের ৪, প্রাণিবিদ্যার ৩৬, বাংলার ৫৯, ব্যবস্থাপনার ৪৭, ভুগোলের ১৪, মনোবিজ্ঞানের ৭, রসায়নের ৪০, রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ৬৬, সমাজকল্যাণের ১৩, সমাজবিজ্ঞানের ১৫, সংস্কৃতের ১, হিসাববিজ্ঞানের ৪৭, ইসলামী আদর্শ (টিটিসি) ১, ইংরেজি (টিটিসি) ১, ইতিহাসের (টিটিসি) ১, গাইডেন্স অ্যান্ড কাউন্সিলিংয়ের (টিটিসি) ১, গণিতের (টিটিসি) ১, প্রফেশনাল ইথিক্সের (টিটিসি) ১, বাংলার (টিটিসি) ১, ভূগোলের (টিটিসি) ১, রাষ্ট্রবিজ্ঞানের (টিটিসি) ১ ও বিজ্ঞানের (টিটিসি) ১ জন রয়েছেন।