ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসে শহীদ মিনারে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ নিয়ে উপজেলা বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ উভয়পক্ষের ২০ জন আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় পুলিশ উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ডি.এম দুলালসহ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে। স্থানীয় সূত্র ও পুলিশ জানায়, শুক্রবার মহান স্বাধীনতা দিবসে ভোর ৫টা ৫৫ মিনিটে শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে উপজেলা যুবদলের সভাপতি নাজমুল আলম খন্দকার মুন্না ও ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবদুল জব্বারের নেতৃত্বে উপজেলা বিএনপির একটি গ্রুপের নেতাকর্মীরা।
এরপর সকাল সাড়ে ৬টার দিকে দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে শহীদ মিনারে আসেন উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আনিছুল ইসলাম ঠাকুর ও সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট নূরুজ্জামান লস্কর তপু। তারা শহীদ মিনারের কাছে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আরেকটি গ্রুপ তাদের ওপর হামলা করে। সঙ্গে সঙ্গে সরাইল-অরুয়াইল সড়কের শহীদ মিনারের কাছের রাস্তা দুই গ্রুপের রণাঙ্গনে পরিণত হয়। এ সময় সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
সংঘর্ষের মধ্যেই দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আনিছুল ইসলাম ঠাকুর ও সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট নূরুজ্জামান লস্কর তপু। কিছুক্ষণ পর অন্নদা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের মোড় ও নিজসরাইল ব্রিজের কাছে আবারও এ দু’গ্রুপ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। আধ ঘণ্টাব্যাপী এ সংঘর্ষে পুলিশের ১০ কর্মকর্তা সদস্যসহ উভয়পক্ষের ২০ জন আহত হন।
সংঘর্ষের পরপরই পুলিশ উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য শহীদুল ইসলাম শিপন, দুলাল মাহমুদ আলী, যুবদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নূর আলম, বিএনপির সমর্থক আব্দুল আহাদ, মাসুম মিয়া ও নয়ন মিয়াকে গ্রেপ্তার করে। আহত ১০ পুলিশ সদস্য হলেন- সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ. এম. এম নাজমুল আহমেদ, সেকেন্ড অফিসার এসআই মো. জাকির হোসেন খন্দকার ও আবু ইউসুফ এবং এএসআই দীপক দেবনাথ, শামসুল আলম, রুবেল আখন্দ ও এমরান হোসেন, কনস্টেবল আব্দুর রউফ, আরাফাত হোসেন ও সুনীতি বিকাশ চাকমা।
এ ব্যাপারে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আনিছুল ইসলাম ঠাকুর ও সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট নূরুজ্জামান লস্কর তপু বলেন, তারা প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করেই শহীদ মিনারে গিয়েছিলেন। কিন্তু শহীদ মিনারের কাছে যাওয়ার পরপরই উপজেলা যুবদলের সভাপতি মুন্না ও ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবদুল জব্বারের নেতৃত্বে উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেনের সমর্থকরা আমাদের ওপর হামলা চালায়।
এ ব্যাপারে উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, হামলার বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না। সকালে ঘুম থেকে উঠে তিনি সংঘর্ষের খবর জানতে পারেন। কেন্দ্র থেকে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি বিলুপ্ত করা হয়েছে বলেও জানান তিনি। সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ.এম.এম নাজমুল আহমেদ সংঘর্ষ ও ছয়জনকে গ্রেপ্তারের কথা স্বীকার করে বলেন, সংঘর্ষে তিনিসহ পুলিশের ১০ সদস্য আহত হয়েছেন।
প্রসঙ্গত, গত ২৬ ফেব্রুয়ারি আনিছুল ইসলাম ঠাকুরকে আহ্বায়ক ও অ্যাডভোকেট নূরুজ্জামান লস্কর তপুকে সদস্য সচিব করে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করে জেলা বিএনপি। কিন্তু সাবেক সাধারণ সম্পাদকের গ্রুপ এই কমিটি মেনে নেয়নি।