সরকার পদত্যাগ না করলে দেশ সংঘাতের দিকে যাবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
এ ব্যাপারে তিনি বলেন, যতদিন আপনি (শেখ হাসিনার সরকার) থাকবেন দেশ আরও সংঘাতের দিকে যাবে… আরও খারাপের দিকে যাবে এবং সংঘাত আরও বাড়তে থাকবে। এখনো তো সংঘাত শুরু হয়নি।
বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। গত মঙ্গলবার (১৯ সেপ্টেম্বর) রাতে অনুষ্ঠিত দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে নেওয়া সিদ্ধান্ত জানাতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আওয়ামী লীগ যেভাবে এগোচ্ছে তাতে তো জনগণ রুখে দাঁড়াবে এটা পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে। জনগণই তাদের অধিকার আদায় করবে। জনগণ তো লড়াই ও যুদ্ধ করেই স্বাধীনতা এনেছে। ১৯৯০ সালে এরশাদের সময়ে জনগণ তো লড়াই ও সংগ্রাম করে গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনেছে। এখনো জনগণ লড়াই ও সংগ্রাম করছে।’
ক্ষমতাসীন সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনাদের শুভবুদ্ধির উদয় হোক। দেশকে রক্ষার জন্য, মানুষের কল্যাণের জন্য, গণতন্ত্রকে রক্ষার জন্য ও মানুষের অধিকারকে রক্ষা করার জন্য দয়া করে এই জায়গা থেকে সরে পদত্যাগ করুন। পদত্যাগের দাবি তো আমরা সেজন্যই জানিয়েছি। প্লিজ এই জায়গা থেকে সরে আসুন।’
তিনি আরও বলেন, ‘বরাবরই বলে আসছি আওয়ামী লীগের অধীনে কোনো নির্বাচনই সম্ভব নয়, এটা পরীক্ষিত। আমরা পরপর দুইটি নির্বাচন করেছি। তাদের অধীনে যে কখনো কোনো সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন হতে পারে না, জনগণ ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে পারে না… এ ব্যাপারে কারোরই সন্দেহ থাকার কথা নয়।
‘এবারও যখন নির্বাচন আসছে, প্রধানমন্ত্রী ভিনদেশে গিয়ে বিদেশিদের কাছে কথা দেন যে, খুব সুন্দর অবাধ নির্বাচন হবে, কোনো চিন্তার কারণ নেই। তখন ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন সেরা পরিদর্শক টিম পাঠিয়েছিল। এই টিম খুব এক্সনেটসিভলি ঘুরেছে এবং সব দলের স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে কথা বলেছে। কথা বলে যেটি তারা পরিষ্কার করে বলেছেন যে, অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের পরিবেশ নেই। এখানে পরিদর্শক টিম পাঠানোর পরিবেশ নেই। ইটস প্রুভেন। এ বিষয়টি বার বার করে বলেও তো লাভ হচ্ছে না। কারণ তারা (সরকার) তো কানে তুলা দিয়েছেন।’
‘সরকারি দলের নেতাদের বক্তব্য শুনলে দেখবেন তারা একটা বিষয়ে জোর দিচ্ছে যে, শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রী রাখতেই হবে। এটা দ্য কস্ট অব দ্য কান্ট্রি, এট দ্য কস্ট অব দ্য নেশন, কস্ট অব ডেমোক্রেসি। এই যে বিষয়টা… যে জাতি দেশের জন্য যুদ্ধ করেছে, যারা লড়াই করেছে ও ত্যাগ স্বীকার করেছে তারা কীভাবে মেনে নেবে?’
সাবেক এই প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা শত প্ররোচনার মুখেও একেবারে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করছি। এত গ্রেফতার, মামলা ও অত্যাচার নির্যাতনের পরও। আমরা শেষ পর্যন্ত যাব। এটার শেষ পরিণতি কী হবে তা নির্ভর করবে সরকারের ওপর… সরকারের আচরণ কী হচ্ছে তার ওপর।’
মানবাধিকার সংগঠন অধিকারের সম্পাদক আদিলুর রহমার খান ও পরিচালক এএমএম নাসির উদ্দিনের সাজা প্রদানের বিষয়ে জুডিশিয়াল ক্যাডার সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের বিবৃতির নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এমন বিবৃতি প্রদান নজিরবিহীন ঘটনা। এটা নিঃসন্দেহে নিরপেক্ষ আচরণের অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায়। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সভা মনে করে, বিচার ব্যবস্থার সব পর্যায়ের বিচারকদের বিতর্কিত রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকা বাঞ্ছনীয়।’