বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বর্তমান সরকার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনসহ যে চারটি আইন করেছে, সেগুলো গণমাধ্যমের স্বাধীনতার কফিনে পেরেক ঠুকে দেওয়ার মতো।
তিনি বলেন, মুক্ত গণমাধ্যমের অন্তরায় নিবর্তনমূলক সব আইন ও অধ্যাদেশ বাতিল করা হবে। প্রেস কাউন্সিলের ক্ষমতা ও পরিসর বাড়ানো হবে। গণমাধ্যমকে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হতে সহায়তা করা হবে। ওয়েজ বোর্ডের বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা এবং গণমাধ্যম ও গণমাধ্যমকর্মীদের সুরক্ষায় আইন প্রণয়ন করা হবে।
রোববার (২২ মে) জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘গণতন্ত্র হত্যায় গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণ আইন, প্রেক্ষিত বাংলাদেশ’ শীর্ষক এক মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন তিনি। বিএনপির উদ্যোগে এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়।
মতবিনিময় সভায় ‘মুক্ত গণমাধ্যম সূচকে বাংলাদেশের ক্রমাবনতির প্রেক্ষিত ও বিএনপির ভাবনা’ শীর্ষক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ও সাবেক সংসদ সদস্য জহির উদ্দিন স্বপন।
মির্জা ফখরুল বলেন, সারা বিশ্বেই মুক্ত গণমাধ্যমের বিষয়ে প্রশ্ন উঠেছে, বিশেষ করে বাংলাদেশে। যারা স্বাধীনভাবে লিখতে চান, মত প্রকাশ করতে চান, তারা পারছেন না। এ সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে গণতন্ত্রের মৌলিক বিষয়গুলো তারা নিয়ন্ত্রণ করছে। এটা করতে গিয়ে তারা ধরে নিয়েছে, সবার আগে গণমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
প্রায় প্রতিটি গণমাধ্যমকে সরকারের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো নিয়ন্ত্রণ করছে বলে দাবি করে বিএনপির এ নেতা বলেন, তাদের নজরদারি এমন পর্যায়ে গেছে, কোন সাংবাদিক কখন কার সঙ্গে কথা বলছেন, দেখা করছেন, সেটাও তারা নজরদারি করছে এবং সুবিধামতো কথোপকথন প্রকাশ করে দিচ্ছে। এখন যেসব আইন তৈরি করা হচ্ছে, সেসব গণমাধ্যমকে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করার জন্য।
তিনি বলেন, আমরা যখন মুক্তিযুদ্ধ করি, তখন আমাদের স্বপ্ন ছিল একটি স্বাধীন–গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ নির্মাণ করা। কিন্তু যখন দেখি সাংবাদিকেরা লিখতে পারছেন না, সম্পাদকদের বিভিন্নভাবে হুমকি দেওয়া হচ্ছে, তখন খুব কষ্ট লাগে, দুঃখ লাগে।
মির্জা ফখরুল বলেন, সাংবাদিকদের যে সাহসিকতা, তা কেড়ে নেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। বর্তমান পরিস্থিতির বিরুদ্ধে সবারই সোচ্চার হওয়া উচিত, অন্যথায় আমরা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে দায়ী হয়ে থাকব।
মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদসহ সিনিয়র সাংবাদিকরা ।