আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কথা শুনে বিএনপি অসুস্থ হয়ে গেছে। হতাশা থেকে অসুস্থতা শুরু হয়েছে বিএনপি নেতাদের।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মঙ্গলবার (১৭ জানুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে আলোচনা সভাটি অনুষ্ঠিত হয়।
তিনি বলেন, বিএনপির আসল নেতারা হাসপাতালে আর পাতিনেতারা বলছে সুনামি নামিয়ে সরকার হটাবে। অথচ আন্দোলনের সাগরে উত্তাল ঢেউ তো দূরে, নদীর ঢেউও তুলতে পারল না।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ফখরুল সাহেব অসুস্থ, মির্জা আব্বাস অসুস্থ। মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কথাবার্তা শুনে তারা বিষবর্ণ। আসলে কি অসুস্থ? নাকি রাজনৈতিক অসুস্থ? তারপর শুনি মান্না সাহেব হাসপাতালে, আ স ম রব ভাইও হাসপাতালে। হতাশা থেকে অসুস্থ হয়ে কি হাসপাতালে গেছেন?
বিএনপির জন্য আরও খারাপ খবর আছে জানিয়ে সেতুমন্ত্রী বলেন, ৫৪ দল, ৫৪ মত, ৫৪ পথ। ফখরুল নেই, মির্জা আব্বাস হাসপাতালে। এখনো পাতি নেতারা কথা বলছে। এক পাতি নেতা বলেছে, সরকার হটাবে আন্দোলনের সুনামি দিয়ে। হাতি ঘোড়া গেল তল, ভেড়া বলে কত জল। আন্দোলন করলেন ১৫ বছর ধরে, আন্দোলনে নদীর ঢেউ পেলাম না। সাগরের উত্তাল তরঙ্গ তো দেখিনি। আন্দোলনের ঘরে এখন আবার হতাশা নেমে এসেছে।
বিএনপিকে নির্বাচনে আসার আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, সবকিছু ছেড়ে দিয়ে সরকারের পরিবর্তন যদি চান নির্বাচনে আসুন। আমরা যারা সরকারে আছি, এই সরকার হবে রুটিন সরকার। এই সরকার নির্বাচনের কার্যক্রমে হস্তক্ষেপ করবে না। হোম মিনিস্টারের যে কাজ সেই কাজ তখন নির্বাচন কমিশন করবে। পুলিশের লোকজনকে ট্রান্সফার, প্রমোশন দেওয়া, এসব কাজ তখন হোম মিনিস্টার করবে না, করবে নির্বাচন কমিশন।
তিনি আরও বলেন, হতাশায় বিএনপির বাজার ভেঙে যাচ্ছে। বিএনপির জোটের বাজার ভেঙে যাচ্ছে। এ হতাশার জোট দিয়ে শেখ হাসিনার সরকার হটানো দূরাশার বাণী।
সেতুমন্ত্রী বলেন, সরকারের পরিবর্তন চাইলে নির্বাচনে আসুন। সরকার নির্বাচন নিয়ে মাথা ঘামাবে না, নির্বাচন করবে নির্বাচন কমিশনার।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা কোথাও নেই, অহেতুক তত্ত্বাবধায়কের কথা ভুলে যান, আইন দ্বারা গঠিত নির্বাচন কমিশনের পদত্যাগ প্রশ্নই আসে না। অস্বাভাবিক আবদারে সাপোর্ট না দেওয়ার কারণেই নির্বাচন কমিশন চায় না বিএনপি।
তিনি বলেন, বিএনপির আন্দোলনের টাকা আসে কোথা থেকে সেটা আমরা জানি। যারা শেখ হাসিনা সরকারকে হটানোর জন্য টাকা দিচ্ছে তাদের খবর আছে।
এসময় দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে কাদের বলেন, মুখে বলি বঙ্গবন্ধুর সৈনিক, নেতা হয়ে মঞ্চে উঠলে আদর্শের কথা মনে থাকে না। নেতাদের ভিড়ে আসল কর্মী চেনা দায়। স্মার্ট বাংলাদেশের জন্য স্মার্ট কর্মীবাহিনী দরকার। বাংলাদেশের জন্য সুশৃঙ্খল আওয়ামী লীগ চাই।
তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগকে শৃঙ্খলাবদ্ধ করতে হবে। যারা চাঁদাবাজি ও মাস্তানি করবে তাদের সাথে কোনো আপস নয়, তাদের বিরুদ্ধে আপসহীন লড়াই চলবে। মুখে আওয়ামী লীগের আদর্শ লালন করবেন আর অন্তরে সে আদর্শ লালন করবেন না তেমন নেতার দরকার নেই।
নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে কাদের বলেন, আওয়ামী লীগের শত্রু আওয়ামী লীগ হলে আওয়ামী লীগকে বাঁচাবে কে? ঐক্যবদ্ধ আওয়ামী লীগকে ধ্বংস করার শক্তি বাংলাদেশের কোনো রাজনৈতিক দলের নেই।
ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা বেনজীর আহমদের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান ও আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটির সদস্য আব্দুল বাতেন প্রমুখ।
আলোচনা সভাটি সঞ্চালনা করেন ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পনিরুজ্জামান তরুণ।