দুর্যোগ সহনীয় ঘর নিজের বোনের নামে বরাদ্দ এবং তা সরকারি খাস জমিতে নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলার সৈয়দকাঠী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নানের বিরুদ্ধে। চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নানের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ তদন্ত করতে এবং বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে স্থানীয় সরকার বিভাগ।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ দেওয়া হলে বিষয়টি তদন্তের জন্য উপজেলা সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) দায়িত্ব দেওয়া হয়। বানারীপাড়া উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) নিশাত শারমিন তদন্ত করে গত ২৮ মার্চ একটি প্রতিবেদন দাখিল করেছেন।
তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয় থেকে সৈয়দকাঠী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের বোনের নামে বরাদ্দকৃত ঘরটি সরকারি খাস জমিতে অবস্থিত বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় থেকে যেসব ব্যক্তির নামে দুর্যোগসহনীয় ঘর বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে তা ব্যক্তিমালিকানাধীন জমির উপর নির্মাণের কথা। আবদুল মান্নান মৃধা অবৈধভাবে সরকারি খাস জমিতে বোনের নামে ঘর বরাদ্দ নেওয়ার বিষয়টি প্রাথমিকভাবে প্রতীয়মান হয়েছে।
তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর গত ৩১ মার্চ বানারীপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রিপন কুমার সাহা চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ জানিয়ে স্থানীয় সরকার বরিশাল বিভাগকে চিঠি লেখেন। চিঠিতে বলা হয়, সৈয়দকাঠী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের বোনের নামে বরাদ্দকৃত ঘরটি সরকারি খাস জমিতে নির্মাণ করা হয়েছে, যা বিধিবিধান বহির্ভূত বলে নিম্নস্বাক্ষরকারীর নিটক প্রতীয়মান হয়।
এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা স্থানীয় সরকার বরিশাল বিভাগকে অনুরোধ করেন। চিঠি পাওয়ার পর স্থানীয় সরকার বিভাগ বরিশালের সহকারী পরিচালক শরীফ মোহাম্মদ হেলাল উদ্দীন গত ১২ এপ্রিল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে এ ব্যাপারে চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নানের বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নিয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগ বরিশাল কার্যালয়কে অবহিত করার নির্দেশ দেন।
কিন্তু এখন পর্যন্ত সৈয়দকাঠী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন ইউনিয়নের বাসিন্দারা। এ ব্যাপারে বানারীপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রিপন কুমার সাহা বলেন, সৈয়দকাঠী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নানের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ আমি তদন্ত করিনি। তদন্ত করেছেন উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি। তার দেওয়া তদন্ত প্রতিবেদনে একমত হয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য স্থানীয় সরকার বিভাগ বরিশাল কার্যালয়কে অনুরোধ করা হয়েছিল। কিন্তু পরে স্থানীয় সরকারি বিভাগ আমাকে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। এখন তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।