সরকারি চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫, অবসরের সময় বৃদ্ধি ও আবেদনের ক্ষেত্রে ফি সর্বোচ্চ ২০০ টাকার দাবিতে মানববন্ধন করেছে শিক্ষার্থীরা। একইসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদে বঙ্গবন্ধুর নামে ল কমপ্লেক্স স্থাপনের দাবিও জানানো হয়।
শুক্রবার (২০ জানুয়ারি) বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এ মানববন্ধনের আয়োজন করে চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ প্রত্যাশী শিক্ষার্থীদের সমন্বয় পরিষদ।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষিত চাকরি প্রার্থীরা বিগত প্রায় ১০ বছর যাবৎ সরকারি চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩০ থেকে বৃদ্ধি করে ৩৫ বছরে উন্নীত করার দাবি জানিয়ে আসছে। কোভিড-১৯ মহামারীতে সকল বয়সী শিক্ষার্থীদের শিক্ষা জীবন থেকে ২ বছরের অধিক সময় নষ্ট হয়েছে। প্রায় সকল প্রকার চাকুরির নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ও পরীক্ষা বন্ধ ছিল। এছাড়াও চরম বাস্তবতা হলো বাংলাদেশের প্রত্যেক বিশ্ববিদ্যালয়েই কম-বেশি সেশনজট রয়েছে, ফলে শিক্ষার্থীদের শিক্ষা জীবন থেকে মূল্যবান সময়ও নষ্ট হয়। যে প্রাতিষ্ঠানিক সার্টিফিকেট অর্জন করতে গড়ে ২৫-২৬ বছর সময় লাগে, সেই সার্টিফিকেটের মেয়াদ কখনো ৪/৫ বছর হতে পারে না।
বক্তারা আরও বলেন, বিশ্বের ১৬২টি দেশে চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ বছর, কোনো কোনো দেশে তা উন্মুক্ত। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে প্রতিবেশী ভারতের বিভিন্ন রাজ্যভেদে চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫-৪৫ বছর, মালদ্বীপে ৪৫ বছর, শ্রীলঙ্কায় ৩৫ বছর, নেপালে ৩৫ বছর, এমনকি আফগানিস্তানেও ৩৫ বছর। দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে শুধুমাত্র বাংলাদেশ এবং পাকিস্তানেই চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩০ বছর।
আন্দোলনকারীদের দাবি
১. বর্তমান সরকার ২০১৮ সালে তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা বৃদ্ধির কথা উল্লেখ করলেও তা এখনো বাস্তবায়ন হয়নি অথচ আরেকটি জাতীয় নির্বাচন আসন্ন। তাই লাখ লাখ চাকরি প্রার্থীদের প্রাণের দাবি অনতিবিলম্বে চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩০ বছর থেকে বৃদ্ধি করে ৩৫ করা হোক।
২. চাকরিতে আবেদনের ফি সর্বোচ্চ ২০০ টাকা নির্ধারণ করতে হবে (১ম শ্রেণীতে ২০০ টাকা, দ্বিতীয় শ্রেণীতে ১৫০ টাকা, ৩য় শ্রেণীতে ১০০ টাকা, ৪র্থ শ্রেণীতে ৫০ টাকা)। প্রয়োজনে সরকারকে ভর্তুকির উদ্যোগ নিতে হবে। একই তারিখে একই সময়ে একাধিক নিয়োগ পরীক্ষা নেওয়া যাবে না।
৩. বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী, আইন অনুষদের ১০০ বছর পূর্তি উপলক্ষে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর নামে বঙ্গবন্ধু ল’ কমপ্লেক্স, বঙ্গবন্ধু চেয়ার এবং একটি ম্যুরাল নির্মাণ করতে হবে। একইসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অনুমোদন সাপেক্ষে স্থান নির্ধারণের জন্য আইন বিভাগের একাডেমিক কমিটির সভায় গৃহীত সিদ্ধান্ত অর্থাৎ ‘বঙ্গবন্ধু ল কমপেক্স’ এর কাজ দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে।