সরকারি-বেসরকারি বিদ্যালয়গুলোতে ভর্তির আবেদন শেষ হয়েছে। সরকারি বিদ্যালয়ে আসন প্রতি প্রায় ছয়জন করে আবেদন জমা দিয়েছে। আর বেসরকারি বিদ্যালয়ে সাড়ে তিন আসনে একজন শিক্ষার্থী আবেদন করেছে। তার মধ্যেও আবেদনকারী প্রায় ৭০ হাজার আবেদনকারী এখনো আবেদন ফি জমা দেয়নি। এদিকে বেসরকারি বিদ্যালয়ে আবেদনকারীর সংখ্যা আরও কমতে পারে। সরকারি বিদ্যালয়ে এক ধরনের ভর্তি যুদ্ধ তৈরি হলেও বেসরকারিতে প্রায় ৭২ শতাংশ আসন খালি থাকছে বলে জানা গেছে।
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) সূত্রে জানা গেছে, এবার সারাদেশে ৫৫০টি সরকারি বিদ্যালয়ে প্রথম থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত ১ লাখ ৭ হাজার ৮৯টি শূন্য আসনে শিক্ষার্থী ভর্তি নেওয়া হবে। আর দুই হাজার ৮৫২টি বেসরকারি বিদ্যালয়ে ভর্তি নেওয়া হবে ৯ লাখ ২৫ হাজার ৬৬টি আসনে।
২০২৩ শিক্ষাবর্ষের জন্য সরকারি-বেসরকারি বিদ্যালয়ে প্রথম থেকে নবম শ্রেণিতে ভর্তির অনলাইন আবেদন গত ১৬ নভেম্বর বেলা ১১টা থেকে শুরু হয়ে মঙ্গলবার (৬ ডিসেম্বর) বিকেল ৫টা পর্যন্ত জমা শেষ হয়। এর মধ্যে যারা আবেদন করেছে তারা আজ রাত ১১টা ৫৯ মিনিট পর্যন্ত আবেদন ফি জমা দিতে পারবে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, সরকারি বিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য সারাদেশে ৫৫০টি বিদ্যালয়ে ১ লখ ৭ হাজার ৮৯টি শূন্য আসনে মোট ৬ লাখ ২৬ হাজার ৫৯টি আবেদন জমা পড়েছে। সে হিসেবে প্রতি আসনে আবেদনকারীর সংখ্যা ৫ দশমিক ৮৪ জন। লটারির মাধ্যমে সব ক্লাসে শিক্ষার্থী নির্বাচন করা হবে।
অন্যদিকে দেশের ২ হাজার ৮৫২টি বেসরকারি বিদ্যালয়ে ৯ লাখ ২৫ হাজার ৬৬টি আসনে মাত্র ২ লাখ ৬০ হাজার ৯৩৩টি আবেদন জমা পড়েছে। সেই হিসেবে প্রতি সাড়ে তিনটি আসনে একজন মাত্র আবেদনকারী। এ স্তরে ৬ লাখ ৬৪ হাজার ১৩৩টি আসন খালি থাকছে। শিক্ষার্থী শুন্য থাকছে মোট আসনের প্রায় ৭২ শতাংশ। আগামী ১২ ডিসেম্বর সরকারি বিদ্যালয় ভর্তির লটারি অনুষ্ঠিত হবে। বেসরকারি স্কুলের লটারি ১৩ ডিসেম্বর নির্ধারণ করা হয়েছে।
জানতে চাইলে মঙ্গলবার মাউশির উপ-পরিচালক (বিদ্যালয়) মোহাম্মদ আজিজ উদ্দিন বলেন, সরকারি বিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য আসনের কয়েকগুণ আবেদনের বিপরীতে বেসরকারিতে তুলনামূলক অনেক কম হয়েছে। সে কারণে বেসরকারির অনেক আসন খালি থাকবে। সরকারিতে এক ধরনের ভর্তিযুদ্ধ তৈরি হবে।
তিনি বলেন, বেসরকারির অধিকাংশ আবেদন ঢাকা মহানগরসহ অন্যান্য জেলা শহরের বড় বড় বিদ্যালয়ে এসেছে। অনেক বিদ্যালয়ে একজনও আবেদন করেনি। অনেকে আবার বর্তমান প্রতিষ্ঠান ছাড়তে চাচ্ছে না বলে আবেদন করেনি। করোনার কারণে অনেকে পড়ালেখায় পিছিয়ে গেছে বলেও কেউ কেউ পুরনো স্কুলে থাকতে চাচ্ছে বলে অন্য বিদ্যালয়ে যাচ্ছে না। এসব কারণে এবার বেসরকারি স্কুলে আবেদন সংখ্যা কমে যেতে পারে বলে মনে করেন এই কর্মকর্তা।
নতুন নীতিমালা অনুযায়ী, এবারও প্রথম শ্রেণিতে ভর্তির জন্য একজন শিক্ষার্থীর বয়স ন্যূনতম ছয় বছরের বেশি হতে হবে। প্রথম শ্রেণিতে ছয় বছরের বেশি ধরে অন্যান্য শ্রেণিতে ভর্তির বয়স নির্ধারিত হবে। যেমন ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তির জন্য একজন শিক্ষার্থীর বয়স প্রথম শ্রেণির বয়স হিসেবে আনতে হবে। তবে শিক্ষার্থীর বয়সের ঊর্ধ্বসীমা সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নির্ধারণ করবে বলেও নীতিমালায় জানানো হয়েছে। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষার্থীর ভর্তির সর্বোচ্চ বয়স নির্ধারণ করবে।
জানা গেছে, আগামী ২৮ ডিসেম্বরের মধ্যে ভর্তির সব কাজ শেষ করা হবে। মহানগর ও জেলা সদর উপজেলার বেসরকারি বিদ্যালয়গুলোর লটারির আওতায় আসবে। তবে যেসব বেসরকারি স্কুল কেন্দ্রীয়ভাবে অনুষ্ঠিত লটারিতে অংশ নেবে না তাদেরও শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদিত কমিটির মাধ্যমে লটারি করতে হবে।