বিরোধী দলের সমাবেশে সরকার বাধা দিলে পরিস্থিতি ভয়াবহ হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম (চরমোনাই পীর)। তিনি বলেছেন, সরকার বিরোধী দল দমনে মরিয়া হয়ে ওঠেছে। প্রশাসন ব্যবহার করে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের হয়রানি করা হচ্ছে। হামলা, মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে। ২৮ তারিখ বিএনপির সমাবেশ এবং ৩ নভেম্বর ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসমাবেশ ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। সরকার ভয়ে এসব সমাবেশে ঘিরে নানা অপকৌশল গ্রহণ করেছে। স্বৈরাচার আওয়ামী সরকারের বিদায় ঘণ্টা বেজে ওঠেছে। ৩ নভেম্বরের পূর্বে সরকার সসম্মানে পদত্যাগ না করলে ৩ নভেম্বরের পরবর্তী উদ্ভূত পরিস্থিতির সকল দায়ভার সরকারকেই বহন করতে হবে।
শুক্রবার (২৭ অক্টোবর) সকালে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আয়োজিত কাকরাইলস্থ ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স মিলনায়তনে ‘চলমান রাজনৈতিক সংকট উত্তরণে রাসুল সা.-এর সিরাত’ শীর্ষক জাতীয় সিরাত সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মুফতি রেজাউল করীম বলেন, ৩ নভেম্বর ঢাকায় জনতার মহাস্রোত নামবে। জনতার মরাস্রোতে সরকার ভেসে যাবে ইনশাআল্লাহ। তিনি আরও বলেন, সর্বত্র অশান্তির আগুন জ্বলছে। মানুষ গড়ে থাকলে খুন হয়, আর রাস্তায় বের হলে হয় গুম। নিজেদের অধিকার প্রতিষ্ঠার কথা বলা যাচ্ছে না। সরকার বাকশাল কায়েম করতে চায়। এ জন্যেই স্বচ্ছ ভোট দিতে চায় না। তামাশার ভোট আয়োজন করলে পরিস্থিতি হবে ভয়াবহ। জাতীয় সরকারের অধীন ছাড়া কোনো নির্বাচন সহ্য করা হবে না।
চরমোনাই পীর বলেন, দেশ আজ নিশ্চিত ধ্বংসের দিকে ধাবিত হচ্ছে। সরকার প্রশাসনকে ব্যবহার করে জলকামান, টিয়ারসেল, বুলেট মেরে জনতার যৌক্তিক আন্দোলন দাবিয়ে রাখতে চায়। সরকার দেশের জনগণের ওপর নির্যাতনের স্টিম রোলার চালাচ্ছে।
ইসলামী আন্দোলনের আমির বলেন, বিএনপিসহ বিরোধী দলের আন্দোলনে বাধা প্রদান করলে রাজপথ আরও প্রকম্পিত হবে। জনতার উত্তাল তরঙ্গ শুরু হবে। সভাসমাবেশে বাধা দিলে আন্দোলন আরও কঠোর হবে।
সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যক্ষ মাওলানা সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল-মাদানী, মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ।
এতে আলোচনা করেন দৈনিক নয়া দিগন্তের সিনিয়র সহসম্পাদক মাওলানা লিয়াকত আলী, সংঠনের যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, ফরিদাবাদ মাদরাসার মুহাদ্দিস মুফতি ইমামুদ্দিন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উর্দু বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মুফতি রশীদ আহমাদ, বিশিষ্ট লেখক মুহাদ্দিস ও গবেষক মাওলানা মুহাম্মাদ যাইনুল আবিদীন, মাদরাসাতুস শরফ আল-ইসলামিয়া সোনাগাঁর মহাপরিচালক আল্লামা ওবায়দুল কাদের নদভী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ড. হুসাইনুল বান্না, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক আরিফুল ইসলাম অপু, মাসিক মদীনা সম্পাদক আহমদ বদরুদ্দীন খান, খতিব ও মুফাসসিরে কুরআন মুফতি শামছুদ্দোহা আশরাফী। সম্মেলনে লিখিত প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন কলামিস্ট ও সিরাত গবেষক করেন কবি মুসা আল হাফিজ।
সংগঠনের সহকারী মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর নগদ দক্ষিণ সভাপতি মাওলানা মুহাম্মদ ইমতিয়াজ আলমের সভাপতিত্বে এতে আরও বক্তব্য দেন আলহাজ আালতাফ হোসেন, ডা. শহীদুল ইসলাম, কেএম শরীয়াতুল্লাহ, মুহাম্মদ মাকসুদুর রহমান, ফজলুল হক মৃধা, আলহাজ নজরুল ইসলাম খোকন, এম এম শোয়াইব, জিয়াউল আশরাফ, নাযীর আহমাদ শিবলী মুফতি আবদুল আহাদ প্রমুখ।